somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধু তুমি-৩

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।ভালো আছেন তো?আজ আবার হাজির হলাম শুভ্রকে নিয়ে।


শীতের ছুটিতে কিছু দিনের জন্য এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম সবাই মিলে।ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।তাই যখনই ঘুরতে যাওয়ার কথা উঠে আমি দুই পায়ে খাড়া হয়ে যাই যাওয়ার জন্য।অনেকটা বাচ্চাদের মতো।বাসায় ফিরে দুইদিন ধরে ঘুমিয়ে দিন-রাত পার করছি।এই কয়দিন শুভ্রর সাথে তেমন কথা হয়নি।অনেকটা স্বার্থপরের মতো।মজায় ছিলাম তাই তেমন মনে পড়েনি।এই ব্যাপারটা শুভ্ররও জানা।সন্ধ্যাবেলা ঘুম থেকে উঠেই দেখি শুভ্রর দুটো মিসডকল।সাইলেন্ট মুডে থাকায় টের পাইনি।কলব্যাক করলাম সাথে সাথে।রিসিভ করতেই,"সারাদিন পর এখন মনে পড়ল?"
"আসলে ব্যস্ত ছিলাম।"
"আচ্ছা, তাইলে আর কি বলব?সারাদিন যখন মনে পড়ে নাই তাইলে আজ আর কথা বলে লাভ কি?কালকে কথা বলব।" বলেই লাইনটা কেটে দিল। শুভ্র এমন রাগ দেখালো কেনো?ওতো এমন করে না? আবার কল দিলাম।সে কেটে দিতেই মাথায় নানা চিন্তা ঘুরপাক খেতে লাগল।তখনই শুভ্রর একটা টেক্সট, "বাড়ি যাচ্ছি। আব্বু হসপিটালে ভর্তি। " সাথে সাথে শুভ্রর চেহারাটা ভেসে উঠল।তবে মন খারাপের না।হাসিমুখের।শুভ্র যখন হাসে দাঁত সব বের করে তখন পুরো বাচ্চাদের মতো লাগে দেখতে।একটা মানুষের মন খারাপের মেসেজ পেয়ে যদি তার হাসিমুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠে তাহলে যে কেমন লাগে তা বোঝানো মুশকিল। তবে এর একটা কারন আছে।সেটা হলো এই পর্যন্ত শুভ্রকে মন খারাপ করে থাকতে দেখিনি। যাই হোক,চিন্তা না করার জন্য মেসেজ দিলাম।ফিরতি মেসেজ পেয়ে বুঝলাম সে খুবই চিন্তিত।মনে মনে প্রার্থনা করতে লাগলাম আঙ্কেলের জন্য।

সকাল থেকে শুভ্রর মোবাইলটা বন্ধ।কি করব না করব বুঝতে পারছিলাম না।মাথায় যতো উল্টোপাল্টা চিন্তা ঘুরছিল।শেষ পর্যন্ত আর থাকতে না পেরে আন্টির নাম্বারে কল দিলাম। "হ্যালো,আন্টি। স্লামালাইকুম।আমি শুভ্রর ফ্রেন্ড। ওর কাছে জানলাম আঙ্কেল নাকি অসুস্থ। কিন্তু এখন ওর নাম্বার বন্ধ থাকায় খবর নিতে কল দিলাম।" অনেকটা ভয়ে ভয়ে এক নিশ্বাসে বলে গেলাম।আন্টি অনেকটা পরিচিত সুরেই আমার সাথে কথা বললেন।ভয়টা কেটে গেলেও শুভ্রর জন্য ভয় হচ্ছে।আমার এই কাজের জন্য শুভ্র ক্ষেপে যাবে না তো?

থার্টি ফার্স্ট নাইটের পার্টির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি সবাই মিলে। হঠাৎ শুভ্রর কল।রিসিভ করতেই,"কি খবর তিলি?"
"তিলি? এইটা আবার কি?"
"তোমার নতুন নাম দিলাম।ডার্লিং বললে কেমন যেনো বাংলা সিনেমাটাইপ মনে হয় তাই।"
"তিলি নামের অর্থ কি?"
"কোনো অর্থ নাই।তবে নামটার মাঝে একটা আবেগ আছে।বুঝসো?তা কি করো?"
"থার্টি ফার্স্ট নাইট পার্টির জন্য প্রস্তুতি নেই।"
" ও ,তার মানে তোমার মনটা ভালো।আসো তোমার মনটা খারাপ করে দেই।"
"কেন?"
"আমার মন খারাপ আর তোমার মন ভালো তা কি করে হয়?"
"যতই চেষ্টা করো লাভ নাই।"
"চেষ্টা করতে হবে না।তোমার যে মন খারাপ হইতেও সময় লাগে না আর ভালো হইতেও সময় লাগে না।"
"হুম।"
"দেখসো মন খারাপ করে দিলাম।"
"কই না তো।"
"আমি তোমারে হাড়ে হাড়ে চিনি।তুমি মিয়া আমার আম্মার নাম্বারে কল দিয়ে আব্বার খোঁজ নাও।আমারে তো পুরা কালার করে দিলা।"
"তোমার নাম্বার বন্ধ থাকায় দিসি আর আন্টি আমার সাথে ভালো করেই কথা বলসেন।উনি আমাকে চিনতে পেরেছেন।"
"তুমি তো এমনেই কালারড।তোমারে বলে কিসু হবে?ভালো হও।ভালো হইতে পয়সা লাগে না।"
"আচ্ছা রাখি।সবাই ডাকছে।"
মনটা আসলেই খারাপ হয়ে গেল।শুভ্রটা যে কি? বছরের শুরুতেই মনটা খারাপ করে দিল।ধুর।
দুইমিনিট পর শুভ্রর মেসেজ।
"বাবাকে সুস্থ করে বাসায় ফিরছি।মনটা ভালো তাই তোমার সাথে মজা নিলাম।enjoy the party & never lose ur hope.happy hope year"
মেসেজটা পড়া শেষ করতেই একটা অন্ধকার মুখ আলোকিত হলো হাসিতে।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×