
ত্রয়োদশ শতকে ভারতবর্ষে হিন্দু ও বৌদ্ধ শাসকের স্থলে কতৃত্ববাদ আসে মুসলিম শাসকদের হাতে। ১৪ শতক নাগাদ মুসলমানের সংখ্যা হাজারে একজন হলেও সপ্তদশ শতকে ভারতবর্ষে ইসলাম ধর্ম বেশ জাঁকিয়েই বসে। এই সময়ের প্রেক্ষাপটেই লেখা হয়েছে শওকত আলীর প্রদোষে প্রাকৃতজন ।
প্রদোষে প্রাকৃতজন বর্ণিত হয়েছে তৃতীয় পুরুষের দৃষ্টিকোণ থেকে। কাহিনির অন্যতম প্রধান চরিত্র শ্যামাঙ্গ ও একজন প্রৌঢ় লোক। প্রৌঢ় লোকটি মমতার সাথে শ্যামাঙ্গকে সাহায্য করতে চাইলেও সে দ্বিধাবোধ করে। অতঃপর হঠাৎ এক বটবৃক্ষ দেখে সে এক নতুন উপলব্ধিতে উপনীত হয়।
"আসলেই কি তার লতার স্বভাব? সহকার শাখা দেখলেই অবলম্বনের জন্য লোলুপ হয়ে উঠে?"
এখানে ঔপন্যাসিক সাহিত্য কৌশল হিসেবে Stream of consciousness ব্যবহার করেছেন। এর উদাহরণ পরবর্তীতে আরও পাওয়া যায়। এই কৌশলের মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে মানবজীবনে একাকিত্বের ভয়ংকর পরিণতি। মানুষ যদি একাই বাঁচতে পারত, তাহলে হয়তো কখনো মানুষের সমাজ তৈরিই হতো না!
প্রদোষে প্রাকৃতজন অতীত ইতিহাসের দলিল। এরকম দলিল হিসেবে আমরা আরও চিহ্নিত করতে পারি রাহুল সাংকৃত্যায়নের ভোলগা থেকে গঙ্গা, আহমেদ মূসার প্রান্ত-প্রাচীন , কিংবা অমল দাশগুপ্তের মানুষের ঠিকানা বইকে। এইসব বইয়ের পাঠ আমাদের আত্মোপলব্ধিকে আরও বেশি সজাগ ও সচেতন করে তুলতে পারে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


