somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৌসখ

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ ভোর ৪:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মৌসখ
পূরুষের হৃদয়ের কনে, কোন নারীকে স্থান দেবার নাম হল প্রেম। এই প্রেমের কারনে অনেক চালাক ছেলে হয়ে যায় বোকা। তার মনে তিলে তিলে গড়ে উঠে আশার আলো, চোখে থাকে রঙ্গীন স্বপ্ন। পৃথিবীর সকল সুখ খুঁজে পায় তার ভালবাসার মানুষটিকে ঘিরে। ছেলেটি যতই চঞ্চল হউক না কেন! সে সারান চিন্তায় মগ্ন থাকে প্রিয়তমার ভালবাসা পাবার জন্য। কোন কাজে মন বসেনা, সবার সাথে তেমন কথা পর্যন্ত বলেনা। দেখে মনে হয় সে এক বোবা নিরীহ্ প্রাণী, পাথরের মূর্তি। ঠিকমত কলেজে যায়না, পড়ার টেবিলে তেমন মন নেই, বসে বসে শুধু প্রিয়ার জন্য চিঠি লেখে। খাওয়া দাওয়াতে কোন রুচি নেই। ছেলের এই পরিবর্তন দেখে অনেক বাবা মা মনে করে তার ছেলেকে কেউ তাবিজ অথবা যাদুটোনা করেছে। ফকিরের কাছ থেকে কবজ এনে পড়িয়ে দেয় ছেলেকে।
এই অকৃতিম ভালবাসার পরশে নারীরা নিজেকে আবিস্কার করে ফেলে "মাদার তের্সা অথবা মুনালিশা"। কারণ- ডযবহ ধ ঃড়ঁপয শববঢ়ং ড়হ ঃযব নড়ফু ড়ভ ধ ড়িসধহ, রঃ রং ঃযবহ ফড় ঃড় ংঢ়বধশং ড়ভ ধ ফবধভ ধহফ ফঁসঢ় মরৎষ. "পুরুষের ছোঁয়া যখন কোন নারীর উপরে পরে তখন বোবা মেয়ের মুখেও কথা ফুটে"। পবিত্র মনের ভালবাসা গভির সমুদ্র জ্বলের মতো। সাগরের বুকে এতো জল থাকা সত্তেও কেন আবার নদীর বুক থেকে একটু জল নিতে ব্যাকুল থাকে..................? তবুও প্রিয়ার কাছে প্রশ্ন-
তুমি কি শুধুই কল্পনার তুলি বা
হৃদয়ের ক্যানভাসে আঁকা কোন বসন্ত কিংবা
চিত্তের প্রাচীরের কোন চিকা,
অথবা রং ধনুর কোন রং।
তুমি কি পড়ন্ত বিকেলে সাগরের দিকে
চেয়ে থাকা শুন্যতা কিংবা
নিজুম রাতের নির্জনতা বা
শেষ রজনীর ঐ তারা কিংবা
ভোরের পাখি বা পেঙ্গুইন।
তুমি কি তুষারের ঐ সি্নগ্ধতা
কিংবা সৈকতের নুড়ি অথবা
ঐ দূর পর্বতের বুকে ফুটে থাকা কোন ফুল।
তুমি কি সে দিনের ঐ চাঁদের আলো বা
দুর থেকে ভেসে আসা গানের কোন সুর কিংবা
ভোরের শিশির ভেজা কলি।
তুমি কি দুঃস্বপ্নে কাটানো কোন রজনী
নাকি শুধু কল্পনার ছবিতে আঁকা
কোন এক................................. নারী,
তুমি কে..........?
-সূচনা-
পলি অঞ্চলে সাগরের জন্ম। বাবা মা আর ভাই বোন নিয়ে সাগরদের সুখি পরিবার। সাগর এখন 8ম শ্রেনীতে পড়ে। স্কুলে যাবার পথটি ছিল সাগরদের বাড়ীর সামনে দিয়ে। সাগর এক চাঞ্চল্যকর ছেলে। কিন্তু খুব ভাল। লেখা পড়া ছাড়া এখন ওর কোন কাজ নেই। ছাত্র হিসাবে সাগর খুব ভাল। বাসায় তেমন লেখা পড়া না করেও পরীায় ভাল রেজাল্ট করতো বলে বাড়ী থেকে ওকে পড়ার জন্য কখনো চাপ সৃষ্টি করতনা।
একদিন একটি মেয়ে সাগরদের বাড়ীর সামনে দিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। মেয়েটি দেখতে যেমন সুন্দরী ঠিক তেমন লাবন্যময়ী। সাগর ঐ মেয়েটির দিকে তাকিয়ে নিজেকে কোথায় যেন হারিয়ে ফেলে। এই ভাবে প্রায় 5/6 মাস কেটে যায় সাগরের। পরে সাগর জানতে পায় মেয়েটির নাম সূচনা। সূচনারা দুই বোন এক ভাই। ভাই বোনদের মধ্যে সূচনা সবার বড়। সূচনা লেখা পড়ায় খুব ভাল, 5ম শ্রেণীতে পড়ে। প্রতিদিন নিয়মিত কাস করে বলে প্রথম স্থান কেউ ছিনিয়ে নিতে পারেনা। সূচনার বাবা একজন গ্রাজুয়েট সরকারী কর্মচারী। তিনি ঢাকায় একটি সরকারী অফিসে চাকুরী করেন। শিতি ব্যক্তি হিসাবে সবসময় ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার প্রতি একটু বেশী নজর রাখতেন।
সূচনাকে দেখার পর সাগরের বুকে ধীরে ধীরে জন্ম নেয় "কুসুম প্রেম"। এই বয়সে প্রেম কাকে বলে সাগর কিছু বুঝেনা, কিন্তু সূচনাকে দেখার পর তার বুকে ভেতর কিসের এক ব্যাথা অনুভব করে যা সহজে কাউকে বলতে এবং বুঝাতে পারেনা। সাগর আস্তে আস্তে সূচনার ভালবাসার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পরে। সূচনাকে প্রতিদিন একবার না দেখতে পেলে বুকে হৃদয় কাপানো তুফান উঠে।
