
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্যের তুলনায় মেঠো বক্তৃতা বেশি শোনা যায়। যারা রাজনীতি করেন তাদের প্রজ্ঞার একটি বিষয় জড়িত আছে। কিন্তু মাঝেমধ্যে উনারা এমন সব বক্তব্য দেন যা শুনে পাবলিক হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খায়। এমন কিছু বক্তব্যের সংকলন নিয়ে আজকের ব্লগ !
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর : ভদ্র ও সজ্জন ব্যক্তি হিসাবে সুপরিচিত। কিন্তু বিগত স্বৈরাচারী সরকার উনাকে ময়লার গাড়িতে আগুন লাগানোর মতো মামলায় ফাঁসিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর মির্জা ফখরুলের বক্তব্য প্রায় টিভিতে দেখা যায়। তিনি প্রায়শই দাবী করেন বর্তমানে যা কিছু সমস্যা হচ্ছে উহা সমাধানের উপায় নির্বাচন। ধরে নেয়া যাক সারা ঢাকা জুড়ে আন্দোলন হচ্ছে । হটাৎ টিভিতে ভেসে আসবে মির্জা ফখরুলের সেই অমীয় বাণী, "এই আন্দোলন থামানোর উপায় হয়ে দ্রুত একটি নির্বাচন "।
মাওলানা শফিকুর রহমান : জামায়াতের আমীর শফিকুর রহমান জুলাই আন্দোলনের পর নানান সময়ে নানা বক্তব্য দিয়েছেন। জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্ব আগের মতো অতটা চৌকস নয়৷ আমীরে জামায়াতে প্রায়শই বেফাঁস মন্তব্য করে ট্রলের শিকার হন। যেমন : তিনি একবার বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ কে বারবার ফ্যাসিস্ট দল বলা উনার পছন্দ নয়। চ্যানেল আইয়ের এক অনুষ্ঠানে তিনি নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান বলায় তীব্র সমালোচিত হন। তবে যে বক্তব্যের কারণে ইয়ং জেনারেশনের কাছে তিনি বেশি পরিচিত: " সমালোচনা করবেন চুমু দিবো; কিন্তু চোখ রাঙাবেন না "। আরেক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, " দেশপ্রেমিকদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তারা মিষ্টি বিতরণ করেছে "৷
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার : বাংলাদেশে যখন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র সচিব এপ্রিল মাসে সফর করছেন সে সময় জামায়াতের এক নেতার বক্তব্য রীতিমতো নেট দুনিয়া কাপিয়ে দিয়েছিলো। জামায়াতের সেই নেতার বক্তব্য ছিলো, " একাত্তরের জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত"।
চরমোনাই পীর: ইসলামিক দলগুলো বরাবর ক্ষমতাসীনদের সাথে থাকতে চায়। এজন্য তারা এবার ড. ইউনূসের সরকারের যাবতীয় কার্যক্রম মেনে নিচ্ছিল। বিপত্তি বাধায় নারী অধিকার সংস্কার কমিশন। এর প্রেক্ষিতে চরমোনাই পীর বলেছেন, " আমি আগেই জানতাম ড.ইউনূস এমন কিছু(নারী সংস্কার) করবেন। ইউনূস সাহেবের ক্যাবিনেটে আছে বেশ্যা, লুচ্চা ও বউ ব্যবসায়ী। তারাই ড. ইউনূস কে দিয়ে এসব ভুল কাজ করাচ্ছে। "
বিএনপির নেতা শামসুজ্জামান দুদু: ডাকসুর সাবেক নেতা শামসুজ্জামান দুদু নেট দুনিয়ায় ভাইরাল উনার সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বক্তব্য নিয়ে। ড.ইউনূসের পদত্যাগ ও নাহিদের দেখা করা নিয়ে দুদু সাহেব বলেছেন," নাহিদ কি ভাবে ড.ইউনূসের বেড রুমে যায় ? এনসিপি ইউনূস সাহেবের দল "। দুদু মিয়া এনসিপির নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর কটাক্ষের জবাবে বলেছেন," বিএনপির নেতারা যদি একত্রে প্রস্রাব করেন তাহলে এই প্রস্রাবের জোয়ারে ভেসে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়বা।"
ডার্বি নাসির : এনসিপির এক নয়া চিড়িয়া ! সে যখনই কথা বলে ভুল বলে। একবার সে মিডিয়াতে বলে " বিএনপি হচ্ছে দিল্লীর এক্সটেনশন। বিএনপি ভারতের পারপাস সার্ভ করে। " অন্য একটি টকশোতে নাসির বলে, " জামায়াতে ইসলামী দিল্লীর এক্সটেনশন। তারা ভারতের দালাল "।
বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায় : গয়েশ্বর বাবুর হটাৎ জ্ঞান ফিরে এসেছে। তিনি দীর্ঘদিন কোমায় ছিলেন মনে হয়। কোমা থেকে জাগ্রত হয়ে একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য করেই যাচ্ছেন । গতকাল তিনি বিএনপির এক সমাবেশে বলেছেন, " বিএনপি মাঠে নামলে ড. ইউনূস ২৪ ঘন্টা টিকতে পারবে বা। তিনি আরো বলেন, " ড. ইউনূস সকল মৌলবাদি গোষ্ঠীকে একাট্টা করেছেন। ড.ইউনূস আপনার মনে রাখা উচিত, যারা লাদেন কে বানিয়েছে তারাই আবার লাদেন কে হত্যা করেছে "।
আমাদের দেশের রাজনীতিতে মেঠো বক্তৃতা খুবই জনপ্রিয় ও বহুল চর্চিত ব্যাপার। কিন্তু অনেক সময় ভাষাগত সীমা লঙ্ঘনের বিষয়টি খেয়ালে থাকে না। তাই নেতাদের মুখ থেকে হাস্যকর সব শব্দ বের হতে থাকলে উহার ওজন কমে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



