somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সৈয়দ মেহবুব রহমান
আমি মেহবুব । সামহোয়্যারইন ব্লগের সকল ব্লগারপাঠকভাইবোনদের আমার পক্ষ থেকে সালাম ও শুভেচ্ছা । আশা করি আপনাদের আমি আবহমান বাংলার সব সুন্দর রচনা উপহার দিতে পারবো ।।

বিশ্বাসে মিলায় বস্তু , তর্কে বহুদুর

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেক দিন আগে কোন এক গ্রাম ছিল । সুজলা সুফলা সেই গ্রাম যেমন ছিল সবুজ এ পরিপূর্ণ তেমনি ছিল সবদিক থেকে সমৃদ্ধ । গ্রামের মানুষের সুখ শান্তি , গোলাভরা ধান পুকুর ভরা মাছ কোন কিছুতেই কমতি ছিলনা । হঠাৎ করে এক বছর ভয়াবহ খরা শুরু হল । খরা বা একেবারে অনাবৃষ্টির কারনে সে বছর ফসল ভালো হলনা । অনেকের জমিতে মোটেই ফসল হলোনা । ব্যাপারটা এই এক বছরের উপর দিয়ে গেলে তে হতো । গ্রামবাসীরাও তাই মনে করেছিল । হয়তো এ বছর বৃষ্টি হয়নি তো কি হয়েছে । আগামী বছর বৃষ্টি হবে । ফসলের ক্ষতিও পুষিয়ে নেওয়া যাবে । কিন্তু পরবর্তী বছর সব ধারনা ভুল প্রমান করে বিগত বছরের থেকে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হল । চারদিকে প্রচণ্ড উত্তপ্ত পাথরফাটা রোদ আর লু হাওয়া বইতে শুরু করলো । অনেক বৃদ্ধ মানুষ গ্রীষ্মের প্রচণ্ডতা সহ্য করতে না পেরে মারা গেলো । গ্রামের সব থেকে গভীর পানযোগ্য জলাধারটা ও পর্যন্ত শুকানোর পথে । সমুহ বিপদের সম্ভাবনা আচ করতে পেরে গ্রামবাসী বুঝতে পারলো হয়তো কোন কারনে সৃষ্টিকর্তা তাদের প্রতি রুষ্ট হয়েছেন । তাই ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একদিন সমবেত প্রার্থনার আয়োজন করলো । তো নির্ধারিত দিনে সবাই হাজির হলো সেই স্থানে । যার যার ধর্ম মত আলাদা করে তারা প্রার্থনা শুরু করলো । কিন্তু সবাই যা মনে করেছিল তা আর ঘটলোনা , মানে প্রার্থনা শেষে বৃষ্টি তো হলোইনা , আকাশে মেঘের চিন্হও দেখা গেলোনা , যেমন রোদ তেমনই রইলো ।ফলশ্রুতিতে তখন সবাই নিরাশ হয়ে বসে পড়লো । একটু পরে একজন উঠে বললো , মনে হয় গ্রামের সবাই এখানে আসেনি । সে জন্য বৃষ্টি হচ্ছেনা । সবাই একে অপরের মুখের দিকে চাইতে লাগলো । এমন সময় খানিক দুর থেকে একটা বাচ্চা ছেলেকে দেখা গেলো । কিছু সময় পর ছেলেটি প্রার্থনা স্থলে হাজির হলো । কয়েকজন অতি উৎসাহী যুবক এসে হাজির হলো , আর ছেলেটিকে বলতে লাগলো কিরে ? তুই না আসাতে আমাদের পুরো গ্রামবাসীর প্রার্থনা বিফল গেলো । এখন তোকে কিভাবে শাস্তি দেব ভেবে পাচ্ছিনা । বল তোর দেরি হল কেন ? তখন ছেলেটি বললো , বাহ রে প্রার্থনার পর বৃষ্টি হবে না , আর বৃষ্টি হলে ভিজে যেতে হবে না ? সেজন্য বাড়ির পুরাতন ছাতাটা খুজছিলাম , তাই ছাতাটা খুজে পেতে দেরি হয়ে গেলো , সেজন্য দেরি হল । তখন এক যুবক রেগে তেড়ে এলো , এই বলে যে , বেয়াদবির আর যায়গা পাসনা তাই না , মুখে মুখে উত্তর করিস ? । এমন সময় দেখা গেলো আকাশে কালো মেঘ কোত্থেকে যেন উড়ে এসে গ্রামের আকাশ টা কে আস্তে আস্তে ঢেকে দিচ্ছে । এমন সময় প্রচণ্ড ঝড়ের সাথে বৃষ্টি শুরু হল । হঠাৎ ভিড়ের ভিতর থেকে একজন বৃদ্ধ এসে রাগান্বিত যুবকদের বললো তোমরা বাচ্চা ছেলেটির দেরিতে আসাটা এত খারাপভাবে দেখছো কেন ? এটা কি ভাবা যায়না যে এই ছেলেটি আসবার কারণে বৃষ্টি হলো । তখন বৃদ্ধ লোকটি সর্ব শক্তিতে হে গ্রামবাসী আমার দিকে তাকাও বলে চিৎকার করে গ্রামবাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করলো । গ্রামবাসী তার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই বৃদ্ধ বললো তোমরা কি জানতে না প্রার্থনা শেষে বৃষ্টি হবে ? তোমরা কেউ ছাতা নিয়ে আসোনি কেন ? তখন সবাই চুপ করে গেলো । এবার তিনি বললেন এই বাচ্চা ছেলেটির কাছ থেকে তোমাদের শেখা উচিত বিশ্বাস কি জিনিস , বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদুর । আর মনে করতে হবে আমরা সবাই পাপী , কে ভালো কে মন্দ তা আমরা বলতে পারিনা , ভালো মন্দের বিচার , দোষী আর গুণীর পার্থক্য আল্লাহ ছাড়া কেউ করতে পারেন না ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৩৪
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×