somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শহরপল্লীতে বৃত্তবন্দীঃ সূর্যস্নানে ভাজা ইলিশ অথবা ইছামতি নামের নদীটি

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মিড টার্মের ছুটি চলছে। ফেইসবুকের গৃহপাতা জুড়ে হয় “বীচে ঘুরছি” নয়ত “বীচে যাচ্ছি” টাইপ আপডেটে সয়লাব অবস্থা। হাতে কমবেশি ৪টে টার্ম প্রজেক্ট আর টুকিটাকি কিছু কাজের চাপ; একটা দিন ব্যয় মানেই যেখানে অনেক কিছু; সেখানে বন্ধুবান্ধব কারোরই তেমন সময় নেই। তারপরেও সবার চেক ইন দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে “কি আছে গেবনে” বলে ফোন দিলাম এই সবের জন্য go to man আসিফ উদ দৌলাকে – “এই মঙ্গলবার যেইভাবে পারিস একদিনের ট্যুরের একটা ব্যাবস্থা কর। কই করবি; কিভাবে করবি – কিচ্ছু জানি না।“ দৌলা ছেলে খারাপ হইলেও মানুষ ভাল। “দেখতেসি” বলে ফোন রেখে দিল। সোমবার সন্ধ্যায় ফোন পাইলাম – “কাল সকালে রেডি থাকিস; বান্দুরা জাইতেসি; মিনার আছে সাথে; ঘুরুম ঘারুম; আর হলে আইসা সকালে ঘুম থেইকা তুলবি আমাদের“।




সকাল ৮.৩০। আমার যাত্রা শুরু। হলে গিয়ে জাগায় তুললাম দুই কুম্ভকর্ণ দৌলা আর মিনারকে। প্রথম গন্তব্য চিরচেনা গুলিস্তান। সেখান থেকে বান্দুরার সরাসরি বাস। ভাড়া জনপ্রতি ৬৫ টাকা। সার্ভিস খুব একটা খারাপ না। শুরু হল বাস চলা; হইল যে হইলই; বাস আর থামাথামির নাম নাই। বুড়িগঙ্গা, ইছামতি নদী পার হয়ে জিঞ্জিরা কেরানিগঞ্জের উপর দিয়ে বাস চলছে দক্ষিণে। প্রায় ঘন্টা দুয়েক চলার পর একদম বান্দুরা (শেষ স্টপেজে) গিয়ে নামলাম। দুপুর তখন প্রায় ১১.৩০। এদিক সেদিক খানিক ঘুরাঘুরি করে অটো রিকশায়। গন্তব্য কলাকোপা; ভাড়া ১৫ টাকা। সেইখানে জজ বাড়ি; উকিল বাড়ি আর আনসারদের তত্ত্বাবধানে চালানো কোন একটা ট্রেনিং সেন্টার। পুরোনো বাড়িগুলোতে মানুষ জনের বাস; তাই আর ভিতরে যাওয়া হয় নি। ট্রেনিং সেন্টারের ভিতর খানিকক্ষণ ফটোসেশন শেষে উকিল বাড়ি ঘুরে দেখে সেখান থেকে আবার অটোরিকশা; এবারের গন্তব্য জয়পাড়া।




জয়পাড়া যাওয়ার একমাত্র কারণ সেখান থেকে মাওয়া যাওয়ার বাস পাওয়া যায়। ভাড়া ২০ টাকা। জয়পাড়া গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে খানিক এইদিক সেইদিক ঘুরাঘুরি করে বাসে চড়ে বসলাম; মাওয়া যাব। বাস শ্রীনগর পর্যন্ত। সেখানে নেমে ভটভটিতে মাওয়া ফেরি ঘাট; ১০ টাকা করে। আশেপাশের দৃশ্য আর রাস্তার সৌন্দর্যে ভটভটিতে সামনের সিটে না ওঠার জন্য আফসোস হতে লাগলো। ফেরি ঘাটে খানিকক্ষণ গাড়ি লোডিং আনলোডিং দেখলাম। পরিকল্পনা ছিল একটা ফেরিতে উঠে যাব; পদ্মার মাঝ থেকে সূর্যাস্ত দেখব। সময়ের অভাবে সেই পরিকল্পনা বাতিল করে ঘাটের পাশেই চায়ের দোকানে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে সূর্যাস্ত উপভোগ করলাম। অতঃপর? জি হ্যা; মাওয়া গেলাম আর ইলিশ হবে না তা তো হবে না !! খানিক চাঁদের আলো আর খানিক ফ্লুরোসেন্ট বাতির নিচে গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতের সাথে সদ্য ভাজা ইলিশ পেটে চালান করে আরেক দফা চা পান। অতঃপর বাড়ি ফেরার পালা। সরাসরি ঢাকার বাস; ৭০ টাকা করে খরচ করে গুলিস্তান। সেখান থেকে আবার হলে খানিকক্ষণ আড্ডা শেষে ফিরে এলাম নিজ বাসায়।





বুলেট পয়েন্ট ১ – ভাড়া সহ যাবতীয় জিনিস পাতি বেশ সস্তাই ছিল বলে মনে হইসে। দিনশেষে খাওয়া এবং যাতায়াত খরচসহ আমাদের জনপ্রতি খরচ হইসে ৩৭১ টাকা; একদিনের ভ্রমণের জন্য যা খুবই রিজনেবল।
বুলেট পয়েন্ট ২ - বাস দিয়ে সরাসরি বান্দুরা না এসে কলাকোপায় নেমেই ট্যুরের বাকিটা দেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে মনে হয়। একেবারে বান্দুরায় দেখার মতন তেমন অত কিছু পাই নি।
বুলেট পয়েন্ট ৩ – লেখাটা খানিকটা স্মৃতি থেকে লেখা এবং টাকা পয়সার সমস্ত হিসাব নিকাশ দৌলা সাহেব সামলানোয় কিছু কিছু জায়গার নাম এবং টাকা পয়সার হিসাবে খানিকটা এদিক সেদিক হতে পারে। তথ্যগত ভুল ক্ষমাসুন্দরদৃষ্টি প্রার্থী।
বুলেট পয়েন্ট ৪ – ছবিগুলো আমার এবং দৌলার মোবাইলে তোলা। ছবিগুলো সরবরাহ করার জন্য দৌলাকে কৃতজ্ঞতা।


৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×