somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নয়া জমানার ছবি 'ডুবসাঁতার'!

১৫ ই নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ডিজিটাল ফরম্যাট বা আরো নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি দুরন্ত মেধাবী প্রজন্ম এদেশের প্রচলিত সিনেমার অচালায়তন ভেঙ্গে নতুন সূর্যালোকের বার্তা বয়ে আনবে আমাদের দেশে, এই স্বপ্ন সত্যি হতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
এদেরই একজন নূরুল আলম আতিকের প্রাণপন পরিশ্রমের ফসল ‘ডুবসাঁতার’-এর একটি গল্প হাজির করা হলো এবারের প্রধান আয়োজনে। এখানে পাত্র-পাত্রী আর ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাই বলেছেন ছবি সম্পর্কে, নিজের চরিত্র নিয়ে এবং ডিজিটাল ছবি নিয়েও। লিখেছেন মীর সামী।

কাহিনী: ছবি তো মুখেরই ছবি। সারাজীবন আমরা অসংখ্য ছবির মুখোমুখি হই। পরিচিত কিংবা অপরিচিত। কেউ একান্ত প্রিয়জন, কেউবা একেবারেই অচেনা। সব ছবিরই একটি নিজস্ব গল্প থাকে। জানা-অজানা এইসব গল্প হয়ত নিতান্ত মামুলি কিছু। তবু এই পৃথিবীর সামান্য মুখগুলোই মাঝে-মধ্যে অসামান্য অনুভূতি নিয়ে হাজির হয়। ডুবসাঁতার রেনু’র অনুভূতিমালা। কখনো তা নি:সঙ্গতায় ভরা, কখনো দৈনন্দিন সঙ্গীর সাথে মুখর, আবার কখনো তা অন্তর্গত ডুব সেরে হুশ করে ভেসে ওঠা। মনখারাপ করা, হাঁসফাঁস করা মুহূর্তে রেনু আশ্রয় খোঁজে তার দুরন্ত শৈশবে, জন্মান্ধ ভাইয়ের সাহচর্যে কিংবা অনাগত সন্তানের সাথে কথোপকথনে, মান-অভিমানে। চোখ বুজলে মায়ের গর্ভের গোলাপি রঙ। সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে যাবার আগে নতুন কারো দিকে রেনু কি তার হাতটা বাড়িয়ে দেবে? নাকি তার স্বপ্ন আর বাস্তবের মাঝেই রেনু ঝুলে থাকবে?



প্রধান চরিত্র :
রেনু : জয়া আহসান
রোকন : অশোক বেপারী
রেহান : শাহরিয়ার শুভ
মা, আয়েশা : ওয়াহিদা মল্লিক জলি
চোর, পাখি : দেবাংশু হোর
ড্রাগ অ্যডিক্ট, ইমরান : ধ্রুব
পুনম : শ্রাবস্তী আদনান তিন্নি
সানি : স্বাধীন খসরু
মিথিলা : সুষমা সরকার
রেনুর অফিস কলিগ১ : অপু
কলিগ২ : কাকলি
কলিগ৩ : শামিম ভিস্তি
দিভিয়া : স্বাগতা
ছোট রেনু : সাদনিমা
ছোট রোকন : কুনাল
তরম্নণী মা : মীনা
পাড়ার মাসত্মান : শাহরিয়ার সজীব
দোকানি : জুনায়েদ হালিম


সংলাপ : মাতিয়া বানু শুকু
সিনেমাটোগ্রাফি : রাশেদ জামান
আর্ট ডিরেক্টর : লিটন কর
সম্পাদনা : ইকবাল কবির জুয়েল
সাউন্ড ট্র্যাক : ভিক্টর
গান : জয়া, শেহজাদ, স্বাগতা, প্রদীপ
কালারিস্ট : বিদ্যুৎ, মুভিওলা
স্টিল : শেহজাদ, মুমিত, তুমান, রাজিভ
প্রিন্ট ডিজাইন : সব্যসাচী হাজরা