সূচনাদের বাড়ী এলাকার বিলের ধারে। বাড়ীর সমানে একটি বড় খেলার মাঠ আছে। সেখানে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা প্রতিদিন বিকেল বেলায় খেলাধুলা করে। সাগর এই সুযোগটা কাজে লাগাতে শুরু করে। প্রতিদিন তার বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে খেলার মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলে। ক্রিকেট খেলা সাগরের প্রিয় সখ। খেলতে খেলতে বলটি চলে যায় বাড়ীর বাউন্ডারীর ভেতর, বল আনার জন্য সাগর বাড়ীতে প্রবেশ করতো। সাগরের উদ্দেশ্যটা ছিল একটু এমন যে, "হৃদ দেখা আর কলা বেচার মত"। মাঝে মাঝে সাগর সূচনার ছোট ভাই মেহেদী হাসানকে নিয়ে খেলা করে, হাসানের কাছথেকে তাদের পরিবারের খবরা খবর নেয়।
পবিত্র রমজান মাস, মুসলিম পরিবারের ঘরে ঘরে পবিত্র রমজানের উৎসব। স্কুলের বার্ষিক পরীা শেষ হয়ে 5ম শ্রেণীর বৃত্তি পরীা আরম্ভ হয়েছে। এই পরীায় অনেক ছাত্র ছাত্রী অংশ গ্রহন করবে এদের মাঝে সূচনাও একজন। পরিার জন্য বাসায় ভাল ভাবে তৈরী হচ্ছে সূচনা।
ভোর হয়ে গেছে। সাগর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে প্রায় 9.00টা বাজে। আজ বৃত্তি পরিা আরাম্ব হবে। কেন্দ্রটি প্রায় 20/25 কিঃমিঃ দুরে, কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা। কেন্দ্রে যাবার জন্য মায়ের কাছ থেকে একশত টাকা চেয়ে নেয় সাগর, একটি বাইসাইকেল নিয়ে রুজা রেখে তার এক চাচাতো ভাইকে সাইকেলের পেছনে বসিয়ে রওনা হয় কেন্দ্রের দিকে। কেন্দ্রে পৌঁছিয়ে দেখে পরীা প্রায় শেষ পর্যায়। দুপুর 2.00টায় একটি পরীা আছে, তার মধ্যে এক ঘন্টার বিরতী। অনেক কষ্টে একটা বাচ্চা ছেলে ডাবলিং সাইকেল চালিয়ে হাফিয়ে উঠেছে। কান্তি দুর করার জন্য মাঠের উপর বসে আছে। প্রথম পর্বের পরীার শেষ ঘন্টা পড়ে গেছে, সূচনা বাহির হয়ে বাবাকে খুঁেজ পাচ্ছে না। সূচনাকে দেখা মাত্রই সাগরের মনে হচ্ছে তার কান্তি সব দূর হয়ে গেছে। দৌড়ে ফলের দোকানে গিয়ে কিছু আপেল এবং আঙ্গুর কিনে আনে। কিভাবে যে সাগর সূচনাকে দেবে ভেবে পাচ্ছে না। রুমের ভেতর ভয়ে ভয়ে ডুকে শিখাকে দেখতে পায়, বৃত্তি পরিায় অংশ নিয়েছে, শিখা হচ্ছে সাগরের চাচাতো বোন। শিখাকে দেখে খুব আনন্দিত হয়ে বলে- শিখা তুমি এই ফল গুলি নেও, শিখা আবার সাগরের ব্যপারটা একটু জানত। সাগর শিখার হাতে প্যাকেটটি তুলে দেয়। প্যাকেটটি হাতে নিয়ে শিখা সুচনাকে বলল- এই নাও আমার তরফ থেকে তোমাকে দিলাম। শিখার হাতে প্যাকেট দেখে সূচনার বুঝতে বাকি নেই এটি কার কান্ড, সে এগুলো খাবে না, তাই শিখাকে বরাবরের মত না করে দিল। সূচনার এই দৃশ্য দেখে অনেক অভিমানে কেন্দ্র থেকে বেড়িয়ে গেল। শিখার অনুরোধে একটা আপেল খায়। বড়ই হতভাগা সাগর, নিজ চোখে তার দেয়া খাবার খেতে দেখতে পারলনা। মনে একটু কষ্ট নিয়ে চলে আসে বাসায়।
কিছু দিন পর সাগর সাইকেলে চড়ে বিলের ধারে যাচ্ছে। পথে সূচনার বাবার সাথে দেখা, কোথায় যেন যাচ্ছেন। সাগর সাইকেল থামিয়ে ছালাম দেয়। কামাল সাহেব (সূচনার বাবা) বলে ভাল আছ বাবা। সাগর- ভাল, আপনি ভাল আছেন? কামাল সাহেব- ভাল! বলে চলে যায়। মাঠে সাইকেল রেখে বাড়ীর সামনে নতুন দূর্বা ঘাসের উপর বসে আছে। এমন সময় সূচনা তাদের সব্জি গাছের উপর পানি দিতে থাকে। পানি দিতে দিতে হঠাৎ এক জগ পানি এসে পড়ে সাগরের গায়ে, সম্পূর্ণ ভেজা শরীরে তাকিয়ে দেখে সূচনা তার এই করুন অবস্থা দেখে হাসছে। সূচনার হাসি দেখে সাগর নিজেকে হারিয়ে ফেলে। বোকার মত তাকিয়ে শুধু সূচনার হাসি দেখতে থাকে। হাসিতে দাত মুক্ত দানার মত চমকাতে থাকে, গাছের ফাঁক দিয়ে একটু সূয্যর্ের রশ্মি এসে পড়ে সূচনার লাবন্যময়ী মুখে। এই লাবন্য মুখ খানি দেখে সাগর বলে উঠে-
"চাঁদ চেহারা তোমারি প্রিয়া
আঁখি দু'টি গড়া
বিজলী দিয়া,
নয়নের একক চাহ্নীতে
স্বাদ জাগে মরে যেতে"
