রেজিস্ট্রেশন করে সবাই মিলে নাস্তা করতে গেলাম।
খুব সাকলে বের হওয়ার কারনে সবাইকেই নাস্তা না করেই বের হতে হয়েছে।
আমাদের সাথে একই টেবিলে কিছুটা বয়স্ক ১চাইনিজ দম্পত্তি বসলো।কিছুক্ষন পর মহিলা আমদের জিজ্ঞেস করলো আমরা কোথা থেকে এসেছি। ইউনিভার্সিটির নাম বলার মাহিলা আবার জিজ্ঞেস করলো আমদের দেশ সম্পর্কে।যখনি বললাম বাংলাদেশ তখনি মহিলা আবাক হয়ে বললো ও!! বাংলাদেশ!!। বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক মালায়শিয়াতে কাজ করতে আসে।নিশ্চয়ই তোমাদের বাবা-মা খুব ধনী তাই তোমাদেরকে মালয়শিয়াতে লেখাপড়া করতে পাঠিয়েছে।ভদ্রমহিলা আমার বলার আর কিছুই রাখলোনা।আমি সম্মতিসূচক মাথা নাড়িয়ে আবার নাস্তা করাতে মনোনিবেশ করলাম।এই একই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুক্ষিন আমি আরো একবার হয়েছিলাম।আমাদের ইউনিভার্সিটিতে গ্রুপ বাইন্ডিং প্রোগ্রাম এর সময় আমার টেবিলে বসেছিল সিঙ্গাপুর এর এক মেয়ে।ও যখন শুনলো আমি বাংলাদেশের তখন একই কথাই বললো।সে বললো তোমার দেশের অনেক শ্রমিক আমার দেশে কাজ করতে আসে।আমি তখন তাকে আসল কারন ব্যাখ্যা করে বললাম তাদের কারনেই আমাদের আর্থনীতির চাকা এখনো সচল আছে।তাদেরকে নিয়ে আমার দেশ গর্ব করে। আসলেইতো তাই, কেউ যখন আমাকে বলে তোমাদের ইউনিভার্সিটিতে কতজন বাংলাদেশি আছে, তখন আমি বলি আমাদের ইউনিভার্সিটির প্রায় আর্ধেকই বাংলাদেশী!! ইউনিভার্সিটির সুইপার থেকে শুরু করে বাবুর্চী,দোকানদার,শ্রমিক,ঝাড়ুদার,ছাত্র-শিক্ষক মিলে বাংলাদেশিদের সংখ্যা মন্দ না।
যাই হোক নাস্তা সেরে আমরা আডিটোরিয়াম এ প্রবেশ করলাম।যদিও কথা ছিলো আমকে বাইরে বসে প্রজেক্ট্রে প্রোগ্রাম দেখতে হবে তবুও আমি আডিটোরিয়াম এ প্রবেশ করতে পারলাম।কারন আধিকাংশ মেহমানই তখনো
এসে পৌছায়নি।যথা সময়ে অনুষ্ঠান শুরু হলো।দেশী-বিদেশী আনেক ভিআইপি ব্যাক্তি এবং বিভিন্ন পাবলিক ইউনিভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রী এই অনুষ্ঠানে আংশগ্রহন করছে।এই ধ রনের গুরুত্বপূর্ন প্রোগ্রাম এ বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীদের আমন্ত্রন করা মালয়শিয়াতে ট্রাডিশন এর মতো কারন তারা বিশ্বাস করে আগামীদিনের নেতৃত্ব এদের মধ্যে থেকেই উঠে আসবে সুতরাং তাদের সব বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।
কিছুক্ষন পর মালায়শিয়ার ডেপুটি প্রাইম মিনিষ্টার “ইয়াম্বর বাহাগিয়া তানশ্রি দাতো মুহিউদ্দীন বিন হাজি মোহাম্মদ ইয়াসিন” তার বক্তব্য দিলো।
নিচের লিঙ্ক এ ক্লিক করুন উনার বক্তব্য pdf file এর জন্য।
লাঞ্চ ব্রেক এর সময় আমরা নামাজ পড়ে একসাথে লাঞ্চ করলাম।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রোগ্রাম শুরু হতে এখনো প্রায় আধাঘন্টা বাকী।আশিক ভাই এবং মুজাহিদ ভাই প্রস্তাব দিলো চলো পুত্রজায়ার আন্যতম আকর্ষন মসজিদ বেসি পুত্রজায়া তে ঘুরে আসি।এই রোদের মধ্যে প্রায় ১কিলোমিটার হেটে মসজিদ বেসিতে যাওয়ার মতো এনার্জি প্লাস আত্ববিশ্বাস কোনোটাই আমাদের ছিলোনা।আশিক ভাই এবং মুজাহিদ ভাই নাছোড়বান্দা যেভাবেই হোক তারা আজ মসজিদ বেসি দেখেই আসবে।
মসজিদ বেসির আন্যতম আকর্ষন হলো এই মসজিদ এর তিন পাশেই কৃ্ত্তিমভাবে ঝরনা স্রৃষ্টি করা হয়েছে যার পানি মসজিদ এর মেঝের সাথে প্রায় মিশে গেছে।
মসজিদের বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় মসজিদের ভেতর থেকে তার ৩ পাশ দিয়ে পানি গড়িয়ে হ্রদ এ পড়ছে আর মসজিদের ভেতর থেকে দেখলে মনে হয় কোনো এক জলাশয়ের মাঝে এই মসজিদ তৈরী করা হয়েছে।
প্রবল আত্ববিশ্বাস এবং এনার্জি নিয়ে দুইভাই মসজিদ বেসির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।আর আমরা পারদানা লিডারশিপ ফাউন্ডেশনের লাইব্রেরী দেখতে চলে গেলাম।
লাইব্রেরী টি ছোট হলেও খুব সাজানো-গোছানো।আনেক দূর্লভ বই আছে এই লাইব্রেরী তে।বিরতির পর আমরা যথাসময়ে আমরা প্রোগ্রামস্থলে চলে গেলাম।প্রোগ্রাম শেষ হলো বিকাল ৫টায়।আমরা আডিটোরিয়াম থেকে বের হয়ে দেখি আশিক ভাই এবং মুজাহিদ ভাই ভ্রমন শেষ করে আডিটোরিয়াম এর বাইরে আমাদের জন্য আপেক্ষা করছে।এরপর সবাই মিলে বিকালের নাস্তা সেরে ক্লান্ত শরীরে ইউনিভার্সিটির বাস এ উঠে বসলাম।বাস চলতে শুরু করলো আমাদের ইউনিভার্সিটির উদ্দেশ্যে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১০:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