প্রযোজনা : ক্যাওস সেভেন

চিত্রনাট্য ও পরিচালনা : নূরুল আলম আতিক


‘ছবি হবে সেটাই যা ফিল্মের ক্যামেরায় (৩৫ মিলিমিটার) তৈরি এবং সিনেমা হলে প্রদর্শনযোগ্য’-এমন ধারা আছে বিএফডিসির তৈরি ১৯৬৩ সালের আইনে। বাংলাদেশে চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে এই আইনই যদি হয় চূড়ান্ত কথা তাহলে তা হবে একটি তুমুল সম্ভাবনাকেই হত্যার আইন- তরুণ চলচ্চিত্রকাররা এমনটাই মনে করেন।
ডিজিটাল ফরম্যাট বা আরো নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি দুরন্ত মেধাবী প্রজন্ম এদেশের প্রচলিত সিনেমার অচালায়তন ভেঙ্গে নতুন সূর্যালোকের বার্তা বয়ে আনবে আমাদের দেশে, এই স্বপ্ন সত্যি হতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
এদেরই একজন নূরুল আলম আতিকের প্রাণপন পরিশ্রমের ফসল ‘ডুবসাঁতার’-এর একটি গল্প হাজির করা হলো এবারের প্রধান আয়োজনে। এখানে পাত্র-পাত্রী আর ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাই বলেছেন ছবি সম্পর্কে, নিজের চরিত্র নিয়ে এবং ডিজিটাল ছবি নিয়েও।


ফিল্ম তো ফিল্মই। এর আবার ভেদাভেদ কী?
- জয়া আহসান (‘ডুবসাঁতার’ এর রেনু)

আমার অভিনয় করা প্রথম ছবি ‘ডুবসাঁতার’। পরিচালক নূরুল আলম আতিক। এখানে আমি ‘রেনু’ নামের একটি মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। অনেক সুন্দর একটি চরিত্র রেনু। ‘ডুবসাঁতার’ ছবিতে আমার অনেক অভিনয় প্রদর্শনের জায়গা ছিল। যাই হোক, এবার আমি রেনুর কথা বলব...।

রেনু অনেক মিষ্টি একটি মেয়ে। সে মধ্যবিত্ত পবিবারের সন্তান। রেনু বাঁচতে চায় শুধুই অন্যের জন্য। নিজের জন্য কোন মায়া- মমতা নেই তার। সে তার সব মায়া-মমতা উজাড় করে দেয় পরিবারের প্রতিটি মানুষের জন্য। এই যে ভালোবাসা-এটাই তাকে নানা সমস্যার বেড়াজালে বন্দী করে ফেলে। সারাক্ষণ ব্যস্ত কর্মজীবী মেয়েটি সবসময় হাতড়াতে থাকে নিজের দুরন্ত শৈশব- কৈশোরের আনন্দময় মুহূর্তগুলো। মেয়েটির বিয়ে হলেও এক সময় বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। রেনু চলে আসে মায়ের সংসারে। এরপর নতুন সব সমস্যার মধ্যে একেবারে ডুবে যায় রেনু। তাকে নিয়ে চারপাশে ফিসফাস চলতে থাকে। এক ভাই জন্মান্ধ, আরেক ভাই নেশাগ্রস্ত মাঝখানে বিপন্ন মা- এরা সবাই নানা সংকটের মধ্যে বসবাস করে। যেগুলোতে জড়িয়ে থাকে রেনু নিজেও। সংসারের প্রতিটি মানুষ পুরোপুরি নির্ভরশীল মানুষ তার ওপর। সামান্য এনজিওর বেতনে নির্ভর করে একসময় সে একটু সুখের পরশ পেতে থাকে। ওর সঙ্গে পরিচয় হয় ইমরানের। তারপর তারা কাছাকাছি আসে।

আতিক ভাই এমন একজন নির্মাতা যিনি জানেন, কিভাবে একজন শিল্পীর কাছে থেকে সেরা কাজটি বের করতে হয়। এই ছবিতে এতোই কম মেকআপ এবং লাইটের ব্যবহার হয়েছে যে, আমাদের আসলে অভিনয় করতে হয়নি।

