(লেখার শুরুতে এটাকে ক্ষনিকের_ডায়েরীর অন্তর্ভুক্ত করব ভাবিনি। মনে হল ২০১৬ সালে শুরু করা আমার ধারাবাহিকটাকে একটু এগিয়ে নেওয়া দরকার। আলহামদুলিল্লাহ আবার শুরু করেছি আমার ক্ষনিকের ডায়েরী সিরিজ। আজ ২২তম পর্ব।)
কয়েকদিন আগে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে মাগরিবের জামা'আতের ঘটনা। অযু করে আসতে আসতে সলাত শুরু হয়ে গেছে। তিলাওয়াতে খুব প্রশান্তি পাচ্ছিলাম। ইমামের তিলাওয়াত খুবই হৃদয়গ্রাহী। সলাত শেষে সামনের দিকে চোখ পড়তে খেয়াল করলাম ইমামতি করছেন আমাদের ইন্ডাস্ট্রির সিকিউরিটি গার্ড । খুব পুলকিত হলাম। নিজের আইডি কার্ডের দিকে তাকালাম। মুচকি হাসলাম। এই কার্ডের ডেজিগনেশনটার জন্যইতো এই সিকিউরিটি গার্ড আমাকে স্যার সম্বোধন করে সালাম ঠুকে। অথচ আমি মারা যাওয়ার সাথে সাথে এই গার্ড এবং আমাকে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে খালি হাতে। যেখানে থাকবেনা আমি দুনিয়াতে কোন পদে ছিলাম? ম্যানেজার/সি. ম্যানেজার/ সিও/সিওও/ এমডি নাকি পুরা একটা দেশের মালিক। সেখানে বিচার করা হবে আমি সলাত ঠিকমত আদায় করেছিলাম কিনা, আমার অধীনস্তদের সলাতের ব্যাপারে তাগাদা দিয়েছিলাম কিনা/ আমার প্রত্যেকটা সেকেন্ড আমি কীভাবে অতিক্রম করেছিলাম/ আমার ইনকামটা হালাল ছিল কিনা।
নিজেকে নিয়ে চিন্তা করছি। আমিও দাঁড়িয়ে আছি এবং সেই সিকিউরিটি গার্ডও দাঁড়িয়ে আছে আল্লাহর সামনে। আল্লাহ সেই সিকিউরিটি গার্ডকে গ্রীন কার্ড দিয়ে দিল জান্নাতের আর আমাকে ধরিয়ে দিলেন রেড কার্ড যার অর্থ জাহান্নাম। আহ! তখন কি আফসোসটাই না হবে কেন আমি দুনিয়ার পিছনে, সামান্য কটা টাকার পিছনে ছুটলাম? আমার চেয়ে ঐ সিকিউরিটি গার্ডই না কত উত্তম। যে কোর'আন তিলাওয়াত করতে পারে শুদ্ধ করে, ইমামতি করার যোগ্যতা অর্জন করেছে। আহ! হাত কামড়াতে ইচ্ছা করবে নিজের। আমি আমার শ্রম, সময় ব্যয় করলাম মাত্র ৫০-৬০ বছরের জীবনের জন্য। আর দুনিয়াতে আমাকে স্যার সম্বোধন করা ঐ সিকিউরিটি গার্ড তার সময়, শ্রম ব্যায় করেছে অনন্তকালের জীবনের জন্য। কে বেশী বুদ্ধিমান? আহ! আফসোস আমরা বুঝিনা। আল্লাহ ক্ষমা কর।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৩০