'ভরা পকেট' দুনিয়ার অলি-গলি কোন পথে কী ধূলি, চিনতে সহায় হয়। কোথায় যায় না মানুষ তখন, পকেট ভরা সময়-টাকায় যখন! গাঁটের কড়ি খরচ করি পরের চিন্তা কিনে পড়ি। দেখি, শোনে, বুঝার চেষ্টা করি। পরের পেরেশানির ঝুড়ি মাথায় করে নিজের পেরাশানি বাড়াই।
সবখানেই তখন সে স্বার্থবাদী। অথচ জানবার বেলায় সবচেয়ে গুরুত্বের, নিজেরে রেখে অবহেলায় একেবারেই সে বিশ্বপ্রেমিক! বিশ্বদরদী; উদারতার মূর্ত প্রতীক!
তখন 'খালি পকেট' চেনায় এই মহাবিশ্বের নিকটতম অথচ কঠিনতম অধরা অজানা সবচাইতে আপনজনকে; নিজেকে। পূর্ণ একটা জীবন পার করে এসেও অধিকাংশের কাছে এই চিরচেনাটাই রয়ে যায় চির অচেনা, চির অজানা। "আমি কী চাই?" সেটাই হয় না জানা এক জীবনের সবটা পথ পেরিয়ে এসেও!
'পকেট শূন্য থাকলে' কিংবা 'সময় ফুরুলে' মানুষ তখন ভাবতে বসে সেই আপনার আপনজনকে নিয়ে, নিজেকে নিয়ে। বিশ্লেষে বিশ্লেষে ভাঙে নিজের ভাবনাকে, নিজের বিশ্বাসকে-আশ্বাসকে, নিজের শক্তিকে-দুর্বলতাকে।
তখন সে জানবার চেষ্টা করে,
'সে কী চায়? কেন চায়? কী চাইত? পেয়েছে?
কী পেতে পারত সে, কী পেয়েছে, কী কী পায়নি, কেন পায়নি? কেন সে এসেছে এখানে?
ভোগের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ কী তার কাজ ছিল? সেটা কী ঠিকঠাক করেছে?
হিসেবের খাতায় পাওনা কী তার কিছু জমেছে? নাকি সবই যে তার দেনায় দেনায় ভরেছে?'
এখনো তার কী করবার আছে?
এসব তখন তার সমস্ত চিন্তাকে খেপলা জালের মতো জড়িয়ে ধরে। সেই চিন্তার জাল থেকে একটা একটা উত্তরের মাছে তার ভরতে থাকে খারাই। জেলের মুখের তৃপ্তির হাসি তখন একটু একটু করে আলোকিত করে তার মুখ। তখনি তার চিন্তারা হয়ে ওঠে কঠিন পদার্থের অণুর মতো আন্তঃআণবিক শক্তিতে বলিয়ান। অজানার কুয়াশা কেটে কেটে জীবন পরিষ্কার হয় তার সামনে।
জীবনের মধু কেবল তখনি মধুর হয়ে ওঠে।
সে মধুর স্বাদ যে একবার পেয়েছে জীবনের যাবতীয় ঝামেলার জট তার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।
কে না পেতে চায় এমন মধুর স্বাদ?
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০২২ সকাল ১০:৫৬