somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম দর্শন/ধর্মের ইতিবৃত্ত-৪ ও শেষ

১১ ই অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[কোরানগ্রন্থের উপর যাদের ঈমান নেই বরং ২ নম্বরী হাদিছ-ফতোয়া ভিত্তিক; তাদের এ প্রতিবেদন না পড়াই উচিত!
যাদের অন্ধ নড়বড়ে ঈমান, টোকাদিলে খসে পড়ার আশংকা আছে, তাদের এ ব্লগে না ঢুকাই শ্রেয়]

বস্তু, অবস্তু, জড় বা জীব প্রত্যেকেরই এই সূক্ষ্ম দেহ আছে। অধিকাংশ কাজ-কর্ম এই সূক্ষ্ম দেহ পূর্বে ঘটায় ; স্থূল দেহ অবিকল ও অতঃপর ঘটায় এবং এই সূক্ষ্ম দেহই জ্বিন। মূলত জ্বিন, ফেরেস্তা, শয়তান মানুষেরই ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা ও দোষ-গুণের (ছিফাত) নাম মাত্র; যেমন চোর-ডাকাত, খুনী-সন্ত্রাসী, আদর্শ-অনাদর্শ, হিন্দু, মুছলিম, ইহুদি-খৃষ্টান সকলেই মানুষ এবং সকলেই ধর্মা-ধর্ম ও জন্ম-মৃত্যুর অধীন। স্থুল ও সূক্ষ্মদ্বয় এক ও অভিন্ন, আবার দু’টি স্বতন্ত্র। স্থূল দেহের মৃত্যু মানেই সূক্ষ্ম জগতে জন্ম ; সূক্ষ্ম জগতের মৃত্যু মানেই স্থূল জগতে জন্ম। কোন্ জগতে কে কত মিনিট থেকে কতকাল থাকবে তা নির্ভর করে স্ব-স্ব চেতনা জ্ঞান, নূর বা ছোয়াব অধিকারের ওপর, অর্থাৎ নূর বা জ্যোতি দেহের ইচ্ছা বা আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল।
কোনো একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রে না পৌঁছা পর্যন্ত স্থূল থেকে সূক্ষ্ম, সূক্ষ্ম থেকে স্থূলে, জন্ম-মৃত্যুর এই চক্রজালের যাতাকলে অবিরত নিষ্পেষিত হতে হয়। অর্থাৎ জন্ম-মৃত্যুর চক্রে অবিরত ঘুরতে থাকবে। এ কথাটিই আল্লাহ-রাছুল কোরানে বেশ কয়েকবার ঘোষণা করেছেন:
১. তুলিজ্বু ল্লাইলা-হিছাব। [৩: এমরান-২৭] অর্থ: তুমিই দিন থেকে রাতে এবং রাত থেকে দিনের জন্ম দান করো। তুমিই মৃতদের মধ্য থেকে জীবিতদের টেনে বার করো এবং জীবিতদের মধ্য থেকে মৃতদের টেনে বার করো। তুমি যাকে ইচ্ছা অপরিমিত (দীর্ঘ) জীবন (নূর) দান কর।
মৃত্যু থেকেই জীবন, জীবন থেকেই মৃত্যু ; মরাগণ জীবিত হয়, জীবিতগণ মরে। এটাই প্রকৃতির জন্ম-মৃত্যুর চক্রজাল। স্পষ্টভাবে এই তথ্যটি প্রায় সাত হাজার বৎসর পূর্বে আল্লাহ-রাছুল গীতায় ঘোষণা করেছেন:
হি জাতস্য মৃত্যু: ধ্রব মৃতস্য চ জন্ম ধ্রবং ; তাষ্মাত্ ত্বং শোচীতুং ন অহর্সি” (গীতা-শ্লোক-২৭) অর্থ: যে জন্মে তার মরণ নিশ্চিত, যে মরে তার জন্ম নিশ্চিত। সুতরাং অবশ্যাম্ভাবী বিষয় তোমার শোক করা উচিত নয়।
সাধক লালন শাহ্’র বাণী
কত লক্ষ যোনি
ভ্রমণ করেছো তুমি
মানব দলে মনরে তুমি
এযে কী করিলে।

