তরুণদের নিয়ে যখন নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রচেষ্টা চলছে তখন থেকেই প্রশ্ন উঠেছে সমন্বয়ক উপদেষ্টারা কি ইন্টেরিম সরকারের দায়িত্বে থাকবেন নাকি পদত্যাগ করবেন। বিএনপির পক্ষ থেকে বার বার বলা হয়েছে যে ক্ষমতায় থেকে দল গঠন সাধারণ জনতা ভালো চোখে দেখবে না। তাছাড়া সমন্বয়কদের রাজনৈতিক দলের সাথে বাক বিতন্ডায় তাদের ইমেজ সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রমতে শোনা যাচ্ছিল উপদেষ্টা নাহিদ ফেব্রুয়ারি মাসে পদত্যাগ করতে পারেন। বাকি দুইজন নির্বাচনের পূর্বে পদত্যাগ করবেন। কিন্তু এতেও সমালোচনা এড়ানো যাচ্ছিল না। কারণ অনেকে সন্দেহ পোষণ করেছেন বাকি সমন্বয়করা নির্বাচনের পূর্বে প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার কাজ সম্পন্ন করে ফেলবেন ততদিনে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ডিসি হিসাবে এনজিওর একজন কর্মকর্তা নিয়োগ নিয়ে সবার মধ্যে এই ধারণা আরো বদ্ধমূল হয়।
উপদেষ্টা নাহিদের বক্তব্য অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি ও মার্চের মধ্যে তারা পদত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দিবেন। নাগরিক কমিটির প্রধান নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী একই কথা বলেছেন। নাহিদ সহ বাকিরা অনুধাবন করতে পেরেছেন তাদের মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে হবে তাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মাঠের রাজনীতি এবং অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া এক বিষয় নয় বলে তাদের অভিমত।
নাহিদের আজকের বক্তব্য গত মাসের বক্তব্যের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। নাহিদ জানুয়ারি মাসে বলেছিলেন উপদেষ্টা হিসাবে তারা সরকারে থাকলেও নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে সমস্যা হবে না। ফেব্রুয়ারিতে হটাৎ বক্তব্য পাল্টে গেলো কেন ? নাহিদ দের সাথে কি রাজনৈতিক দলগুলোর যোগাযোগ হয়েছে ? আসিফ নজরুলের সাম্প্রতিক সময়ের বক্তব্যে তার কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। কোনো সমঝোতা হয়েছে নাকি দুইপক্ষের মধ্যে ? আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে এখন প্রায় সকল দল একমত। ইহাও দুইপক্ষের সংযোগের ফলাফল বলে আমরা মনে করতে পারি।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস কি দুবাই থেকে কোন বার্তা নিয়ে আসছেন নাকি ? দেশের ভিতরেও প্রধান উপদেষ্টার সাথে গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি কূটনীতিক দের বৈঠক হয়েছে। সেনাবাহিনীর সাথেও তারা বৈঠক করেছিলেন। রাজনৈতিক দলের সাথে বিতর্কিত দেশের হাইকমিশনারের বৈঠক সহ নানা ধরণের ঘটনা ঘটেছে। নাহিদ সহ সরকারে থাকা সকল উপদেষ্টা কি সেজন্য দ্রুত পদত্যাগের ডিসিশন নিয়েছেন ? অনেক কিছুই হতে পারে আবার শুধু দলগঠনের জন্যও তারা পদত্যাগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে তরুণদের প্রতিনিধি হিসাবে নতুন কেউ যুক্ত হবেন কিনা সরকারে তা নিয়েও গুঞ্জন আছে। সকল বিষয় ভালো ভাবে অনুধাবন করা যাবে যখন সমন্বয়ক উপদেষ্টারা পদত্যাগ করে সাধারণ জনতার কাতারে নেমে আসবেন। এতে তাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হইবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৩৬