আতিক ভাইয়ের কোন কাজ আমি করলে পুরোপুরি তার উপর নির্ভর করি। আর একটা কথা না বললেই নয়, ছবিটির সংলাপ লিখেছেন শুকু (মাতিয়া বানু শুকু) আপা। তিনিও অসাধারণ লিখেছেন।

‘ডুবসাঁতার’ এদেশের প্রথম ডিজিটাল ছবি। তবে আমার মনে হয়, ফিল্ম তো ফিল্মই। এর আবার ভেদাভেদ কী?


সময় এসেছে সরকারের আইন সংশোধন করার
- স্বাধীন খসরু (‘ডুবসাঁতার’ এর সানি)

আগেও আতিক (নূরুল আলম আতিক) ভাইয়ের সাথে কাজ করেছি। কিন্তু তিনি তার প্রথম ছবি বানাবেন আর আমি কাজ করবো না এমন তো হতে পারে না। সুতরাং প্রস্তাব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একবাক্যে রাজি হয়ে গেলাম।

‘ডুবসাঁতার’ ছবিতে সানি চরিত্রে অভিনয় করেছি আমি। ছবিতে দেখা যাবে - আমি বিদেশে থাকি। একসময় দেশে চলে আসি। বিদেশ থেকে দেশে আসার পরে আমার আর শহুরে জীবন ভালো লাগে না। পরে আমি চিন্তা করি, ট্যুরিজমের ব্যবসা করব। যেই চিন্তা সেই কাজ। চলে আসি ব্যবসার জন্য কক্সবাজার। তারপর নানা ঘটনা ঘটতে থাকে। পুরোটা বলা যাবে না।

আসলে ‘ডুবসাঁতার’র গল্প একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের নানা ধরনের ভালো লাগা মন্দ লাগা, সমস্যা আর আনন্দ নিয়ে।

এই ছবি সম্পর্কে বলা প্রয়োজন, আমাদের দেশের প্রথম ডিজিটাল চলচ্চিত্র ‘ডুবসাঁতার’। আশা করছি, ছবিটি সব দর্শকের ভালো লাগবে।

আমাদের দেশে ডিজিটাল ফরম্যাটে ছবি বানালে সেটার কোনো সেন্সরের ব্যবস্থা নেই। এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। সেন্সর সনদ না পেলে ছবি সারা দেশের বিভিন্ন হলে প্রদর্শন করা যাবে না- এমন একটি আইন আছে বিএফডিসিতে। তবে আমরা অনেকেই জানি, পৃথিবীর অনেক দেশেই এখন শুধু ৩৫ ক্যামেরাতেই নয় ডিভি, এইচডিভি, এইচডিতে ছবি হচ্ছে এবং সেগুলো দেখছে ওইসব দেশের সবাই। মানে সেখানে ছবি সবার জন্য উন্মুক্ত। তো আমাদের এখানে সেই ফরম্যাটে ছবি হলে ক্ষতি কী? তাহলে এদেশের দেশের অনেক তরুণ নির্মাতা নতুন নতুন ছবি বানাতে পাবে। সেই সব দর্শক যারা কখনোও হলমুখী ছিলেন না বা সিনেমা হলের নাম শুনলে নাক সিঁটকান তারা আবার বাধ্য হবেন হলে গিয়ে ছবি দেখতে।

বিএফডিসির কোনো আইনে লেখা নেই যে, ডিজিটালে ছবি বানালে তার সেন্সর করা যাবে না। সেন্সরের আইনটি ষাটের দশকের তৈরি। তখন ডিজিটাল ক্যামেরার প্রচলন ছিল না। কিন্তু এখন তো এই ক্যামেরা সবাই ব্যবহার করছেন। সময় এসেছে সরকারের আইন সংশোধন করার এবং নতুন এই প্রযুক্তিকে স্বাগত জানানোর। তাহলে দেশে অনেক নতুন ছবি তৈরি হবে এবং নতুন ছবির দর্শকও তৈরি করবে।

