somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কালো ভ্রমর আর মালতী (মুক্ত গদ্য)

০৭ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




সন্ধ্যা মালতী !!!

ভরা ভাদরের এক অকাল সন্ধ্যায়, আকুলিত মন নিয়ে অযুত বৃষ্টি কণার আছড়ে পরা অকিল্মিষ অনুনয় উপেক্ষা করে;
সান্ধ্য মায়ায়, সন্ধ্যা মালতি এক কালো ভ্রমরের প্রেমে পড়লো।
তুমুল সে প্রেমের পালঙ্ক সে সাজালো নির্জন মায়ায় মনে মনে মন মহুয়ার মাদকতায়।

নৈবদ্য !!!

সে নিজেকেই নিমগ্ন করেছে মালতি ঘ্রানে মেঘের গন্ধ লুকিয়ে।অতখানি চঞ্চলা সুবাস আর শুদ্ধ করা সন্ধ্যাবাতি রঙ সবতাতেই সবটুকু বিলিয়েছে গুঞ্জন গুঞ্জনে।


ভ্রমর !!!

সেত আজন্ম বিবাগী ! নিকষ নিশ্চুপ নিসর্গে নির্নিমেষ নয়নে কেবল নিজেকেই দেখে নিজেকেই ভালোবাসে;
অবারিত তার ফুলে ফুলে ফাল্গুন গুনগুণ ডানায় তার অবাধ্য নাচন ঝরজল মেঘ বা রৌদ্রের প্রখরতা কিছুতেই নেই তার পায়েবেড়ি।

আর মালতী

সে জানে মহুয়া গন্ধী সন্ধীর দহন, কতটা আক্ষেপ আর অবহেলায় মৃয়মান হয় সে খবর কে রেখেছে কবে !!!
প্রেমিক না হবার নেশাসক্ত ভ্রমর ডুব দেয় কি অগ্নিতে? যতক্ষন না করেছ পান সেই সুধাজল,যতক্ষন না পোড়ামাট সম উজ্জ্বল কঠিন তার আগে শুদ্ধ হলেই বা ক্যামনে ? সর্বনাশের আশায়, অপেক্ষায় অপেক্ষায় রানী রঙা মালতী যদি আজ লাবন্য হারায় হায়! পারবে কি কালো ভ্রমর মিছে সে যন্ত্রনার দাম চুকাতে ? নিয়ত সে মন বুঝে মনে মনে ম্রিয়মাণ হয়ে বলে-

“নত হও নিমজ্জিত হও ভ্রমর!!!
ফ্রেমেবাধা সে মন আমি রেখেছি ফল্গুধারা করে;
যেখানে অলিখিত ভাবে লেখা আছে
প্রবেশ নিষেধ।
শুধু তার দায়িতের তরে আবারিত দ্বার!



নিজেকে নিঃস্বভাবার ... নিগূঢ়! নিলাভ! নিষ্প্রভ! প্রহরে ভ্রমরের মনে হলো মালতীর চোখের তারা্র তুমুলিত ডাক। হাসির ঝর্ণায় কিছু উন্মনা আলো পদ্মহৃদয়ে টলটলে সুখ। বাউন্ডুলে ভ্রমরের মনের কিছু পিছুটান তাকে জানিয়ে দিলো আজ শুধু তার শুধু মালতি কেই চাই!!!!

নিজেকে তার মনে হয় -
এক আকাশ সমান ক্লান্তনীলে ডুবে যাওয়া মেঘ। প্রানপন নিজের অস্তিত্ব প্রকাশে যেন ব্যাকুল, ঘনঘন বিদুৎ চমক আর গর্জনে উষ্মা বর্ষন করে, তিরতির জমাজল জমেজমে বেদনার সুরমা রঙ যেমন জলকাব্যে ; যেখানে জল জোছনা মিতালী হয়, নুয়ে থাকা চাঁদ আর উচ্ছ্বসিত ঢেউএ। মেঘ কে অচকিত ভ্রমরের খুব ঈর্ষা হলো, ডুবু ডুবু মেঘ কেমন সুন্দর সে অপরিচিতা অপরাজিতার খুব কাছের জন হয়েই আছে; নিজেদের নীলনীলে নজরবন্দী হয়ে।


- - নিজ অঙ্গনে ঐটুকু ঝাড়'ই নিজেকে সুখী রাখে মালতী;

দৃষ্টির প্রসারতায় ভ্রমরের নিত্যদিনের গুনগুনের উঠানামায়, আর ডানায় আঁকা প্রতিদিনের নব আলপনা তাকে অনুধাবন করায় কুঞ্জবনের অভিসার। তবুও নিজ মনে, নিজ গুনে সুখী সে ; চাপা এক উন্মনা সুখ তাকে আগলে রাখে পায়ে পায়ে প্রতিভাস হয়ে। শব্দমাদল আনন্দদল আনন্দলিত হয় ক্ষনে ক্ষনে তুমুলিত ঢেউ উঠে ঢাকবাজা বুকে। ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি আর কনেদেখা হলদে আলোর বিকেল গুলো মালতীর মনে এনে দেয় স্বপ্নের কিছু মুহূর্ত !! পেঁজা তুলো র মত জোছনা, বৃষ্টির আদর মাখে তার পুরোটা জুড়ে। যত না শরীর ভেজায় মন ভিজেছে যে সমস্ত'টাই। এমন মায়াবী মহেন্দ্রক্ষনেই বুঝি সবচাইতে দুঃখী কাউকে ও সুখী করে তুলতে পারে , তাই সে আনন্দকেলী রত বাতাস কে চিৎকার করে বলে ......
শোন
সে আমার হৃদ ছুয়ে রেনুকার রিনরিন
সিক্ত শিন্জন আজ বাজে সমস্ত আত্মায়।



- অহংকারী ভ্রমর না নুইয়ে উদ্ধত হয় আরও ভাবনায় ভেবে নিলো মালতীর মেঘ মিতালীর মহেন্দ্রক্ষন, মুহুর্মুহু গুঞ্জন তার রুপ নিলো গগণ বিদারীতায় হুল ফুটিয়ে ফুল ফোটানোর যন্ত্রণা দিলো অযাচিত ভালোবাসা পাওয়া মালতী কে'ই।


তাই তো আজো ও দেখো! অযাচিত অবহেলায় ও মালতী’ই সবচাইতে বেশি ফোটায় ফুল না চাইতেই সে স্নিগ্ধতা সুবাস বিলায় সারাক্ষন সমস্ত ঋতুতে ঋতুতে আর ক্ষনে ক্ষনে ভ্রমর ও ছুটে আসে সকল ফুল ভ্রমিয়া।


আর গুনগুনে গান গায়ঃগানটা এখানে শুনতে পারেন।
শোন ও বকুল মল্লিকা হাসনুহেনা



ছবিঃআমার নিজের
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯
৩৪টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×