somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপরাজিতার সারপ্রাইজ

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
মেঝের উপরে উপুড় হয়ে পড়ে আছে অপরাজিতার শরীরটা। ওর শরীরের চারপাশে রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে অপরাজিতার মনে হচ্ছে কে যেন “অপা” “অপা” বলে ডাকছে আর কান্না করছে। অপরাজিতার হঠাৎ সে দিনের কথা মনে পড়লো যে দিন রাজ্যকে নিয়ে মায়ের সাথে ওর ঝগড়া হয়।মায়ের কথায় কষ্ট পেয়ে এক গাদা ঘুমের ওষুধ খেয়ে যখন পড়েছিল তখন মা ওকে "অপা অপা" বলে ডাকছিল আর কান্না করছিল,কথা গুলো ওর আপুর মুখ থেকে শোনা। সময়টা ছিলো রোজার মাস। অপা যখন এই কান্ডটা করল তখন আযান দিচ্ছিল। সবাই তখন ইফতার না করে অপাকে নিয়ে ব্যস্ত। খুব কষ্ট হয়েছিল সেদিন সবার, এই প্রথম অপা সবার মনে কষ্ট দিল। কেউ বিশ্বাস করতে পারছিলো না অপার মত শান্ত মেয়ে এমন একটা কাজ করবে।

২.
রাজ্যের সাথে সম্পর্কের কথা যখন ওর মা জানতে পারে তখন থেকে অপার মায়ের সাথে ঝগড়া শুরু। অনেক চেষ্টা করেও কেউ অপাকে বুঝাতে পারলনা যে রাজ্যের ভিতরে একটা পশু বাস করে। সময় হলেই সেটা জেগে উঠে। কিন্তু অপা ওকে অবিশ্বাস করবে কিভাবে?রাজ্য যে ওকে অনেক ভালোবাসে। ইতিমধ্যে অপা রাজ্যকে যতগুলা পরীক্ষা করেছে রাজ্য সব গুলাতে উত্তীর্ন হয়েছে। রাজ্যকে যতই দেখে অপা ততই মুগ্ধ হয়। এতো সুন্দর কেউ হতে পারে!!! কিন্তু অপা ভেবে পায় না যে, কেন রাজ্য ওকে এতো ভালোবাসে, ওতো দেখতেও তেমন সুন্দর না, হয়তো এমন কিছু আছে ভালো লাগার যা রাজ্য ওর মাঝে খুঁজে পেয়েছে। দিনে দিনে রাজ্যের প্রতি ওর বিশ্বাস আর ভালোলাগা বাড়তে থাকে। রাজ্যের ভালোবাসায় ও অন্ধ হয়ে পড়ে। রাজ্য যা বলে তাই ও বিশ্বাস করতে শুরু করে। এমন কি আজ যা বলছে তাও।

৩.
বিকেল বেলায় অপা রাজ্যের বাসায় চলে আসে। আস্তে আস্তে রাজ্যের কিছু ছেলে বন্ধুও চলে আসে। আজ রাজ্যের বাসায় ওরা ওদের Anniversary পালন করবে। রাজ্য বলছে ওর জন্য একটা সারপাইজ আছে। কেক কাটার পর ওরা মজা করল। তারপর রাজ্য ওকে গ্লাস ভর্তি কোল্ড ড্রিংকস দিয়ে বলল এটা খেয়ে তৈরি হয়ে নিতে সারপাইজের জন্য। খাওয়ার কিছুক্ষন পরেই অপার কেমন যেন তন্দ্রা শুরু হল। তারপর আর অপার কিছু মনে নেই। যখন ওর জ্ঞান ফিরল তখন ও অনুভব করলো তলপেটে প্রচণ্ড ব্যাথা করতেছে। ও ব্যাথায় চিৎকার করতে চাচ্ছিল কিন্তু পারলো না। অপা দেখলো তার মুখ, হাত , পা সব বাধা। তারপর চোখের সামনে যা হল তা দেখে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায়ই ছিলো না। অপা রাজ্যের পশুর মত চেহারাটা দেখে আবার জ্ঞান হারালো। তারপর অপার আর কিছু মনে নেই…………

৪.
খুব শখ করে অপার বাবা ওর নাম দিয়েছিলো অপরাজিতা। ঠিক করেছিলো মেয়েকে এমনভাবে তৈরি করবেন যেন সে কোন কিছুতেই পরাজিত না হয়। হঠাৎ বাবার কথা মনে পড়তেই চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ল এক ফোঁটা জল। বাবার দেওয়া নামটা আজ ব্যর্থ হয়ে গেল।অপা মনে মনে রাজ্যের দেয়া সারপাইজ এর কথা ভাবল তারপর চোখ বন্ধ করলো শেষ বারের মতো।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৪
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×