আমরা এর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাব। যাতে তারা এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে ডিজিটাল ছবিকে সেন্সর বোর্ডের মাধ্যমে রিলিজ করেন।


“জলি আপা, এখন চোরের সাথে তোমার একটা রোমান্টিক সিকোয়েন্স হবে”
-ওয়াহিদা মল্লিক জলি (রেনুর মায়ের চরিত্রাভিনেত্রী)

স্বামী নেই, বড় মেয়ের খুব সামান্য আয়ে পুরো সংসারটি চালাতে হয় সে রকম একটি পরিবারে আমি মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছি এই ছবিতে। ছবিতে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মেয়েটির সংসার ভেঙ্গে গেছে। মোটকথা মধ্যবিত্ত পরিবারে জীবন-যাপনের যে টানাপোড়েন সেটাই তুলে ধরা হয়েছে ‘ডুবসাঁতার’-এ।

আতিকের কাজের মান অনেক ভালো। সে জানে কাকে দিয়ে কিভাবে অভিনয় করিয়ে নিতে হবে। ‘ডুবসাঁতার’-এ একটি দৃশ্য ছিল, এক চোর প্রতিদিন একটা নিদিষ্ট সময়ে চুরি করতে আসে। সে ভাত ছাড়া অন্য কিছু চুরি করে না । এক পর্যায়ে আমি টের পেলে তার জন্য জানালার পাশে ভাত রেখে দেই। দৃশ্যটি আমার অনেক ভাল লেগেছে। দৃশ্যের শুটিং চলার সময় আতিক আমাকে বলত, “জলি আপা এখন চোরের সাথে তোমার একটা রোমান্টিক সিকোয়েন্স হবে। তুমি একটু সেজেগুজে নাও”-এমন নানা মজা করেছি আমরা ছবিটি করার সময়।

এখানে কাজের অভিজ্ঞতাটা আমার কাছে অন্য রকমের
- স্বাগতা (দিভিয়া চরিত্রাভিনেত্রী)

আমি এর আগেও সিনেমায় অভিনয় করেছি। ফলে সিনেমা ব্যাপারটি আমার কাছে পুরনো। তবে আতিক ভাইয়ের কাজে অন্যরকম একটা মজা আছে। তিনি দারুণ যত্ন নিয়ে কাজ করেন। সেজন্য আর দশটি সিনেমায় কাজের চেয়ে এখানে কাজের অভিজ্ঞতাটা আমার কাছে অন্য রকমের।

‘ডুবসাঁতার’-এ আমার চরিত্রের নাম দিভিয়া। আমি রেনুর ছোটভাই রেহানকে (শাহরিয়ার শুভ) ভালোবাসি। এক সময় রেহান অন্য একটির মেয়ের (ছবিতে চরিত্রটির নাম পুনম, অভিনয় করেছেন শ্রাবস্তী আদনান তিন্ন্‌) আগ্রহী হয়। পুনম নেশাগ্রস্ত। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি রেহানকে সেই পথ থেকে ফিরিয়ে আনার।

‘ডুবসাতার’ ছবির গল্পটি রেনুকে নিয়ে। কিন্তু এই ছবির প্রত্যেকটা চরিত্রেরই নিজস্বতা রয়েছে। আমরা এই ছবির শুটিংয়ের অনেক মজা করেছি। আশা করছি, ছবিটি দর্শকের অনেক ভালো লাগবে।


মনেই হয়নি কোনো সিনেমায় অভিনয় করছি
- শ্রাবস্তী আদনান তিন্নি (পুনম চরিত্রাভিনেত্রী)

‘ডুবসাঁতার’ ছবিতে আমি পুনম চরিত্রে অভিনয় করেছি। ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে গল্পের নায়িকা রেনুকে কেন্দ্র করে। ছবিতে আমাকে নিয়ে রেনুর ভাইয়ের একটা ক্রাইসিস তৈরি হয়। আমি ডুবসাঁতার-এ নেশাগ্রস্ত মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি।

