সন্ধ্যা মালতী !!!
ভরা ভাদরের এক অকাল সন্ধ্যায়, আকুলিত মন নিয়ে অযুত বৃষ্টি কণার আছড়ে পরা অকিল্মিষ অনুনয় উপেক্ষা করে;
সান্ধ্য মায়ায়, সন্ধ্যা মালতি এক কালো ভ্রমরের প্রেমে পড়লো।
তুমুল সে প্রেমের পালঙ্ক সে সাজালো নির্জন মায়ায় মনে মনে মন মহুয়ার মাদকতায়।
নৈবদ্য !!!
সে নিজেকেই নিমগ্ন করেছে মালতি ঘ্রানে মেঘের গন্ধ লুকিয়ে।অতখানি চঞ্চলা সুবাস আর শুদ্ধ করা সন্ধ্যাবাতি রঙ সবতাতেই সবটুকু বিলিয়েছে গুঞ্জন গুঞ্জনে।
ভ্রমর !!!
সেত আজন্ম বিবাগী ! নিকষ নিশ্চুপ নিসর্গে নির্নিমেষ নয়নে কেবল নিজেকেই দেখে নিজেকেই ভালোবাসে;
অবারিত তার ফুলে ফুলে ফাল্গুন গুনগুণ ডানায় তার অবাধ্য নাচন ঝরজল মেঘ বা রৌদ্রের প্রখরতা কিছুতেই নেই তার পায়েবেড়ি।
আর মালতী
সে জানে মহুয়া গন্ধী সন্ধীর দহন, কতটা আক্ষেপ আর অবহেলায় মৃয়মান হয় সে খবর কে রেখেছে কবে !!!
প্রেমিক না হবার নেশাসক্ত ভ্রমর ডুব দেয় কি অগ্নিতে? যতক্ষন না করেছ পান সেই সুধাজল,যতক্ষন না পোড়ামাট সম উজ্জ্বল কঠিন তার আগে শুদ্ধ হলেই বা ক্যামনে ? সর্বনাশের আশায়, অপেক্ষায় অপেক্ষায় রানী রঙা মালতী যদি আজ লাবন্য হারায় হায়! পারবে কি কালো ভ্রমর মিছে সে যন্ত্রনার দাম চুকাতে ? নিয়ত সে মন বুঝে মনে মনে ম্রিয়মাণ হয়ে বলে-
“নত হও নিমজ্জিত হও ভ্রমর!!!
ফ্রেমেবাধা সে মন আমি রেখেছি ফল্গুধারা করে;
যেখানে অলিখিত ভাবে লেখা আছে
প্রবেশ নিষেধ।
শুধু তার দায়িতের তরে আবারিত দ্বার!
নিজেকে নিঃস্বভাবার ... নিগূঢ়! নিলাভ! নিষ্প্রভ! প্রহরে ভ্রমরের মনে হলো মালতীর চোখের তারা্র তুমুলিত ডাক। হাসির ঝর্ণায় কিছু উন্মনা আলো পদ্মহৃদয়ে টলটলে সুখ। বাউন্ডুলে ভ্রমরের মনের কিছু পিছুটান তাকে জানিয়ে দিলো আজ শুধু তার শুধু মালতি কেই চাই!!!!
নিজেকে তার মনে হয় -
এক আকাশ সমান ক্লান্তনীলে ডুবে যাওয়া মেঘ। প্রানপন নিজের অস্তিত্ব প্রকাশে যেন ব্যাকুল, ঘনঘন বিদুৎ চমক আর গর্জনে উষ্মা বর্ষন করে, তিরতির জমাজল জমেজমে বেদনার সুরমা রঙ যেমন জলকাব্যে ; যেখানে জল জোছনা মিতালী হয়, নুয়ে থাকা চাঁদ আর উচ্ছ্বসিত ঢেউএ। মেঘ কে অচকিত ভ্রমরের খুব ঈর্ষা হলো, ডুবু ডুবু মেঘ কেমন সুন্দর সে অপরিচিতা অপরাজিতার খুব কাছের জন হয়েই আছে; নিজেদের নীলনীলে নজরবন্দী হয়ে।
- - নিজ অঙ্গনে ঐটুকু ঝাড়'ই নিজেকে সুখী রাখে মালতী;
দৃষ্টির প্রসারতায় ভ্রমরের নিত্যদিনের গুনগুনের উঠানামায়, আর ডানায় আঁকা প্রতিদিনের নব আলপনা তাকে অনুধাবন করায় কুঞ্জবনের অভিসার। তবুও নিজ মনে, নিজ গুনে সুখী সে ; চাপা এক উন্মনা সুখ তাকে আগলে রাখে পায়ে পায়ে প্রতিভাস হয়ে। শব্দমাদল আনন্দদল আনন্দলিত হয় ক্ষনে ক্ষনে তুমুলিত ঢেউ উঠে ঢাকবাজা বুকে। ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি আর কনেদেখা হলদে আলোর বিকেল গুলো মালতীর মনে এনে দেয় স্বপ্নের কিছু মুহূর্ত !! পেঁজা তুলো র মত জোছনা, বৃষ্টির আদর মাখে তার পুরোটা জুড়ে। যত না শরীর ভেজায় মন ভিজেছে যে সমস্ত'টাই। এমন মায়াবী মহেন্দ্রক্ষনেই বুঝি সবচাইতে দুঃখী কাউকে ও সুখী করে তুলতে পারে , তাই সে আনন্দকেলী রত বাতাস কে চিৎকার করে বলে ......
শোন
সে আমার হৃদ ছুয়ে রেনুকার রিনরিন
সিক্ত শিন্জন আজ বাজে সমস্ত আত্মায়।
- অহংকারী ভ্রমর না নুইয়ে উদ্ধত হয় আরও ভাবনায় ভেবে নিলো মালতীর মেঘ মিতালীর মহেন্দ্রক্ষন, মুহুর্মুহু গুঞ্জন তার রুপ নিলো গগণ বিদারীতায় হুল ফুটিয়ে ফুল ফোটানোর যন্ত্রণা দিলো অযাচিত ভালোবাসা পাওয়া মালতী কে'ই।
তাই তো আজো ও দেখো! অযাচিত অবহেলায় ও মালতী’ই সবচাইতে বেশি ফোটায় ফুল না চাইতেই সে স্নিগ্ধতা সুবাস বিলায় সারাক্ষন সমস্ত ঋতুতে ঋতুতে আর ক্ষনে ক্ষনে ভ্রমর ও ছুটে আসে সকল ফুল ভ্রমিয়া।
আর গুনগুনে গান গায়ঃগানটা এখানে শুনতে পারেন।
শোন ও বকুল মল্লিকা হাসনুহেনা
ছবিঃআমার নিজের
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