আনুশকা যেভাবে মারা গেছে তার একটা কাল্পনিক মডেল
মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ছাত্রী আনুশকার মৃত্যু কিভাবে হতে পারে তা নিয়ে আমার নিজস্ব ধারণা শেয়ার করছি। এটি একান্তই আমার ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ। বাস্তব ঘটনা ভিন্নও হতে পারে।
চার বন্ধু পরিকল্পনা করেই মেয়েটিকে ধর্ষণ করার উদ্দেশ্যে দিহানের বাসায় ডেকেছে। কারণ, দিহানের সাথে মেয়েটির পরিচয় ও সম্পর্ক মাত্র মাস তিনেকের। এতো অল্প সময়ের পরিচয়ে কোন মেয়েই একপ্রকার অপরিচিত একটা ছেলের সাথে শারীরিক মেলামেশা করার কথা নয়।
মেয়েটিকে দিহান কিছু একটা লোভ দেখিয়ে বাসায় ডেকেছে। তার কিছুক্ষন পরই অন্য তিনজন এসেছে। এতগুলো ছেলেকে এক সাথে ঘরে ঢুকতে দেখে আনুশকা ভয় পেয়ে যায়। সে দ্রুত ওই বাসা ছেড়ে পালতে চায়। কিন্তু চারজন মিলে তাকে ঘিরে ধরে, কোথাও যেতে দেয় না।
তারপর, ওকে ছেড়ে দেয়া হবে আশা দিয়ে নেশাজাতীয় কিছু জোর করে তাকে পান করানো হয়। তারপর শুরু হয় পাশবিক নির্যাতন। নির্যাতনের শুরুটা হয় স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু, সম্মুখভাগে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তারা বিকৃত যৌনাচারে মেতে উঠে একসময়।
মেয়েটি ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে এলে তারা চারজন মিলে কিভাবে এ ভয়াবহ অপরাধ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তার বুদ্ধি আটে। তারা প্রেমের সম্পর্কের জেরে দিহান একাই শারীরিক সম্পর্ক করেছে বলে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাছাড়া, স্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্কে মেয়েটা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাঁচাতে দিহান অন্য তিনজনকে ডেকেছে বলেও বক্তব্য দেবে দিহান। তারমানে, প্রেমের সম্পর্কের বোঝাপড়ার বাইরে এখানে কিছু ঘটেনি এমন একটা আবহ তৈরী হবে পুরো ঘটনায়। যা ঘটেছে, তা স্বাভাবিক যৌনতার দুর্ঘটনামাত্র।
পরিকল্পনামতো, গ্ৰুপ ধর্ষণ বা, আদৌ ধর্ষণের মতো কিছু ঘটেনি এমনভাবে কাহিনীকে প্রবাহিত করতে শারীরিক সম্পর্কের দায় দিহান একাই কাঁধে নেয়। এ সুযোগে তার তিন বন্ধু তাৎক্ষণিক বেঁচে গেলেও দিহানের নিজেরও ধীরে ধীরে বাঁচার পথ প্রশস্থ হয়। অন্যথায়, চারজনই একসাথে ফেঁসে যায়।
এতো কম বয়সী কয়েক ছেলে এভাবে সূক্ষ্ণ পরিকল্পনা করে নিজেদের বাঁচাতে চেষ্টা করা স্বাভাবিক নয়। গল্পের এই প্লটটা সম্ভবত: দিহানের মায়েরই শিখিয়ে দেয়া। কারণ, তিনি বলে বেড়াচ্ছেন দিহানের সাথে মেয়েটির স্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্ক দোষের কিছু নয়। একজন মা হিসেবে আগ বাড়িয়ে এমন মন্তব্য কোন বাঙালি মায়ের মুখে বেশ রহস্যময় শোনায়।
দিহানের বাবা খুব প্রভাবশালী ছিলেন বলে তাঁর সাথে পুলিশের শীর্ষমহলে বোঝাপড়া থাকাই স্বাভাবিক। নইলে পুলিশ এত দ্রুত ওই তিনজনকে ছেড়ে দেবে কেন? বাংলাদেশের পুলিশ কাউকে তো এতো সহজে ছাড়ে না। অদৃশ্য কোন মহলের ইশারায় কিশোরী মেয়েটিকে এডাল্ট, আর দৃশ্যতঃ বিশ-একুশ বছরের সুঠাম যুবক দিহানকে বয়স কমিয়ে শিশু বানানোর অপচেষ্টাও চেষ্টাও গভীর তাৎপর্য বহন করে।
দিহানের অন্য তিন বন্ধুর বিস্তারিত পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তবে, কোটিপতির উচ্ছন্নে যাওয়া ছেলেদের বন্ধুর পরিবারগুলো কেমন হয় তা কমবেশি সবাই অনুমান করতে পারেন। এই তিনজন বিদেশ পালানোর আগে তাঁদের দ্রুত গ্রেফতার, এবং একই সাথে দিহানের মাকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে আশা করা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৪৯