24/10/97ইং তারিখে সাগর তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছে। এক বন্ধু বলছে আচ্ছা সাগর তুই যে সূচনাকে এতো পছন্দ করিস, সুচনা কে? সাগর চিৎকার করে বলে- ঝড়পযড়হধ রং সু ংবিবঃ ষড়াবৎ. (সূচনা আমার মিষ্টি ভালবাসা) পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখে সুচনা সাগরের কথা শুনে স্তব্দ হয়ে দাড়িয়ে আছে, সাগর কোন দিকদিশা না পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। হায়রে প্রেম! কখনো চাপা থাকে না। খড়াব পধহ হড়ঃ নুঁ, নঁঃ রভ ভষধংয রঃ ংবষভ. এই পাগল মনের ভালবাসা প্রায় সাবাই জেনে যায়।
সাগর সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পায় স্কুলের ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন পোষাক পরে স্কুলে যাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে হঠাৎ একটু চমকে উঠে। একটি ছেলেকে জিজ্ঞাস করে- কি ব্যাপার তোমরা স্কুলের পোষাক না পড়ে স্কুলে যাচ্ছো। ছেলেটি বলল- ভাইয়া আজকে আমাদের স্কুলে একটা অনুষ্ঠান হবে। অনুষ্ঠানে অনেক রকম মজা হবে, আপনার দাওয়াত। সাগর ভাবছে তার হাতে তেমন কাজ নেই, ঠিক করেছে সে স্কুলে যাবে অনুষ্ঠান দেখার জন্য। পাশের বাড়ীর এক বন্ধু ইসলামকে নিয়ে স্কুলে যায়। স্কুলে গিয়ে দেখে, মেয়েরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন ভাবে সাজছে, সূচনাকে দেখা যাচ্ছে। সূচনা অনুষ্ঠানে অভিনয় করার জন্য স্কুলের সাথে একটি দোকানে গিয়ে কিছু কাঁচের চুড়ি কিনে। সাগর তার পেছনে পেছনে গিয়ে চুড়ির দাম দোকানীকে দিয়ে দেয়। সূচনা চুড়ি পড়ে দোকানীকে গিয়ে বলে এই নিন আপনার চুড়ির দাম। দোকানী বলে আপনার চুড়ির দাম একটি ছেলে এসে দিয়ে গেছে। সূচনা বলে - কে সেই মহামানব? দোকানী বলে- ঐ যে নীল সার্ট পড়া যে ছেলেটি ঝালমুড়ি খাচ্ছে, ঐ ছেলেটি। তাকিয়ে দেখে, সাগর তাই আর কিছু না বলে হাটতে থাকে। চুড়ি পড়ায় সুচনাকে খুব সুন্দর লাগছে। সাগরের স্বপ্নের আঁকা "তুমি অর্ধেক কল্পনা আর অর্ধেক মানবী"র মত। হঠাৎ করে মনে হল আকাশ থেকে একটি ডানাকাঁটা পরী হেটে যাচ্ছে। তার প্রত্যেকটি পদধুলি মনে করছে এই ডানা কাঁটা পরীর স্পর্শে মাটি রূপে জন্ম নেয়াটা স্বার্থক। সাগর সেই ধুলি হাতে নিয়ে বলে - হে মাটি তোর জীবন স্বার্থক, তোর উপর আমার প্রিয়ার পা পরেছে। আমি যদি তোদের সঙ্গী হতে পারতাম তাহলে আমার প্রিয়া আমার বুক স্পর্শ করত। পৃথিবীতে আমার আর চাওয়ার কিছুই থাকতো না। এই অকৃতিম ভালবাসার পাগলটিকে দেখে সূচনার এক বান্ধবী মৃত্তিকার চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারল না। তাই সাগরের এই পাগলামীর কথা সূচনাকে জানায়। সূচনা বলে মৃত্তিকা তুমি জাননা ও আমাকে সারান জ্বালাতন করে এবং সব সময় আমাকে ওর চোখে চোখে রাখে। রাত দু'টা পর্যন্ত আমাদের বাড়ীর সামনে সময় কাটায়। এমন সময় সূচনার ডাক আশে অভিনয় করার জন্য, সূচনা চলে যায়। মৃত্তিকা সাগরের অকৃতিম ভালবাসা দেখে ভাবে সাগরের মতো যদি কেউ আমাকে একটু ভালবাসতো তাহলে ওর জন্য আমি আমার জীবনটাই উৎসর্গ করতাম।
সূচনা কাসের প্রথম বলে নিজেকে নিয়ে একটু হিংসা করত। সবসময় লেখা-পড়া আর বাবা মার কথা মতো চলাফেরা করত। কাসের কোন ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে বাজে কথা না বলে বই পড়ে সময় কাটাতো । সূচনার বাবা একটু কড়া লোক, তাই তাকে জমের মত ভয় পায় সূচনা। বাবার কথা মনে হলে সারা শরীরে কাঁপন উঠে যায়। এই অবস্থায় অন্যকিছু সূচনা কল্পনাও করতে পারেনা।
দুপুর বেলায় আকাশটা মেঘে ডেকে যাচ্ছে। সাগর গোছল করার জন্য পুকুের আসে। পুকুরটি ছিল অনেক বড়। পুকুরের ওপারে একটি মেয়েকে গোছল করতে দেখা যাচ্ছে। এমন সময় শুরু হয় বৃষ্টি। বৃষ্টিতে ভিজে সূচনা গোছল করছে। হঠাৎ বৃষ্টি সাথে সাথে বড় বড় ঢিল আকারে শিল পড়ছে। একটা শিল যদি সূচনার মাথার উপর পড়ে তাহলে মাথা ফেঁটে রক্ত বের হবে। সূচনাকে হাত ইশারায় বার বার পুকুর থেকে উঠে ঘরে যেতে বলছে, কিন্তু সূচনা সাগরের কথা বুঝতে পারছেনা। সাগর আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে- হে শিল তুমি আমার প্রিয়ার মাথার উপর পরোনা, সূচনা কষ্ট পাবে। সূচনার কষ্ট দেখে আমি সহ্য করতে পারবোনা। জানালা থেকে সাগরের চাচাতো ভাই