যারা সরকারি চাকুরী হতে অবসরে যাবার মুখোমুখি, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর কাছ থেকে তাদের ক্লিন চিট সার্টিফিকেট নেবার বিধান চালু করা যায়।
এই সার্টিফিকেট দেবার সময় দুদক খতিয়ে দেখবে সংশ্লিষ্ট কর্মচারী বা তার পরিবারের কারো নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত অর্থ-সম্পদ আছে কিনা। অবৈধ সম্পদ থাকার প্রমান পাওয়া গেলে অধিকতর তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে তাকে গ্রেফতার করে জেলে পুরতে হবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি চাকুরেদের ক্ষেত্রে দুর্নীতিরোধী কোন কার্যকর আইনি ব্যবস্থা নেই। যেমন, বিদ্যমান আইনে দুর্নীতি করে এক বছরের কম সাজা হলে তাতে চাকুরীর কোন ক্ষতি হয়না, বা বড়ো বড়ো অপরাধের সাজা কেবল তিরস্কার। আরো জঘন্য অপরাধ করলে এক বা দুটি ইনক্রিমেন্ট আটকে দেয়া হয়। এসব আইন থাকা না থাকায় কিছু যায় আসেনা। বিধিগুলো উন্নতদেশের আদলে ঢেলে সাজাতে হবে। উল্লেখ্য, চীনদেশে বড়ো ধরণের দুর্নীতির সাজা মৃত্যুদণ্ড।
কেবল ক্লিন চিট অর্জনকারীরাই নিরুদ্বেগ অবসর জীবন কাটাতে সক্ষম হবেন; পক্ষান্তরে, দুর্নীতিবাজেরা বাকি জীবন কাটাবেন জেলজরিমানা ও বিভিন্ন প্রকার মামলা মোকদ্দমার মধ্য দিয়ে, যা তাদের প্রাপ্য। চলমান ব্যবস্থায়, অবসরের পর দুর্নীতিবাজরা সপরিবারে ঘনঘন বিদেশে শপিং বা ট্যুর করে বেহায়ার মতো ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন। কারন, তাদের আয়ের উৎস নিয়ে কোন জবাবদিহিতা নেই।
প্রাথমিকভাবে কেবল অবসরগ্রহণের ক্ষেত্রে ক্লিন চিট (Clean chit) সার্টিফিকেট ব্যবস্থা চালু করে ক্রমান্বয়ে এর প্রয়োগের পরিধি বাড়াতে হবে। যেমন, পদোন্নতির যোগ্যতা বিবেচনায় প্রথমে ক্লিন চিট সার্টিফিকেট নিতে হবে, বা চাকুরীর প্রতি তিন বছর পূর্তিতে নিজ উদ্যোগে এই সার্টিফিকেট নেয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে।
ক্লিন চিট সার্টিফিকেট ব্যবস্থা দ্রুত চালু করলে বছর ঘুরতেই বাংলাদেশে দুর্নীতি কমার সুস্পষ্ট আলামত দেখা যাবে। বলা বাহুল্য, দুর্নীতিই বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা।
এম এল গনি - কলামনিস্ট
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




