গতকাল কতিপয় মীলাদ, কিয়াম নাজায়েয এবং বিদায়াতি কাজ বলে লাফাচ্ছিলেন। তাদের জন্য এই লেখাটি লিখতে হল। যদিও আমিও ধর্মীয় বিষয়ে ব্লগিং করি না।
কিয়াম সম্পর্কিত মাসয়ালার কোন কোন লোক ভিন্নমত পোষণ করে থাকেন এবং হুযুরে পুরনুর সঃ এর সম্মানার্থে কোন জলসা বা মীলাদ শরিফে দাঁড়ানোকে বিদআত ও গুনাহের কাজ হিসেবে মনে করে থাকেন এবং অনুরূপ প্রচারও করে থাকেন!
প্রক্রিতপক্ষে হুযুরে পাক সঃ এর সম্মানার্থে বা মুমিন বান্দাহর সম্মানার্থে দাঁড়ানো গুনাহের কাজ হতে পারে না বরং সওয়াব বলে প্রমাণিত।
যেমন কোরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘সম্মান একমাত্র আল্লাহ তাঁর রাসুল এবং মুমিন বান্দাহগনের জন্য নির্ধারিত।’ [সুরা আল মুনাফিকিনঃ ৮]
তাছাড়া হাদিস শরিফেও এর প্রমান পাওয়া যায়। যেমন-
১) হজরত হাসসান (রা) যখন হুযুর সঃ এর প্রশংসামূলক কবিতা পাঠ করতেন তখন তিনি দাঁড়িয়ে পাঠ করার জন্য হুযুরের নিকট হতে আদেশপ্রাপ্ত হতেন। নির্দেশ মুতাবিক তিনি দাঁড়িয়ে পাঠ করতেন। এখানে হুযুর সঃ এর সম্মানার্থে দাঁড়ানো সুন্নাতে হাসসান (রা) বলে প্রমাণিত হয়।
২) হজরত আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যখন হজরত ফাতেমা (রা) মহানবীর নিকট আগমন করতেন, তখন মহানবী দাঁড়িয়ে যেতেন। অনুরুপভাবে হজরত ফাতেমা (রা)ও দাঁড়িয়ে যেতেন, যখন মহানবী তাঁর গৃহে তশরিফ আনয়ন করতেন এবং তিনি নবিজির হস্তও চুম্বন করতেন। সুতরাং, আল্লাহর রাসুল সঃ এর সম্মানে দাঁড়ানো সুন্নাতে ফাতেমী এবং ছোটদের সম্মানে দাঁড়ানো সুন্নাতে রাসুল সঃ বলে প্রমাণিত হয়।
৩) হজরত আবু হুরাইরা হতে বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, মহানবী সঃ আমাদের নিয়ে মসজিদে নববীতে হাদিস বয়ান করতেন। বয়ান শেষে হুযুর সঃ যখন দাঁড়াতেন আমরাও দাঁড়িয়ে যেতাম, যতক্ষণ পর্যন্ত না হুযুর সঃ তাঁর কোন বিবির গৃহে প্রবেশ না করতেন।
সুতরাং, এই হাদিসে প্রমাণিত যে, হুযুর সঃ এর সম্মানে দাঁড়ানো সুন্নাতে সাহাবী।
৪) হজরত আবু উমামা হতে বর্ণিত যে, একদিন নবী করিম সঃ লাঠিতে ভর করে বের হলেল। হুযুর সঃ কে দেখে আমরা সবাই দাঁড়িয়ে গেলাম। তখন হুযুর সঃ এরশাদ করলেন, ‘তোমরা আজমীদের [অনারব কাফির] অনুরূপ [অবনত মস্তকে] দাঁড়াবে না।’
