আমার বাসার সামনের বাসায় একটা ছোট্ট ছেলে ছিল নাম বাবলু। তার বাবা চায়ের দোকানদার। একদিন আমি একটা ম্যাট্রেস কিনে বাসার সামনে আসতেই বাবলুর বাবা আমাকে সাহায্য করলো ম্যাট্রেস তিনতলার উপরে উঠিয়ে দিতে। সেটা আবার আমাদের বাসার যে বুয়া ছিল উনি দেখে বাবলুর বাবাকে বিস্কুট আর এক গ্লাস পানি খেতে দিয়েছিলো। তারপর বাবলুর বাবা আর বাসার বুয়ার মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠলো।
বাবলুর বাবা মাঝে মাঝেই এটা সেটা চাওয়া শুরু করলো বুয়ার থেকে বুয়াও আমাদের না জানিয়ে সব কিছু দিতে থাকলো। একদিন আমার বাড়ির মানুষগুলো বুয়াকে ধরে একটু কড়া ভাষায় বললো আমাদের না জানিয়ে তুমি ঘরের দামি দামি জিনিসগুলো বাবলুর বাবাকে দিয়ে দিচ্ছ কেন ? বুয়া সবাইকে অবাক করে দিয়ে বললো এটা বাবলুর বাবার অধিকার। সে ম্যাট্রেস তিনতলায় তুলতে সাহায্য করেছিল তাই সে যা চাবে তাই দিবো। তখন সবাই বুয়াকে বোঝাতে শুরু করলো এটা ঠিক নয়। সেদিন তো সৌজন্যতার খাতিরে তাকে বিস্কুট আর পানি দিয়েছিলে। তুমি যদি এখন আমাদের কথা না শোনো তবে আমরাও বাধ্য হবো তোমাকে কাজে না রাখতে। তখন বুয়া সবাইকে আরো অবাক করে দিয়ে বললো আপনারা চাইলেই আমাকে কাজ থেকে বের করে দিতে পারেননা। এই বাড়িতে আমার অধিকার অনেক বেশি। কারণ আমি এই বাড়ির সব কাজকর্ম করি যার কারণে আপনারা দুইবেলা ভালোমন্দ খাতে পারেন। আমার কোনো বিকল্প এই বাড়িতে নেই। এমন কি বুয়া আমাদের বাসার লোকজনদের গায়ে পর্যন্ত হাত তুললো। তখন সবাই খেপে যেয়ে বুয়াকে মারতে গেলো আর তখনি বুয়া রাগে কটমট করে পাশের বাড়ির বাবলুর বাবার কাছে যেয়ে আশ্রয় নিলো।
বাবলুর বাবা একটা ক্রিমিনাল টাইপের লোক। সব অপকর্মকারী বাবলুর বাবার চায়ের দোকানে বসে চা খায় আর বিভিন্ন রকমের নাশকতার ফন্দি আটে। এখন বুয়া আর বাবলুর বাবা মিলে আমাদের বাড়িতে বিভিন্নভাবে হামলা আর অশান্তি লাগানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছে। আমার কয়েকজন মামা আছেন। এরা সারাজীবন আমার বাবার ঘাড়ে ভর দিয়ে খেয়ে যাচ্ছে। আমাদের বাড়িতে সামান্য কোনোকিছু ও কন্ট্রিবিউট করেনি কোনোদিন। এরা পায়ের ওপর পা তুলে দিয়ে খাচ্ছে আর বলতেছে বুয়াকে নাহয় আবার নিয়ে এস নইলে এসব অশান্তি থামাবে কে। তাকে নিয়ে এসে বুঝিয়ে শুনিয়ে আবার বাসার কাজে লাগিয়ে দাও। এসব মামাদের কিছু বন্ধুবান্ধব বিদেশে আছে যারা আগে বুয়াকে দিয়ে মদ গাজা এসব আনিয়ে নিতো তারাও সারাদিন বুয়ার গুণগান গাচ্ছে।
আমাদের বাড়ির নতুন ছেলেমেয়েরা আর কোনোভাবেই বুয়াকে নিয়ে আসতে রাজি নয়। তারা এখন বলতেছে দাদা যেই বাড়ি রেখে গেছে আমরা নিজেরা নিজেরাই কাজ করে এখন বাড়ির শান্তি বজায় রাখবো। দরকার হলে বাবলুর বাবার দোকান থেকে বিকেলের চা আর নাস্তা খাবো না। আশেপাশে অনেক ভালো ভালো দোকান আছে যেখানে আমরা আগে যাইনি নিজেরা। বুয়া শুধু ওই বাবলুর বাবার দোকান থেকেই সব নিয়ে আসতো। এখন আর সেটা চলবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