জ্যোতি জীবনদেহ: স্থুলের মধ্যে সূক্ষ্ম ও সূক্ষ্মের মধ্যে জ্যোতি বা নূর দেহ এবং এটাই ‘সে’ অর্থাৎ আল্লাহ। এই তিন দেহের সমাহারে একটি জীব বা মানুষ। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে লীন ; রূপ, স্ব-রূপ এক অভিন্ন ও অবিকল ; অথচ প্রত্যেকেই আবার স্বতন্ত্র ও ভিন্ন। এই জ্যোতিদেহের বর্ণনা আল্লাহ-রাছুল কোরানে নিম্নরূপ ইঙ্গিত দিয়েছেন:
আল্লাহু-আলীম। [২৪: নূর-৩৫] অর্থ: আল্লাহ (উপাস্য) দৃশ্য-অদৃশ্যের বস্তু-অবস্তুর জ্যোতি। তার জ্যোতির পরিচয়, যেন একটি দীপাধার, যার মধ্যে আছে একটি প্রদীপ। প্রদীপটি একটি কাচের চিমনির মধ্যে স্থাপিত ; কাচের চিমনিটি একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সাদৃশ্য ; এটা প্রজ্বলিত হয় পূত-পবিত্র জয়তুনের তেল দ্বারা, যা সৃষ্ট কোনো তেল নয়। অগ্নি সংযোগ ছাড়াই এটা উজ্জ্বল জ্যোতি প্রদান করে। জ্যোতির উপরে জ্যোতি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা এই জীবনের জীবন, জ্যোতিদেহ (আল্লাহ) সম্বন্ধে জ্ঞান দান করেন। মানুষের বোঝার জন্য আল্লাহ নানা রকমের উপমা দিয়ে থাকেন। আল্লাহ সর্ব বিষয় সর্বজ্ঞ।

সংক্ষেপে এরাই ক্ষমতাভেদে যথাক্রমে: ইনছান, জ্বীন-ফেরেস্তা, আল্লাহ; অর্থাৎ স্থূল মানুষ, সূক্ষ্ম মানুষ ও জ্যোতি মানুষ ; এরা ধনাত্মক দল।
স্থুল ও সূক্ষ্ম দেহধারী জীবিত ও মৃত অবাধ্য, অনিষ্টকারীগণই শয়তান; শয়তান অর্থ: বিদ্রোহী, ধ্বংসকারী, অবাধ্য; এদের মধ্যে ‘সে’ বা জ্যোতি মানুষ অবলুপ্ত, অকর্মণ্য বিধায় এরা ঋণাত্বক কাফিরের দল। অর্থাৎ একদল সৃষ্টির বিকাশ-প্রকাশ ঘটায় ; অন্য দল তা পুনঃ গোপন অর্থাৎ ধংসের লীলা ঘটায়।
বিষয়টা মুখ ও পাছার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে, যেমন: মূখ যা গ্রহণ করে, পাছা কালের বিবর্তন ক্রিয়ায় তাই ত্যাগ করে। ফলে ‘আমি’র অস্তিত্ব বজায় থাকে। আবর্তন-বিবর্তন, লয়-প্রলয়, সৃষ্টি-ধ্বংস, ধর্মাধর্ম সবই স্থুল ও সূক্ষ্ম জগৎ ব্যপিয়া, সে বা নূর জগতে এর কোনো বালাই নেই।
বিজ্ঞানীগণ (আউলিয়া) যখন প্রকৃতির মূখ ও পাছার সন্ধান পাবেন তখন বিগ ব্যাং ও ব্লাক হোল-এর ধারণাসূত্র পরিবর্তিত হয়ে অকল্পনীয় জ্ঞান ও মহাকাল ও কল্যাণের সূত্র আবিষ্কারে সক্ষম হবেন।
আমি, তুমি, সে দ্বারা হিন্দু, মুছলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি পার্থক্য করে না। এটা মহাপ্রকৃতি গ্রন্থ, সৃষ্টি তথ্য ও তত্ত্বের সন্দেহাতীত কালোত্তীর্ণ সূত্র।

প্রেরণাপ্রাপ্ত মজিবুল হকের বাণী
আলিফ - লাম - মিম
Is the only way
To be seen
To reach the position
You all dream.
[দ্র: প্রেরণাবাণী; পৃ: ৮৭] (শেষ)
বিনীত।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১০:৫৫
১০টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×