এই হাদীস দ্বারা না দাঁড়ানোর প্রমান পাওয়া যায় না বরং অনারব কাফিরগন তাদের সরদার বা তাদের উপরিস্তিতদের সম্মুখে অবনত মস্তকে দাঁড়িয়ে থাকা বাধ্যতামূলক করে নিয়েছিল। যতক্ষণ পর্যন্ত বসার নির্দেশ না পেত ততক্ষণ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হত। এ ধরনের দাঁড়ানোর মধ্যে সওয়াবের উদ্দেশ্য তো থাকতেই পারে না বরং কাফির সরদারগনের কাছে তা গর্বের বিষয় ছিল। সুতরাং এ ধরনের দাঁড়ানোর মধ্যে ‘শিরক’র আভাস পরিলক্ষিত হয়েছিল বিধায় হুযুর সঃ উক্ত সাহাবীদেরকে আজমীদের ন্যায় দাঁড়াতে নিষেধ করেছিলেন মাত্র।
কিয়ামের মাসয়ালা সম্পর্কে হজরত শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দেস দেহ্লভী (র)’র মীমাংসাঃ
কিয়াম সম্পর্কে তিনি বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে কিয়াম সম্পর্কিত বিষয়ে কোন বিরোধ নেই। কেননা কিয়াম সম্পর্কিত আদেশ যথেষ্ট বলিয়ান। নিষেধ শুধুমাত্র অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। অনারব কাফিরগন তাদের প্রথানুযায়ী তাদের রাজা, বাদশাহ, সরদার প্রমুখের সম্মুখে বাধ্যতামূলকভাবে অবনত মস্তকে দাঁড়াতে হত। এ ছিল অধিক সম্মান ও গর্ব প্রকাশে সীমালঙ্ঘন। এমনকি এ ধরনের দাঁড়ানোর মাধ্যমে শিরকে নিপতিত হবার আশংকা ছিল বিধায় মহানবী সঃ অনুরূপভাবে দাঁড়ানো নিষেধ করেছেন। কিন্তু আল্লাহর রাসুল সঃ এবং মুমিনদের সম্মানার্থে যদি দাঁড়ানো হয়, তাহলে এতে কোন অপরাধ নেই। কেননা ঐরূপ দাঁড়ানোতে শিরকের কোন আশঙ্কা নেই। [হুজ্জাতুল বালিগাহ, পৃষ্ঠা-৫৪৯]
কিয়াম সম্পর্কিত মাসয়ালার কোন কোন লোক ভিন্নমত পোষণ করে থাকেন এবং হুযুরে পুরনুর সঃ এর সম্মানার্থে কোন জলসা বা মীলাদ শরিফে দাঁড়ানোকে বিদআত ও গুনাহের কাজ হিসেবে মনে করে থাকেন এবং অনুরূপ প্রচারও করে থাকেন!
প্রক্রিতপক্ষে হুযুরে পাক সঃ এর সম্মানার্থে বা মুমিন বান্দাহর সম্মানার্থে দাঁড়ানো গুনাহের কাজ হতে পারে না বরং সওয়াব বলে প্রমাণিত।
যেমন কোরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘সম্মান একমাত্র আল্লাহ তাঁর রাসুল এবং মুমিন বান্দাহগনের জন্য নির্ধারিত।’ [সুরা আল মুনাফিকিনঃ ৮]
তাছাড়া হাদিস শরিফেও এর প্রমান পাওয়া যায়। যেমন-
১) হজরত হাসসান (রা) যখন হুযুর সঃ এর প্রশংসামূলক কবিতা পাঠ করতেন তখন তিনি দাঁড়িয়ে পাঠ করার জন্য হুযুরের নিকট হতে আদেশপ্রাপ্ত হতেন। নির্দেশ মুতাবিক তিনি দাঁড়িয়ে পাঠ করতেন। এখানে হুযুর সঃ এর সম্মানার্থে দাঁড়ানো সুন্নাতে হাসসান (রা) বলে প্রমাণিত হয়।
২) হজরত আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যখন হজরত ফাতেমা (রা) মহানবীর নিকট আগমন করতেন, তখন মহানবী দাঁড়িয়ে যেতেন। অনুরুপভাবে হজরত ফাতেমা (রা)ও দাঁড়িয়ে যেতেন, যখন মহানবী তাঁর গৃহে তশরিফ আনয়ন করতেন এবং তিনি নবিজির হস্তও চুম্বন করতেন। সুতরাং, আল্লাহর রাসুল সঃ এর সম্মানে দাঁড়ানো সুন্নাতে ফাতেমী এবং ছোটদের সম্মানে দাঁড়ানো সুন্নাতে রাসুল সঃ বলে প্রমাণিত হয়।
