somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

# কোরআনের ভাষাগত সৌন্দর্য:পর্ব ৮ মাক্কা বনাম বাক্কা.।

৩০ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম



কোরআনের আরেকটি ইন্টারেস্টিং ভাষাগত সৈন্দর্য বিষয়ে আজ দেখবো।

আপনি কি এই দুটো নাম আগে শুনেছেন মক্কা নগরী সর্ম্পকে মাক্কা এবং বাক্কা ?

এ দুটি নামই কোরআনে আছে, একবার আল্লাহ বলেন মাক্কা আরেক বার অন্য সুরায় বাক্কা নাম ব্যবহার করেন তবে চলুন দেখা যাক কেন দুটি নাম ব্যবহার করেছেন:

ঐতিহাসিক ভাবে বলতে গেলে এ দুটি নাম একটি শহরের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়েছে যাকে আমরা মক্কা বলে জানি। মাক্কা শহরের আরেকটি ডাক নাম হলো বাক্কা। বাক্কা নামটি এসেছে "বাক" بكك – Bakk হতে যা আরবি ক্রিয়া/ শব্দ/verb। এটা বোঝায় ঘনবসতিপূর্ণ/ভিড়/জনাকীর্ণ/মানুষে পরিপুর্ন ইত্যাদি।

আশ্চর্যজনক ও বিস্ময়কর ব্যপার হলো যে আল্লাহ কোরআনে প্রতিটা শব্দ বিজ্ঞতা ও চমকপ্রদতার সাথে ব্যবহার করেছেন

এখন দেখুন যখন বাক্কা ব্যবহৃত হয়েছে কোরআনে সুরা আল ইমরানে যেখানে বাক শব্দটি আছে যা বোঝায় ঘনবসতিপূর্ণ/ভিড়/জনাকীর্ণ/মানুষে পরিপুর্ন আর আল্লাহ কোরআনে বাক্কা ব্যবহার করেছেন হজ্জের প্রসঙ্গে তিনি বলনে "ওয়া লিল্লাহি আলা-ন-নাসি হিজ্জু-ল-বায়াত" আর হজ্জ মানেই তো ঘনবসতিপূর্ণ/ভিড়/ও মানুষে পরিপুর্ন তাই এখানে কোন নামটা বেশি মানানসই হয় বাক বা বাক্কা তাই না? দেখুন:

إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِي بِبَكَّةَ مُبَارَكًا وَهُدًى لِّلْعَالَمِينَ
নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এ ঘর, যা মক্কায় (বাংলা অনুবাদে মক্কায় বলা আছে হবে বাক্কা) অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়। সুরা আল ইমরান সুরা নং ৩ আয়াত নং ৯৬

فِيهِ آيَاتٌ بَيِّـنَاتٌ مَّقَامُ إِبْرَاهِيمَ وَمَن دَخَلَهُ كَانَ آمِنًا وَلِلّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ الله غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ
এতে রয়েছে মকামে ইব্রাহীমের মত প্রকৃষ্ট নিদর্শন। আর যে, লোক এর ভেতরে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা লাভ করেছে। আর এ ঘরের হজ্ব করা হলো মানুষের উপর আল্লাহর প্রাপ্য; যে লোকের সামর্থø রয়েছে এ পর্যন্ত পৌছার। আর যে লোক তা মানে না। আল্লাহ সারা বিশ্বের কোন কিছুরই পরোয়া করেন না। -----সুরা আল ইমরান সুরা নং ৩ আয়াত নং ৯৭

কিন্তু যখন আল্লাহ মাক্কা নাম ব্যবহার করেন তখন হজ্জ সম্পর্কে কিছু বলা হয় নি শুধু মক্কা নগরী বিষয়ে বলেছেন দেখুন:

وَهُوَ الَّذِي كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُم بِبَطْنِ مَكَّةَ مِن بَعْدِ أَنْ أَظْفَرَكُمْ عَلَيْهِمْ وَكَانَ اللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرًا --তিনি মক্কা শহরে তাদের হাত তোমাদের থেকে এবং তোমাদের হাত তাদের থেকে নিবারিত করেছেন তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করার পর। তোমরা যা কিছু কর, আল্লাহ তা দেখেন। --- সুরা আল ফাতাহ সুরা নং ৪৮ আয়াত নং ২৪

এবং كَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِّتُنذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَتُنذِرَ يَوْمَ الْجَمْعِ لَا رَيْبَ فِيهِ فَرِيقٌ فِي الْجَنَّةِ وَفَرِيقٌ فِي السَّعِيرِ --এমনি ভাবে আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মক্কা ও তার আশ-পাশের লোকদের সতর্ক করেন এবং সতর্ক করেন সমাবেশের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে। --৪২) সূরা আশ-শুরা আয়াত নং ৭

এই ক্ষুদ্র বিষয় যা আপনি ও আমি হলে বলতাম মাক্কা বা বাক্কা একই জিনিস একটি নাম বললেই হলো, একই অর্থ বহন করে। কিন্তু কোরআনের নির্ভুলত যথাযথতা ও স্পষ্টতার লেভেল অনেক উপরে যা অন্য কোন কিছুর সাথে তুলনা হয় না। আমরা মানুষরা সেই লেভেলে চিন্তা করেতে পারি না আমরা সেই লেভেলের একুরেসি/ যথাযথতা মেইন্টেন করতে পারি না আমাদের স্বীমাবদ্ধতার কারনে।

একটি বিষয় যা আমরা কোরআন হতে শিখতে পারি যে আমাদের কি পরিমান কেয়ারফুল হতে হবে, কথা বলার সময় আমাদের কি পরিমান খেয়াল রাখতে হবে যাতে অবান্চিত ও খারাপ কথা বা ভুল কথা না বলি তাই না? আর যারা দেশের আসনে বসেন বা যারা আমাদের প্রতিনিধি তদের তো কথা বলার সময় আরো বেশি খেয়াল রাখতে হবে , কিন্তু আতিব দুঃখের সাথে বলতে হয় যে আমাদের প্রতিনিধিরা একটি ক্ষমতা পেলেই বেমালুম ভালে যান তাদের কথা শুনলে সাধারন জনগন তাদের মনে মনে গালি দিয়েই বসে। আরেক দল রয়েছে যারা জনগনকে ভুল বুঝিয়া ভুল কথা প্রচার করে তাদেরও কথার লাগাম না দেয়ার কারনে দেশের পরিস্থিতি খারাপ হয়। তাদের জন্য একটি কথাই আল্লাহ আমাদের উপদেশ দেন "
خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِين-----আর ক্ষমা করার অভ্যাস গড়ে তোল, সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খ জাহেলদের থেকে দূরে সরে থাক।". -সুরা আরাফ সুরা নং , আয়াত.১৯৯

তাই আমাদের সবার উচিৎ আমাদের কথার লাগাম দেয়া এটাই মহানবীর সুন্নাহ এবং আল্লাহ শেখানো ম্যনার। কারন আল্লাহ খুবই সুক্ষ ভাবে সঠিক ভাবে যথাযথ ভাবে কথার ,শব্দের ও নামের প্রয়োগ করেন।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক ও সরল পথে পরিচালিত করুন---আমিন।

তথ্য সুত্র: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৪:০৪
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×