শুভ সকাল।কেমন আছেন সবাই?অনেকদিন পর এলাম।তবে আজকে নিজের লেখা নিয়ে নয়।তার আগে তিছু কথা শেয়ার করতে ইচ্ছে করছে।
আমি ব্লগিং শুরু করি ২০১২সালের শেষের দিকে আমার বন্ধুদের নিজস্ব ব্লগে।হঠাৎ করে মাথায় এলো একটা গল্প।লিখে ফেললাম।তারপর বন্ধুকে পড়ে শোনানোর পর তাকে ব্লগে দেয়ার জন্য বললাম।সে টাইপ করে দিল কারণ সে সময় আমার নিজের কোনো কম্পিউটার ছিল না।আমার প্রথম দিকের বেশির ভাগ গল্পই লিখতাম পেন্সিল দিয়ে।তারপর সেই পৃষ্ঠাগুলো বন্ধুদের কাছে দিয়ে দিতাম।তার আগে একটা কাজ করতাম সেটা হলো গল্পগুলো পড়ে শোনাতাম বন্ধুদের।খুব ভালো লাগত এই কাজটা করতে।যাই হোক,তারপর ওরা টাইপ করে ওরাই পোস্ট করে দিত।পরদিন ওদের কাছ থেকেই জেনে নিতাম।খুব খুশি হতাম সব ধরনের মন্তব্য পেয়ে।একদিন হঠাৎ করেই ব্লগটা বন্ধ হয়ে গেলো।আমারও আর লেখা হতো না।কারণ ব্লগে লেখা আর ফেসবুক ওয়ালে,নোটে লেখার মধ্যে পার্থক্য আছে অন্তত আমার কাছে।যাই হোক,ব্লগে লেখাকালীন সময়ে অনেক লেখকের লেখা পড়েছি।আমার পড়া সবচেয়ে ভালো লাগার একটা লেখা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছি। অবশ্যই সেই লেখকের অনুমতি নিয়ে।আমার মতে,ভালো লেখা পড়া থেকে সবাই বঞ্চিত হবেন কেনো?অনেক বকবক করলাম।এবার পড়ে ফেলুন।আবারও বলছি এটা আমার লেখা নয়,আমার পড়া অন্যের লেখা। :-)
আমার যে বুড়ো হওয়ার বয়স হয়নি এখনো…
সামান্তা,
ভালো আছিস? জানি না, জানতে চাইও না। আসলে তুই ভালো আছিস কিনা তা আমি কোনদিন জানতে চাইও নি। চিঠি লিখছি, আর ছোটবেলায় মুখস্ত করা চিঠিগুলোর প্রথম বাক্যটা ছিল এইটা, তাই লেখা। এই চিঠি কি আসলেই তুই পাবি নাকি তাও জানি না। পেলে কি করবি? পড়বি নাকি ছিড়বি? জানি না। তোর কাছে আমার কোন প্রশ্ন নেই, ছিল না কোনদিন। সত্যি বলছি, ডানদিকের দেয়ালে লেজ নাড়িয়ে নিজের অস্তিত্ব জানান দেওয়া টিকটিকিটার কসম।
তোর চেহারা কি আগের চেয়ে সুন্দর হয়েছে, চশমাটা এখনো কি গোল্ডেন ফ্রেমের, ঠোটে কি এখনো সেই ঝলঝলে হালকা গোলাপী লিপস্টিক টা দিস। প্রশ্নবোধক চিহ্ন দেই নাই কারণ প্রশ্নই করি নাই। জানার কিছুই নাই, প্রশ্ন করব কেন শুধু শুধু। আজকে আমার মন খুব খুব ভালো আজকে আমার বয়স ষাট হল। হ্যাপি বার্থডে টু মি। সেই হিসেবে তোর হল ঊনষাট। মিছে মিছে ভয় পেয়েছিলি। ডাক্তারের কথা বিশ্বাস করিছিলি। আমার কথা বিশ্বাস করিস নি। আমি জানতাম তোকে যতক্ষন পাশে পাব, আমার কিছুই হবে না। এখন অবশ্য তুই পাশে নাই, আমার অনেক কিছুই হয়েছে। শুধু মৃত্যু হয় নাই। হাসিস না প্লিজ।
ভালবাসা, লাইলি-মজনু এইসব আমি কখনোই বিশ্বাস করি নাই। আজব মানুষের আজব ইমোশন। অথচ তুই এমন এক চ্যালেঞ্জ দিলি, সেই ইমোশন নিয়েই পয়ত্রিশটা বছর পার করে দিতে হল। যাই হোক অবশেষে আমার মুক্তি হল। এবং আমি এখনো বলব আমি তোকে ভালবাসি না। ঢঙ্গি একটা তুই, আরে আমি জানিই না ভালবাসা কি। তাহলে কাউকে ভালবাসার প্রশ্নই আসে না। গাধী একটা তুই, আমাকে কোনদিন বুঝলি না। বিশাল বদমাইশ আর বহুত ফাজিল তুই।
বুড়ি হয়ে গেছিস খুব। হাসি আসছে না বুঝি। আমি কিন্তু এখনো বুড়ো হয়নি, বুড়ো হওয়ার বয়স যে এখনো হয় নাই আমার। ভালো থাকিস। আগামী বছর ঠিক এই দিনে আমার আরো একটি চিঠি পাবি। ঐটাই শেষ। আর কোনদিন লিখব না তোকে।
রাকিব
চিঠিটা আরো একবার পড়লাম। অনেক্ষন হাত বুলালাম। তারপর সেই পুরানো বক্সটাতে রেখে দিলাম, খুব যত্ন করে। সেখানে আরো চৌত্রিশটা চিঠি আছে। হঠাৎ নিজের বয়সটা অনেক বেশি মনে হচ্ছে। বুক ফেটে কান্না আসছে কিন্তু চোখে জল নেই। কাঁদার মত শক্তিও নেই শরীরে। তবু বেচে থাকতে হবে। আরো একটি বছর। রাকিবের শেষ চিঠিটার জন্য। ৩৬টি চিঠি একই রাতে লিখা। কিভাবে লিখেছে কে জানে। ফাজিলটা এতটা ভালবাসত। অথচ কোনদিন স্বীকার করেনি। আমি না হয় একটা ভুল করেছি। বলেছি তাকে, যতদিন না বলবে আমাকে ভালবাসে ততদিন কোন কথা হবে না। চ্যালেঞ্জ করেছিল সেই, বলবে না ভালবাসে আমার বয়স ষাট হলেও না।