চেচিয়ে বলছে সাগর তোর মাথা ফেঁটে গেছে, সেদিকে সাগরের কোন খেয়াল নেই। শুধু সুচনার জন্য গলাকাটা মুরগীর মত ছটফট করছে। হঠাৎ পানির দিকে তাকিয়ে দেখে পানির উপরে লালাভাস দেখা যাচ্ছে তার উপর মাথায় কেমন যেন একটা ব্যাথা অনুভব করতে লাগল। মাথায় হাত দিয়ে দেখে অনেকটা কেটে গেছে। পুকুরের ওপার তাকিয়ে দেখে সূচনাকে আর দেখা যাচ্ছেনা। মাথায় হাতদিয়ে পুকুর থেকে উপরে উঠে। চাচাতো ভাই সিমুল বলে- আরে তুই পানিতে দাড়িয়ে সূচনার জন্য চিন্তা করছিস্, এদিকে তোর মাথা ফেটে গেছে সে দিকে কোন খোয়াল নেই। সাগর বলে- সিমুল আমার মাথা শিল পড়ে যদি সব রক্ত বের হয়ে যায় তাহলে আমি সহ্য করতে পারব, কিন্তু সুচনার শরীর থেকে যদি এক ফোঁটা রক্ত বাহির হয় তাহলে তা আমি সহ্য করতে পারব না। সাগরের কথা শুনে শিমুল বুঝতে পারে সূচনার জন্য সাগরের গভীরতা কতটুকু। সাগর আর সূচনার ভালবাসার পরীা করার জন্য সূচনাকে গিয়ে বলে- সূচনা! সাগর তোমাকে পছন্দ করে না। আমার সামনে তোমাকে গালি দিয়েছে। তোমার ছায়া দেখাও বলে ওর জন্য পাপ। জীবনে অনেক বড় ভূল করেছে তোমার মত এক ডাইনীকে ভালবেসে। তুমি যদি তোমার মায়ের এক ফোঁটা বুকের দুধ খেয়ে থাকে তাহলে কাল বিকেলে ঝিলের ধারে যেও। আর যদি না যাও তাহলে সাগর ভাববে তুমি এক নাগিনী এক নষ্টা নারীদের একজন। সূচনা শিমুলের কথা শুনে বলে- ঐ পাজি ছেলেটা আমাকে কি পেয়েছে। আমি কাল যাবো, আমি যদি না যাই তাহলে আমার নারীত্বের উপর একটা অভিশাপ সারা জীবন আমাকে বহন করতে হবে।
এই সুযোগে সিমুল আবার সাগরকে গিয়ে বলে- সাগর আমি সূচনাকে তোমার জন্য অনেক অনুরোধ করেছি কিন্তু সূচনা আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে এবং বলেছে ঐ রকম বদমাইস ছেলেকে আমি কখনো ভালবাসবোনা। এই রকম কত আজে বাজে ছেলে আমার পেছন গুর গুর করে, আমি পাত্তা দেইনা। ঐ শয়তান ছেলেটা আমার জীবনকে ছারখার করে ফেলেছে। ওর বুকের ভেতর যদি কোন সৎ-সাহস থাকে তাহলে কাল বিকেলে ঝিলের ধারে আমার সাথে যেন দেখা করে, না হলে আমি ভাববো ও একটা সত্যিকারের কা-পুরুষ। সাগর এই কথা শুনে তার বুকের ভেতর তিলে তিলে গড়ে উঠা যে ভালবাসার কষ্টি পাথরটি ছিল তা তাসের ঘরের মত চুরমার হয়ে যাচ্ছে। সাগর বলে আমি যাব! আমার সম্পর্কে কেন ওর এতো খারাপ ধারণা ওকে জিজ্ঞেস করব।
পরের দিন বিকেলে দু'জনই ঝিলের ধারে আসে। সাগর সূচনার দিক তাকিয়ে দেখে সূচনার মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে। কোন কথা বলেনা। এদিকে সাগরের বুকে তুষের আগুন জ্বলছে। এক ঘন্টা হয়ে গেছে কেউ কারো সাথে কথা বলেনা। পরে বাধ্য হয়ে সাগর বলে- কেমন আছ? সূচনা বলে- কেন আমাকে দেখতে কি তোমার খারাপ লাগছে। সূচনার কথা শুনে সাগর ভয়ে আর কোন কথা বলেনা।
সূচনা- এই ছেলে ! মেয়েদের সম্পর্কে তোমার ধারণা কি?
সাগর- পুজাঁর ফুলের মত।
সূচনা- আচ্ছা! আমি জানি ফুল দিয়ে পুঁজা হয় দেবতার কিন্তু তুমি আবার কবে থেকে ডাইনীকে ফূলদিয়ে পুঁজা শুরু করলে।
সাগর- যে দিন থেকে দেবতার পুঁজা দিতে গিয়ে কা-পুরুষের অপবাদ মাথায় নিলাম সে দিন থেকে।
সূচনা- নেকামী বাদ দাও, বল কেন আমাকে ঝিলের ধারে আসতে বলেছিলে।
সাগর- আমি তোমাকে খবর দিয়েছি ?
সূচনা- ব্যাস, তোমাকে আর কিছু বলতে হবেনা, আমি বুঝে গেছি, সব বুঝে গেছি। তোমাকে একটা কথা বলি নিজের মন থেকে এই সব কুৎসিত চিন্তা ভাবনা ঝেড়ে ফেলে নারীজাতিকে ভালবাসতে শিখ। তোমার ঘরে মা-বোন নেই। তাদের ভালবাসতে চেষ্টা কর, তাহলে একদিন তুমি সত্যিকারের মানুষ হতে পারবে। আমি তোমাকে জ্ঞান দিচ্ছিনা কারণ তুমি আমার তিন বছরের সিনিয়র। সূচনার কথাগুলো শুনে দু'চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা লোনা জলে সূচনার চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখে।
সূচনার কথা শুনে সাগর বাসায় যায়, বাসায় যাওয়া মাত্রই সাগরের মা জিজ্ঞেস করে- সাগর কোথায় গিয়েছিলে।
সাগর-ঝিলের ধারে।
মা- ঝিলের ধারে, কেন গিয়েছিলে?
সাগর- ঘুরতে,
মা- ঘুরতে !...... নাকি সূচনার সাথে দেখা করতে!
