somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বই পর্যালোচনা- সুলতান মাহমুদ গজনবীর ভারত অভিযান-১

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ঐতিহাসিক সিরিজ উপন্যাস
সুলতান মাহমুদ গজনবীর ভারত অভিযান-১
এনায়েতুল্লাহ আলতামাস
অনুবাদ-শহীদুল ইসলাম।


লিংক- নেটে সার্চ দিয়ে সহজেই পিডিএফ ডাইনলোড করে পড়তে পারবেন।


৯৭১ সালের ১লা নভেম্বর পৃথিবীর ইতিহাসে সূচিত হল নতুন অধ্যায়। জন্ম নিলেন ‘মূর্তি সংহারক’ খ্যাত সুলতান মাহমুদ। হাজার বছর পেরিয়ে গেছে কিন্তু ইতিহাসে আজও জ্বল জ্বল করছে সুলতান মাহমুদের নাম।

উপন্যাসের শুরু ৯৪০ সালের দু’চার বছর আগে বা পরের ঘটনা দিয়ে। পারস্যের বাদশা নওশেরোয়ার এর মৃত্যুর পর যারা সাশক হিসেবে মসনদে বসেছে তাদের যুলুম ও অত্যাচারে সময়ের পরিক্রমায় ন্যায় ও ইনসাফের প্রতীক বাদশা নওশেরোয়ারের অধঃস্তন পুরুষেরা পারস্য ছেড়ে দিগ্বিদিক ছড়িয়ে পড়ে।

সেই রাজ বংশের টগবগে এক যুবক হাকাম বিন কিরার আরসালান বুখারার এক মেঠো পথে নতুন ঠিকানার উদ্দেশ্যে চলছে। হাকাম ক্লান্তিতে গাছের ছায়ায় বসে পড়লে বাচ্চাদের হৈ চৈই শুনতে পায়। আর শুনতে পায় এক কিশোরীর কুরআন তিলাওয়াত। সে যাযাবর কাফেলা মনে করে সামনে এগিয়ে গিয়ে সেই কিশোরীকে বলল-তুমি ভুল পড়ছ। এভাবেই সেই তুর্কি মুসলিম কাফেলার সাথে পরিচয় হয়।

কাফেলার পুরুষেরা হাকামের পরিচয় পেয়ে তাকে তাদের সাথে থাকার জন্য অনুরোধ করল এবং কিশোরির সাথে কিছুদিন পর অলৌকিক গুন সম্পন্ন ও সৌম্য কান্তিময় বিয়ের প্রস্তাব দিল।

কিশোরিকে নিয়ে অনেকেই কাড়াকাড়ি করেছে কিন্তু যারাই তাকে জোড় করেছে তারাই কোন না কোন বিপদে পরে পরাস্ত হয়েছে।

আল হাকাম কিশোরীকে বলে-তুমি কেন বিক্রি হতে চাওনা। জবাবে কিশোরী বলে-
‘জানি না আমার মধ্যে কীভাবে এ আকাঙ্খা জন্ম নিলো যে,-বিয়ে করে একজন পুরুষের স্ত্রী হিসেবে থাকবো। হৃদয়ের কথা শুনতে শুনতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস হলো, আমার আকাঙ্খা সফল হবে।’

আল হাকামের সাথে সেই কিশোরীর বিয়ে হয়। সংসারে আসে এক পুত্র সন্তান নাম তার সুবক্তগীন। তারা গোত্র থেকে পালিয়ে যায়। তাদের ধাওয়া করা হয় কিন্তু তারা ধরা পরে না। অন্য এলাকার মহলে কাজ নেয় সুবক্তগীনের মা। লালসার শিকার হওয়ার আগেই সেখান থেকে আবার পলায়ন। আমীরের হেরেমে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য লোক আসে কিন্তু ভাগ্য তাদের এবারও বাঁচায়।

এভাবে পলায়নে পর জীবনের প্রতি আল হাকাম হয়ে পড়ে বিষন্ন। সে বলে-‘আমাদের জন্য আল্লাহর জমিনও বুঝি সংকীর্ণ হয়ে গেছে।’

‘অধৈর্য হয়ো না সুবক্তগীনের বাপ। তুমি আমার কথা বিশ্বাস কর আর না কর আমার দৃঢ় বিশ্বাস সেই কাঙ্খিত সন্তানই ভূমিষ্ঠ করেছি যার ইশারা আমি পেয়েছি।’

সুবক্তগীনের ১০-১১ বছর হলে সে কুরআন তরজমা ও তাফসীরসহ পড়ে ফেলে। তার ওস্তাত তাকে বুখারায় যেতে বলে আরও বড় হওয়ার জন্য। স্থানীয় এক কাফেলার সাতে তারা মা, বাব, ছেলে ৩ জনই রওনা হয়। পথে ডাকাত দলের কবলে পড়ে আল হাকাম প্রান হারান আর সুবক্তগীন -কে বিক্রি করে দেন। সুবক্তগীনের মা স্বামী হারিয়ে ছেলের শোকে পাগল হয়ে একদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন

সেই ডাকাত দল আরও অনেক ছেলে-মেয়ে, তরণ-তরুণী সাথে সুবক্তগীনকেও বিক্রি করে দেয়। তাকে কিনে নেয় বুখারার উপকন্ঠের জমিদার-হাজী নসর । সুবক্তগীনের পরিচয় পেয়ে ও তার মত এক বালকের মুখে ইসলাম, দ্বীন ও বিজ্ঞোচিত প্রশ্নের জবাব শুনে অবাক হলেন এবং তাকে কাজে লাগানোর জন্য পড়ালেখা ও সমর বিদ্যায় পারদর্শী করে তুললেন। সুবক্তগীন যখন যুবক হলো তখন হাজী নসর তাকে নিয়ে বুখারার গবর্ণর আলপ্তগীনের সাথে দেখা করেন।

তখনকার ইতিহাসে এটাই প্রথম ঘটনা একজন গোলাম সরাসরি গবর্ণরের বাড়িতে ঢুকার সুযোগ পেল। আলপ্তগীন দেখেই বুঝে গেলেন এই যুবকের মাঝে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে তিনি অভাবনীয় উচ্চমূল্যে সুবক্তগীনকে কিনে নেন এবং তাকে গোলাম হিসেবে নয় সেনবাহিনীতে ভাল পদে অধিষ্ঠিত করেন। ঘটনার পরিক্রমায় আলপ্তগীনের কন্যার সাথে সুবক্তগিনের পরিচয় ও প্রণয় ঘটে।

৯৬২ ইংরেজী মোতাবেক ৬৫১ হিজরী সনে আলপ্তগীন গজনীর শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং সুবক্তগীনকে প্রধান উজীর নিযুক্ত করেছিলেন। অল্পদিন পর আলপ্তগীন এর মুত্যু হলে সুবক্তগীন হন গজনীর শাসক।

একরাতে স্বপ্নে দেখলেন সুবক্তগীন- তার ঘরের ছাদ ভেদ করে একটি গাছ বেড়ে উঠল। বাড়তে বাড়তে গাছটি এমন বিশাল ও বিস্তৃত হলো এবং অর্ধেক পৃথিবী সেই গাছের ছায়া ঢেকে নিলো।

আর সেই দিনই তার ঘরে জন্ম নিল প্রথম সন্তান-স্বপ্নের সুবিস্তৃত মহীরুহ। আর এখানেই ঘটে ইতিহাসের আরেক বাক বদল।

২য় পর্বে সমাপ্ত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৪
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×