আমি যা দেখেছি তাতে মনে হয়েছে, আতিক ভাই অনেক যত্ন নিয়ে কাজ করেন। এই ছবিটি তিনি অনেক ভালোবাসা দিয়ে বানিয়েছেন। যে কয়েকদিন অভিনয় করেছি, ততদিন আমরা ছিলাম একটি পরিবারের মতোই। আর ছবিতে এত কম মেকআপ এবং লাইটের ব্যবহার হয়েছে যে, মনেই হয়নি আমরা কোনো সিনেমায় অভিনয় করছি।

একদিন সকাল দশটায় শুরু করে কাজ শেষ করেছি পরদিন সকাল নয়টায়
- শাহারিয়ার শুভ (রেহান চরিত্রাভিনেতা)

একটা মধ্যবিত্ত পরিবার, যাদের সম্বল একটি পুরোনো একতলা বাড়ি। আর বোনের সামান্য আয়। তিন ভাই- বোনের এই পরিবারে বোনটি বড়। সে চাকুরী করে। তার এক ভাই জন্মান্ধ, আরেক ভাই পড়ে ইউনিভার্সিটিতে। কিন্তু একসময় নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বোনটির সংসার ভেঙ্গে যাওয়ায় সে মায়ের কাছে এসে পড়ে। মেয়ের স্বল্পআয়েই চলে এই চার জনের সংসার। যে সংসারের নানা ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘ডুবসাঁতার’।


আমি এই মধ্যবিত্ত পরিবারের ছোট ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। আমার চরিত্রের নাম রেহান। ছেলেটা একরোখা ধরণের। যে সারাক্ষণ মায়ের সাথে ঝগড়া করে, নানা ঝামেলা পাকায়। একসময় ‘দিভিয়া’র সঙ্গে সম্পর্ক হয় তার। কিন্তু ‘পুনম’ নামের এক নেশাগ্রস্ত মেয়ের সঙ্গে পরিচয় এবং ঘনিষ্টতার পর সে তার পাল্লায় পড়ে নিজেও নেশার জগতে ঢুকে পড়ে।

‘ডুবসাঁতার’ ছবিতে কাজ করে আমার দারুণ ভালো লেগেছে। আশা করছি, ছবিটি ভালো লাগবে সাধারণ দর্শকের। এই ছবি পরিচালনা করছেন নূরুল আলম আতিক।

আতিক ভাইয়ের সাথে কাজ করে মনে হয়েছে তিনি এমন একজন মানুষ যার উপর পুরোপুরি ভরসা করা চলে। আর যদি নির্মাতা হিসেবে বলতে হয়- তবে আমি বলব, “হি ইজ দা বেষ্ট”। তার সাথে কাজ করলে শুধু করতেই ইচ্ছে করে। একথার প্রমাণ হিসেবে আমি শুধু বলতে চাই, একদিন আমরা শুট শুরু করেছিলাম সকাল দশটায় আর শেষ করেছি পরের দিন সকাল নয়টায়।

নতুন এই প্রযুক্তিকে সু-স্বাগতম বলা ভীষণ জরুরী
- রাশেদ জামান (চিত্রগ্রাহক, ডুবসাঁতার)

‘ডুবসাঁতার’ ছবিতে আমি চিত্রগ্রহণ করেছি। আতিক ভাইয়ের সাথে এটাই আমার প্রথম কাজ। এখানে কাজ করে আমার দারুণ লেগেছে। আমরা চেষ্টা করেছি যত কম যন্ত্রের ব্যবহার করা যায়। কারণ আমরা একটি সহজ সাধারণ ছবি বানাতে চেয়েছি- সাধারণ, অতি সাধারণ একটি গল্পের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে ছবিটা। ফলে এখানে লাইটের ব্যবহারও করা হয়েছে অনেক কম। যদিও এখন ছবি, নাটক মানে যন্ত্রের ছড়াছড়ি।