সাগর মায়ের দিকে হা....... করে তাকিয়ে আছে কোন কথা বলেনা। মা আবার বলে- তুমি কি সূচনাকে ভালবাস? সাগর- ইয়ে মানে ইয়ে।
মা- কিসের ইয়ে মানে ইয়ে, আমার কথার সঠিক উত্তর দাও? সাগর সাহসের পরিচয় দিয়ে বলে হ্যাঁ আমি সূচনাকে ভালবাসি। এই কথা শুনে এক চড়ে হাতের পাঁচটি আঙ্গুল বসিয়ে দেয় সাগরের গালে। বাবা বলে- আমি ভাবতে পারিনী তোমার মতো একজন মেধাবী ছাত্র লেখা পড়া শেষ না করে মেয়েদের ভালবাসায় মগ্ন হয়ে যাবে। তুমি একজন গ্রাজুয়েট ছাত্র, তোমার বর্তমানে লেখা পড়ার চাপ একটু বেশি, তা বাদ দিয়ে তুমি আছ রং ঢং নিয়ে। আমি তোমাকে শেষ বারের মতো বলছি তুমি বাজে নেশা বাদ দিয়ে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার চেষ্টা কর। আমি আর কোনদিন তোমার নামে যেন খারাপ রির্পোট না শুনি।
তিন/চার মাস হয়েগেছে সূচনার নানু ঢাকায় এসেছে ডাক্তার দেখানোর জন্য। তার শরীরের অবস্থা তেমন একটা ভাল নেই, বয়স হয়েছে তার উপর আবার শীতকাল। এই কণকণে শীতে চারদিকে অনেক লোক মারা যাচ্ছে। নানু সূচনাকে ডেকে বলে- সূচনা তোমাকে একটা কথা বলি- আমি বৃদ্ধা মানুষ, কখন উপরের ডাক এসে পড়ে জানিনা। শেষ বেলায় তোমাকে একটা কথা বলে যাই " এই পৃথিবীতে দুটি জিনিস কাউকে দিলে কখনো ফেরত নিবেনা, প্রথমটা হল মন, দ্বিতীয়টা হলো কথা", তোমার বয়স অল্প তাই আমার এই কথা তোমার ভাল লাগবেনা, পরবতর্ীতে শুধু আফসোছ করতে হবে। এটা আমার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।
সাগর তার বন্ধু সংগ্রাম, আর নিজুম কে নিয়ে বিকেলে হাটছে। হঠাৎ কিছু লোক একটি কফিন বঙ্ নিয়ে সূচনাদের বাড়ীর দিকে যাচ্ছে। সাগর ঐ লোকদের বাড়ীতে যেতে দেখে তাদের পিছু পিছু বাড়ীর ভেতর ডুকে, ভেতরে ডুকে দেখে সবার চোখে পানি। কাঁদতে কাঁদতে সূচনার চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে। ঘরের ভেতর গিয়ে দেখে সাদা চাদরে জড়ানো কাকে যেন শুয়ে রেখেছে। চাদরের মুখ খানি খুলে দেখে সাগরের কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে। কোথায় যেন সাগর তাকে দেখেছে। হঠাৎ সাগরের মনে পড়ে একদিন সাগর বাসে চড়ে বাড়ী ফিরছিল হঠাৎ এই বৃদ্ধা বাস ষ্ট্যান্ড থেকে কিছু দুরে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করতে থাকে। সাগর সহ তার কয়েক বন্ধু মিলে ঐ ডাকাতদের উপর ঝাপিয়ে পরে। ঐ বৃদ্ধাকে বাঁচাতে গিয়ে সাগর ছুরির আঘাতে আহত হয়। বৃদ্ধা নিজের আঁচল ছিড়ে ডান হাতের আঘাত স্থানটি ভালভাবে বেধে দেয় যাহাতে সহজে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়। বৃদ্ধা বলে- এই ছেলে! তোমার সাহসতো কম না, ডাকাতের কথা শুনে সবাই ভয়ে পালিয়ে যায় আর তুমি নিজের জীবন বাজি রেখে আমাকে কেন বাচাঁলে, আমি কে? সাগর বলে- আজ যদি আমার দাদী বেঁচে থাকতো যদি সে তোমার মতো বিপদে পরতো তাহলে আমি কি তাকিয়ে তাকিয়ে তা দেখতে পারতাম?
বৃদ্ধা- কে বলেছে তোমার দাদী বেঁচে নেই। আজ থেকে মনে কর তোমার দাদী আছে। বৃদ্ধা দাদী কৌতুহল করে বলল- আচ্ছা তুমি যদি এখন মরে যেতে।
সাগর- আমি আমার দাদীকে নিজ হাতে কবর না দিয়ে মরব কেন? সাগরের কথা শুনে দাদী সাগরকে বুকে জড়িয়ে নিল। তখন দাদীর অভাবটা সাগর একটু অনুভব করতে লাগল। সূচনার নানু-ই হচ্ছে সাগরের দাদী। দাদীকে কাফনে জড়ানো দেখে সাগর চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারে না। কামাল সাহেব যে সাহসী ব্যাক্তিত্বের পরিচয়ের কথা শ্বাশুরির কাছ থেকে শুনেছে সে সাগর ছাড়া আর কেউ হতে পারে না ভেবে সাগরকে বুকে নিয়ে কেঁদে ফেলে। কামাল সাহেব বলে- তোমার কথা আমি তোমার দাদীর মুখে সব শুনেছি। তোমাকে আরেক বার দেখার সাধ ছিল কিন্তু তার মনের সেই আশা আর পুরণ হলো না। তুমি আমাদের গ্রামের বাড়ীতে চল তোমার দাদীকে নিজ হাতে কবর দিতে। কামাল সাহেবের কথা কিছুতেই ফেলতে পারল না, তাই বাধ্য হয়ে রাজী হয়ে গেল। দাদীর গ্রামের বাড়ী ছিল ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার শেষ মাথায় ত্রিপুরার কাছাকাছি। সাগর একটি পিক-আপ ভ্যান ভাড়া নেয়। দাদীকে কফিন বঙ্ েভরে পিক-আপের উপর তুলে। সাগরের সাথে সাগরের দুই বন্ধু নিজুম, সংগ্রাম। কামাল সাহেব কফিন বঙ্রে পাশে চাটাইয়ের উপর বসে পড়ে। সূচনা আর মা সামনে ড্রাইভারের সাথে বসে। আলাহর নাম স্মরণে গাড়ী ছাড়া হয়। বাতাসের