৩) হজরত আবু হুরাইরা হতে বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, মহানবী সঃ আমাদের নিয়ে মসজিদে নববীতে হাদিস বয়ান করতেন। বয়ান শেষে হুযুর সঃ যখন দাঁড়াতেন আমরাও দাঁড়িয়ে যেতাম, যতক্ষণ পর্যন্ত না হুযুর সঃ তাঁর কোন বিবির গৃহে প্রবেশ না করতেন।
সুতরাং, এই হাদিসে প্রমাণিত যে, হুযুর সঃ এর সম্মানে দাঁড়ানো সুন্নাতে সাহাবী।
৪) হজরত আবু উমামা হতে বর্ণিত যে, একদিন নবী করিম সঃ লাঠিতে ভর করে বের হলেল। হুযুর সঃ কে দেখে আমরা সবাই দাঁড়িয়ে গেলাম। তখন হুযুর সঃ এরশাদ করলেন, ‘তোমরা আজমীদের [অনারব কাফির] অনুরূপ [অবনত মস্তকে] দাঁড়াবে না।’
এই হাদীস দ্বারা না দাঁড়ানোর প্রমান পাওয়া যায় না বরং অনারব কাফিরগন তাদের সরদার বা তাদের উপরিস্তিতদের সম্মুখে অবনত মস্তকে দাঁড়িয়ে থাকা বাধ্যতামূলক করে নিয়েছিল। যতক্ষণ পর্যন্ত বসার নির্দেশ না পেত ততক্ষণ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হত। এ ধরনের দাঁড়ানোর মধ্যে সওয়াবের উদ্দেশ্য তো থাকতেই পারে না বরং কাফির সরদারগনের কাছে তা গর্বের বিষয় ছিল। সুতরাং এ ধরনের দাঁড়ানোর মধ্যে ‘শিরক’র আভাস পরিলক্ষিত হয়েছিল বিধায় হুযুর সঃ উক্ত সাহাবীদেরকে আজমীদের ন্যায় দাঁড়াতে নিষেধ করেছিলেন মাত্র।
কিয়ামের মাসয়ালা সম্পর্কে হজরত শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দেস দেহ্লভী (র)’র মীমাংসাঃ
কিয়াম সম্পর্কে তিনি বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে কিয়াম সম্পর্কিত বিষয়ে কোন বিরোধ নেই। কেননা কিয়াম সম্পর্কিত আদেশ যথেষ্ট বলিয়ান। নিষেধ শুধুমাত্র অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। অনারব কাফিরগন তাদের প্রথানুযায়ী তাদের রাজা, বাদশাহ, সরদার প্রমুখের সম্মুখে বাধ্যতামূলকভাবে অবনত মস্তকে দাঁড়াতে হত। এ ছিল অধিক সম্মান ও গর্ব প্রকাশে সীমালঙ্ঘন। এমনকি এ ধরনের দাঁড়ানোর মাধ্যমে শিরকে নিপতিত হবার আশংকা ছিল বিধায় মহানবী সঃ অনুরূপভাবে দাঁড়ানো নিষেধ করেছেন। কিন্তু আল্লাহর রাসুল সঃ এবং মুমিনদের সম্মানার্থে যদি দাঁড়ানো হয়, তাহলে এতে কোন অপরাধ নেই। কেননা ঐরূপ দাঁড়ানোতে শিরকের কোন আশঙ্কা নেই। [হুজ্জাতুল বালিগাহ, পৃষ্ঠা-৫৪৯]

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