কক্সবাজারে আমরা হারিকেন আর হ্যজাকের আলো দিয়ে লাইটের কাজ চালিয়েছি। আমরা যারা ছবিটি তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে ছিলাম, তাদের সবার মনে হয়েছে, এই গল্পে অনেক বেশি লাইটের প্রয়োজন নেই। একটা মেয়ে অনেক সীমাবদ্ধতার ভেতর দিয়ে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, প্রতিদিন নতুন করে সংগ্রামে নামছে, আশার খোঁজে দুরন্ত পথ পাড়ি দিচ্ছে- তার গল্পে বেশি লাইটের প্রয়োজন নেই মোটেও।

ছবিতে আমাকে স্বাধীনভাবে ক্যামেরা চালানোর অধিকার দিয়েছিলেন আতিক ভাই। প্রতিদিনই তার কাছে নতুন কিছু শিখেছি। তিনি এমন একজন মানুষ যাকে সবসময় বিশ্বাস করা যায়।


আমার মনে হয়, ফিল্ম ইজ ফিল্ম। এখানে ডিজিটালই বা কী আর এবং এনালগই বা কী। হলিউডের অনেক ছবি এখন ডিজিটাল ক্যামেরায় হচ্ছে। গল্প বলার ভঙ্গিটা সিনেমাটিক হলো কী না সেটাই আসলে দেখার বিষয়। সারা পৃথিবী প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন, কেন আমরাই শুধু পিছিয়ে থাকব? আমাদের এই মুহূর্তেই নতুন এই প্রযুক্তিকে সু-স্বাগতম বলা ভীষণ জরুরী। তাহলে এদেশে যে হাজারো মেধাবী তরুণ ছবি বানানোর স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পথে-ঘাটে আর ঠোক্কর খাচ্ছে; তারা সবাই ছবি বানাতে পারবে। ছবি হয়ে উঠবে এই দেশ, মাটি আর মানুষের।

ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের সিনেমার ঘুণেধরা পরিবেশটাকে বদলে দিতে পারে
- নূরুল আলম আতিক (চিত্রনাট্যকার এবং পরিচালক, ডুবসাঁতার)

ফিল্ম তো ফিল্মই। ছবি প্রথাগত ৩৫ এমএম-এ শুট করলেও হবে, ডিজিটালে করলেও হবে-এটা প্রযুক্তির ব্যাপার। তাই আমি ছবি কিসে তৈরি করা হলো তার কোনো পার্থক্য করি না। আর এখন পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এইচডিভি, এইচডি’তে অসংখ্য ছবি তৈরি হচ্ছে। যার অনেকগুলোই নন্দিত হচ্ছে। (আমেরিকাতে সানড্যান্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল নামে একটা বিখ্যাত চলচ্চিত্র উৎসব প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় যেখানে দেখানো হয় ডিজিটাল ছবি। আর শুধু আমেরিকাতেই আছে ১২’শরও বেশি সিনেমা হল যেখানে শুধুই ডিজিটাল ছবি দেখানো হয়। জর্জ লুকাসের মতো বিখ্যাত পরিচালকও ডিজিটাল ফরম্যাটে ছবি বানান।)

আমার মনে হয়, ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের সিনেমার ঘুণেধরা পরিবেশটাকে বদলে দিতে পারে। তারই একটা নমুনা হাজির করার জন্য আমার এই ‘ডুবসাঁতার’। যে অসংখ্য ছেলেমেয়ে ছবি বানানোর স্বপ্ন নিয়ে পথে-ঘাটে রাস্তা খুঁজে বেড়াচ্ছে তাদের জন্য একটা পথের সন্ধান দিতেই এই ছবিটির সূত্রপাত।

যেকোনো জায়গায় এই ছবি বানানো যাবে। যেকোনো বিষয় নিয়ে ছবি বানাবে আমাদের মেধাবী তরুণরা- এই স্বপ্নের কথা ভেবেই আমি ছবিটি বানাতে চেয়েছি। পাঠক-দর্শকদেরও আমাদের এই যাত্রায় আমন্ত্রণ।
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×