গতিতে গাড়ী চলতে থাকে, 1 ঘন্টা গাড়ি চলার পর গাড়ী থামিয়ে দিয়ে ড্রাইভার বলছে ভাই গাড়ী আর যাবে না। কামাল সাহেব বলছে- কেন যাবে না? ড্রাইভার- রাস্তায় কারখানার শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছে। তাই এই রুটে তারা আজ কোন যানবাহন চলতে দিবেনা বলে রাস্তার উপর বড় বড় গাছ কেটে ফেলে রেখেছে। কামাল সাহেব এই মৃতদেহটি নিয়ে এখন কি করবে কোন উপায় খুঁেজ পাচ্ছে না। সাগর বলল- আংকেল ঐতো সামনে কিছু লোক দেখা যাচ্ছে; চলেন ওনাদের কাছে গিয়ে একটা উপায় খুঁজে বের করি। গাড়ী থেকে নেমে কামাল সাহেব বলে- এই যে ভাই, আমরা একটু বিপদে আছি, আজকের মতো আমাদের গাড়ীটা একটু ছেড়েদিন। শ্রমিদের মাঝে থেকে এক শ্রমিক বলে- অ মিয়া দেখতেপান না আইজকা আমরা রাস্তায় ধর্মঘট ডাকছি; আমাদের দাবী না মানলে কোন গাড়ী ছারমুনা। সাগর বলল - ভাই আপনাদের সুবিধার জন্য আমাদের গাড়ী আটকিয়ে রেখেছেন কিন্তু আমাদের সুবিধার জন্য বলতে পারেন কার কাছে যাব। এমন সময় শ্রমিকদের লিডার এসে বলে-এখানে এতো কথা কিসের। সাগর বলে- ভাই আমাদের গাড়ীতে একজন মৃতব্যক্তির লাশ আছে। আমরা অনেকন পর্যন্ত এই মৃতদেহ নিয়ে বসে আছি। আজকে যদি আপনাদের এই বিপদ হতো তাহলে আপনারা কি করতেন? সাগরের কথা শুনে লিডারের মন নরম হয়ে যায় এবং বলে ঠিক আছে আমরা আপনাদের গাড়ীটা ছেড়ে দিচ্ছি। গাড়ীর সামনে একটি লাল নিশান লাগিয়ে নিন। রাস্তায় যদি আপনাদের কোন শ্রমিক আটকায় তাহলে আমার এই কার্ড দেখাবেন বলেই শ্রমিকদের বলে এই গাড়ীটার জন্য রাস্তা পরিস্কার করে দিতে। গাড়ী আবার ছাড়া হলো, রাস্তা সম্পূর্ণ ফাঁকা। আশে পাশের দোকান গুলো বন্ধ আছে। গাড়ীতে সবাই যেন এক আতংকের মধ্যে আছে, এই বুঝি কেউ বোমা মারল মারল ভাব। গাড়ী 2/3 ঘন্টা চলারপর গাড়ীর রাস্তা শেষ পর্যায়। সামনে বিশাল মেঘনা নদী। এই মেঘনা নদী পাড়ি দিতে প্রায় 2 ঘন্টা সময় লাগবে। ট্রলার ছাড়া এখানো বিকল্প আর কোন রাস্তা নেই। লাশটা কাঁেধ করে গাড়ী থেকে নামায়। মেঘনা নদী পারি দিতে একটি ট্রলার ভাড়া নেয়, বিকেল হয়ে যাচ্ছে ট্রলার তার ইঞ্জিনের সাহায্যে চলতে থাকে। নদী পথে ভ্রমনটা একটু সবার ভাল লাগছে। সাগর সূচনার দিকে তাকিয়ে দেখে সূচনা বোবা, মূর্তির মত বসে আছে। তার মাথার কেশ বাতাসের সাথে দুষ্টুমী করতে করতে হঠাৎ উড়ে আসে লাবন্যময়ী মুখের উপর, হাতের স্পর্শে সে গুলো যায়গা মত উঠিয়ে দেয়। সূচনার এই অমাইক দৃশ্য দেখতে সাগরের ভাল লাগছে। এই মনোরম পরিবেশে সাগরের গলা ছেড়ে গান গাইতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু সামনে একটা প্রানহীন ব্যাক্তির লাশ, সে জন্য এটা আনন্দের দেয়াল হয়ে দাড়িয়েছে। বাতাসের গতি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। মেঘনার ঢেউ ভয়ংকর আকার ধারণ, মনে হচ্ছে এযেন মেঘনা রাসীর আসল রূপ । আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে বৃষ্টি হওয়ার আশংকা, বাতাসের গতিতে মাঝি হালধরে রাখতে পারছেনা। ভয়ে সবার গা শিরশির করে উঠছে। ট্রলারটি নদীর মাঝখানে, চারদিকে তাকিয়ে দেখে নদীর কোন কুল কিনারা দেখা যায়না। এমনেতেই রাস্তায় অনেক বিপদ পেড়িয়ে নৌ-অভিজানে একটু স্বস্তি ফিরে পেয়েছে বলে মনে করে ছিল। কিন্তু জমদুত সবসময় মাথার উপর তারা করে যাচ্ছে, এবার আর রা নেই। সূচনার দিকে তাকিয়ে দেখে ছোট চড়াই পাখির মতো মায়ের আচঁল ধরে ভয়ে ভয়ে কাপঁছে। সাগর ভাবে শেষ চেষ্টা করে দেখা যাক। সাগর সূচনার এই অবস্থা দেখে কাছে গিয়ে বলে তোমার লাল ওরনাটা একটু আমাকে দাও। সাগরের দিকে তাকিয়ে সূচনার তার ওরনাটা দিয়ে দেয়। ওড়নাটি নিয়ে বাঁশের সাথে ভালভাবে বেঁেধ ঘুরাতে থাকে। এভাবে অনেকন বাঁশ দাড়িয়ে ঘুরানোর পর দূর থেকে একটা সপ্রীড বোট বুঝতে পারে তারা বিপদে পড়েছে, তাদের উদ্ধার করার জন্য ট্রলারের কাছাকাছি আসে। সপ্রীড বোট দেখে সবায় বাচাঁর একটি অবলম্বন খুঁেজ পেল। এই সপ্রীড বোটের সাহায্যে তাদের 1ঘন্টার রাস্তা প্রায় 10 মিনিটে পৌঁেছ দেয়। মেঘনার পার নেমে ক্যাপ্টিনকে টাকা নেয়ার জন্য অনুরোধ করে। ক্যাপ্টিন বলে- এই নদীতে মানুষদের সুবিধা অসুবিধা দেখার জন্য প্রতি মাসে সরকার যা বেতন দেয় তা দিয়ে আমাদের বেশ ভাল ভাবে চলে যায়। সবাই ক্যাপ্টিনকে ধন্যবাদ দিয়ে আবার রওনা হয় গ্রামের দিকে।
সাগর, নিজুম আর সংগ্রাম এবং কামাল সাহেবসহ কফিন বঙ্টি কাদে তুলে নেয়। সারা দিনের জার্নিতে একে বারে কান্ত হয়ে পড়ছে বিধায় শরীর একে বারে কাতর হয়ে গেছে। তার উপর কফিন বঙ্টি কাদের উপর। বৃষ্টির আশংকা যা ছিল তা মুটামুটি এখন কেটে গেছে বললেই চলে। চারদিকে ঘন অন্ধকার হয়ে আসছে, খোলা মাঠের উপর দিয়ে কফিন বঙ্ নিয়ে চলছে কিছু পথিক, সাগরের কাছে বার বার মনে হচ্ছে কফিন বঙ্টি বেশি বেশি ভার। মুরুব্বীদের মুখে কুসংস্কার একটি কথা, যখন কোন লাশ কাঁধে নেওয়া হয়, তখন ঐ লাশটি মাঝে মাঝে নিচের দিক ভার হতে থাকে, এই পরিস্থিতে তার মনে হচ্ছে যে কথা গুলি তার কাছে কুসংস্কার মনে হতো তা বাস্তবে আজ পরিনত হচ্ছে।
কামাল সাহেব খারেড়া ষ্টেশনে পৌঁছার পর বলল- বাবারা গায়ের পথ একটু দুরেই হয়, তোমরা সারা দিন কোন খাওয়া দাওয়া কর নাই। কফিন বঙ্টি নামিয়ে একটু খাওয়া দাওয়া করে নেও। কফিন বঙ্টি বাজারের সামনে রাখে, সাগর একটি দোকানে গিয়ে দেখে মুড়ি-চানাচুর ছাড়া খাবারের কোন কিছু নেই। গ্রাম অঞ্চল তাই শহরের মতো এত আধুনিকের ছোঁয়া এখনো পৌঁছায়নি। দোকানীকে জিজ্ঞেস করে- আচ্ছা ভাই এখানে কোন ভাতের হোটেল আছে। দোকানী বলে- ভাই সারা দিনে মাত্র 100/150 টাকা বেচা কিনা করতে অসুবিধা হয়ে যায় তার উপর ভাতের হোটেল! এখানে! প্রশ্নই আসেনা। সাগর নিরুপায় হয়ে দোকান থেকে কিছু মুড়ি চানাচুর কিনে নিয়ে যায়। মুড়ি নিয়ে বলে এই বাজারে আর কিছু পাওয়া গেলনা আপনারা এইগুলি খেয়ে ুদা কিছুটা নিবারণ করে নিন। সবাই খাচ্ছে কিন্তু সূচনা খাচ্ছে না। সূচনাকে জিজ্ঞেস করে তুমি খাবেনা, সূচনা বলে- আমার ুদা নেই। সূচনার চেহারার দিক তাকিয়ে দেখে সূচনাও ুদায় একে বারে কাতর হয়ে আছে। কিন্তু কিসের উপর অভিমান করে খাচ্ছে না, ভেবেই পাচ্ছে না। সাগর মনে মনে ভাবছে এখানে তার উপস্থিতি সূচনার মনে হয় পছন্দ নয়। সূচনা খাবেনা বলে সাগরও পণকরে বসে আছে খাবেনা। নিজুম বলে সাগর তুমি খাবেনা? সাগর ঃ তোরা খা, আমার ুদা নেই, সাগরের কথাশুনে সূচনা নির্বোদের মত তাকিয়ে আছে সাগরের দিকে। এমন সময় কামাল সাহেব বলছে বাবা গ্রামের পথ চল রওনা দেওয়া যাক, আবার কফিন বঙ্টি কাধে তুলে নেয়। গাঁয়ের পথ দিয়ে হাটছে, চারদিক ধানতে তার উপর গা থেকে শিশিরের মত গাম বাহির হচ্ছে। নিরব নির্জন এলাকা বলে মনে হয় সবাই গ্রামের প্রতিটি ঘরের দরজায় খিল দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত বাজে 12টা, ঘড়ি দেখে কামাল সাহেব কে জিজ্ঞেস করে আংকেল আপনাদের গ্রামটা আর কতদুর। কামাল সাহেব- ঐ যে দুরে মিট মিট আলো জ্বলছে ঐ গ্রামটাই আমাদের হাটতে হাটতে হঠাৎ চোখে পড়ে বাঁশ ঝাড়ের উপর, গ্রামের পথটি হচ্ছে ঐ বাঁশ ঝাড়ের মধ্যদিয়ে, বাঁশ ঝারের কতগুলি বাঁশ রাস্তার উপর নুয়ে পড়েছে, শহরের ছেলে এই অবস্থা দেখে খুব আতংকিত হয়ে যায়, এই বাশ ঝাড়ের গল্প সাগর অনেক শুনেছে। গভির অন্ধকার রাতে বাশ মাটিতে শুয়ে পড়ে, আজ তা নিজের চোখে দেখে সংগ্রাম নিজুম এবং সাগরের গাঁ শিরশির করে উঠে, সূচনা দৌড়ে গিয়ে বাশ গুলি হাতদিয়ে স্পর্শ করতেই বাশগুলো দাড়িয়ে যায়, কফিন বঙ্ নিয়ে নামালো সূচনাদের বাড়ীতে। পর্শিরা মৃতু্যর খবর পেয়ে এই গভির রাতে ছুটে আসে সূচনাদের বাসায়, লাশ দেখে আবার কান্নার লোল পড়ে গেল, সূচনার ছোট চাচী সাগরদের বিশ্রাম করার জন্য বাংলা ঘরটি খালি করে দিল। সবাই এতটা পথ আসতে আসতে কান্ত হয়ে পড়ে, খাটেতে বিশ্রাম নিতে নিতে ঘুমিয়ে পড়ে, গ্রামের মুরুব্বীরা বলছে এই লাশ কাল দাফন করা হবে, তা ছাড়া রাত বাজে 3টা এখন কবরস্থানে গোরখোদার লোক পাওয়া যাবেনা।
শেষ রাতে ভোর 4টার সময় সাগরের প্রকৃতির ডাক এসেছে। তাকিয়ে দেখে বাড়ীর সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে লাশের সামনে কয়েক জন মুরুব্বী আর সূচনা ছাড়া কেউ নেই। সাগর কাকে জিজ্ঞেস করবে বাথরুম কোথায়। এই দিকে তার অবস্থা নাজেহাল, বাথরুমের চাপে শরীর থেকে ঘাম বাহির হচ্ছে। ঘন অন্ধকার বিদু্যতের কোন ছোঁয়া নেই। নিরুপায় হয়ে বারান্দায় এক খুঁটি ধরে দাড়িয়ে আছে। পাশের বাড়ীর এক মেয়ে আসে লাশ দেখার জন্য, চারদিকে পাখির কিচির মিচির শব্দ, কিছু লোক আসে গোরখুদার জন্য, সাগর আর সহ্য করতে পারছেনা। তার চোখ মুখ লাল হয়ে যাচ্ছে। সব লজ্জা ভয় ত্যাগ করে ঐ মেয়েটিকে ডাকে- এই যে শুনুন, দয়া করে বলবেন কি আপনাদের বাথরুমটা কোথায়। মেয়েটি সাগরের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে সে অনেক বিপদে আছে। তাই নিজেই একটি বদনাতে পানি ভরে বাথরুমটি দেখিয়ে দেয়। বাথরুম থেকে বের হয়ে ঐ মেয়েটিকে একটি ধন্যবাদ দিবে ভাবছে, তাকিয়ে দেখে মেয়েটি নেই। চারদিকে সূয্যর্ের আংশিক অংশে প্রায় সকাল হওয়ার পথে। নিজুমের ুদায় মাথা ঘুরছে কি করবে বুঝতে পারছেনা, মরাবাড়ী কেউ কোন খোঁজ খবর নেবার নেই। সাগর আর ঘুমাবেনা। তাই গ্রামের পথ একটু হেটে দেখছে, হঠাৎ চোখে পড়ে তালের রস, গাছটি বেশি উচু নয়। ুদা নিবারনের এই একটি উত্তম বুদ্ধি খুঁজে পায়, গাছ থেকে ঘটি নামিয়ে তালের রস খেতে শুরু করে। এতো মিষ্টি রস সে আর কোন দিন খায়নি। একটু পরে অনুভব করতে থাকে তার চারদিকে পৃথিবীটা ঘুরছে। দূর থেকে দেখেই সূচনা বুঝে ফেলে সাগর কি কান্ড ঘটিয়েছে। একটি লুঙ্গী হাতে দিয়ে বলে এই নিন সামনে পুকুর আছে গোছল শেরে আসুন। সাগর সূচনার কথা মতো গোছল শেষ করে বাড়ীতে ফিরে আসে। সবাই তৈরী হচ্ছে লাশ দাফন করার জন্য সাগর ঘুম থেকে নিজুম সংগ্রামকে ডেকে তুলে। কবরস্থানে লাশ দাফন করে বাড়িতে আসে সবাই। বাড়ীতে আশামাত্রই সূচনার এক চাচা বলে- বাবারা তোমরা আমাদের বাসায় এসে খাওয়া দাওয়া করে যেও, তোমাদের জন্য খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চাচার একমাত্র মেয়ে রাত্রি। রাত্রি দেখতে যেমন সুন্দরী ঠিক তেমনই লাবণ্যময়ী। রাত্রি সবাইকে খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে আপ্যায়ণ করে।
রাত্রি বলে- ভাইয়ারা আপনারা খাওয়া দাওয়া করে এখন বিশ্রাম করেন। বিকেলে আপনাদেরকে আমাদের এই সুন্দর গ্রামটা ঘুরে দেখাব। খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই ঘুম।
বিকেল বয়ে যায়, রাত্রি এসে ডাকে। রাত্রির ডাকে সবার ঘুম ভেঙ্গে যায়, হাত মুখ ধুয়ে রওনা হয় গ্রাম দেখার জন্য। গ্রামের পরিবেশটা শহরের পরিবেশের চেয়ে একটু ভিন্ন। রাত্রি বলে- সাগর ভাই চলে আজ আপনাদের হিন্দু সমপ্রদায়দের শ্রী শ্রী মা আনন্দময়ী আশ্রমে নিয়ে যাব, নিজুম বলে- আনন্দমীয়র অনেক গল্প শুনেছি, আজ নিজের চোখে তা দর্শন করব। আনন্দময়ী আশ্রমে একজন খাদেম আছে, সবার কাছে সেই খাদেম দাদু নামে পরিচিত। দাদু এমন একজন ব্যক্তি যা ইতিহাসের পাতায় এক স্থান পাবে, তার ব্যক্তিত্বে মধ্যে সর্ব প্রথম হল কখন তার চুল দাড়ী গোফ কাটাইনি। মানব জাতির জন্য এটি বড় ধরনের ত্যাগের মহিমা। তার আর অনেক ব্যক্তিত্ব আছে যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। রাত্রি বলল- দাদু আমরা একটু ভেতর যাবো। দাদু অনুমতিতে সবাই আশ্রমের ভেতর ডুকে। আশ্রমের ভেতর আনন্দময়ীর অনেক স্মৃতি স্ব-যত্নে তুলে রাখা হয়েছে। আশ্রমের বাহিরে একটি ঘর সেখানে লেখা- এই মন্দিরের সামনে দাড়িয়ে যে যা চাইবে তার মনের আশা পুরাণ হবে। সাগর মন্দিরের সামনে গিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে শুধু সূচনার ভালবাসা চাইল। রাত্রি বলে কি ব্যাপার সাগর ভাই এখানে দাড়িয়ে আপনি কি প্রার্থনা করলেন। সাগর- আমার বুকের ভেতর যে প্রানটির জন্য হা হা কা.....র ছিল তাই চাইলাম। রাত্রি সাগরের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখে তার চোখের ভেতর সাগরের ঢেউয়ের মত বারবার ঢেউ দিচ্ছে। কি যেন অজানা কষ্টে বাধ ভেঙ্গে শ্রুত বাহির হতে পারচ্ছে না। পরে রওনা হলো কল্যাণ সাগরের দিকে। এই সে কল্যাণ সাগর, যে সাগরে মানুষ হাত পা ধুয়ে এবং গোছল করে জীবনের সকল অ-কল্যাণ দুর করতে আসে। কল্যাণ সাগরটি অনেকটা বড় কিন্তু এটা একটা দীঘির নাম। সাগরের যেমন কোন কূল কিনারা নেই। তেমন কত মানবজাতির কল্যাণ বয়ে এনেছে এই কল্যান সাগর তা হিসাব করে বলা যাবে না। তাই তার নাম অনুসারে নাম রাখা হয় কল্যাণ সাগর। কল্যাণ সাগরে সবাই হাত-মুখ ধুয়ে অকল্যাণ দূর করেনিল। সন্ধ্যা গড়িয়ে আসছে, নিজুম বলে সাগর চল বাসায় যাওয়া যাক। রাত্রি বলে- আমাদের আরো একটা জিনিস দেখার বাকি রয়েছে, ভারত সিমান্তে কমলা সাগর। যে কমলা সাগরের নাম শুনে অনেক বাঙ্গালী আসে দেখতে। সাগর বলল- ঠিক আছে কমলা সাগরটা একটু দেখেই যাই। কমলা সাগরের সামনে যেতেই বি,এ,সি সাহেব (ওহফরধ অৎবধ ঝবপঁৎরঃু) সামনে পরে তাই ক
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×