somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মিজানুর রহমান মিলন
আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

৯/১১। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বয়ং কোন পক্ষে ছিল এবং আছে?

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৯/১১। ২০০১ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী আক্রমণের শিকার হয়। একই দিনে একই সময়ে ৩০০০ মানুষের প্রাণহানী হয় যা বিশ্ব ইতিহাসের অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। এই একটি ঘটনাই বিশ্ব ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করে দিয়েছে এবং সেই পরিবর্তনের ধারা এখনও চলমান। সেই দিনের ঘটনার পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বিশ্বকে দুই ভাগে বিভক্ত করেন-সন্ত্রাসের পক্ষে ও বিপক্ষে। এর মাঝে নিরপেক্ষ অবস্থান বলে কিছুই নাই এবং এথিক্যালি থাকার কথাও নয়। প্রশ্ন হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বয়ং কোন পক্ষে ছিল এবং আছে?

৯/১১ এ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা আল কায়েদা নামের এক জঙ্গী গোষ্ঠীর সদস্যদের দ্বারাই ঘটেছিল এটা নিয়ে এখন পর্যন্ত সন্দেহের অবকাশ নাই। সেই দিনের ঘটনার পর আমেরিকা সারা বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল এবং আজকে ২০২০ সালে এসে প্রশ্ন করা যেতেই পারে আমেরিকা কি সত্যি সেদিন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল? নাকি আমেরিকার যুদ্ধবাজেরা এই হামলাকে উপজীব্য করে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুধুমাত্র স্লোগান হিসাবে ব্যবহার করেছিল?

ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে যে ১৯ জন সন্ত্রাসী হামলা করেছিল তাদের ১৫ জনই ছিল সৌদি আরবের নাগরিক, ০২ জন ছিল আরব আমিরাতের! আল কায়েদা ও তালেবানের উত্থানের পিছনে যে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতাদর্শ কাজ করেছে তা হল সৌদি আরবের ওহাবি মতাদর্শ। আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত উৎখাত করতে আমেরিকা এই মতাদর্শকে কাজে লাগিয়ে আল কায়েদা ও তালেবানের জন্ম দিয়েছে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত সৌদি আরব ও আরবের রাজতান্ত্রিক শাসকেরা সারা বিশ্বে জঙ্গীবাদ বিস্তারের জন্য নানাভাবে অর্থায়ন করে যাচ্ছে। টাইম ম্যাগাজিন এই নিয়ে লিখেছে 'সৌদি অর্থে বিশ্বব্যাপি জঙ্গীবাদ"। সোভিয়েত উৎখাত করে তালেবানরা যখন আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করলো তখন তালেবান সরকারকে বিশ্বের মাত্র তিনটি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছিল-সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও পাকিস্তান। অথচ মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের পরেই সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের সাথে আমেরিকার নিখুত দহরম মহরম সম্পর্ক! শুধু তাই নয় ইসরায়েলের সাথে আর পরকীয়া নয় এখন এই দুই আরব দেশের সাথে বিয়ে পড়াতে ব্যস্ত আমেরিকা।

এখানে একটি ঘটনা উল্লেখ না করলেই নয়- ৯/১১ এর ট্রাজেডির দুইদিন আগে আফগানিস্তানে তালেবান বিরোধী মূল নায়ক পানসিরের সিংহ আহমেদ শাহ মাসুদকে হত্যা করা হয়। ধারণা করা হয় এটা ছিল মার্কিন ষড়যন্ত্রের ফল।

৯/১১ এর ট্রাজেডির পর আমেরিকার নিওকনেরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আড়ালে রেজিম চেঞ্জ নামে দেশে দেশে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু করলো। বলি হল আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া ও ইয়েমেনের লাখ লাখ মানুষ। ইরাক ও সিরিয়া যুদ্ধের ফল হিসাবে উত্থান হল নতুন নতুন ভয়ংকর জঙ্গী গোষ্ঠীর-আইসিস, আল নুশরা ইত্যাদি। সিরিয়ার আসাদ সরকার উৎখাতে এবং ইরাকের দখল দারিত্ব দীর্ঘায়িত করতে জন্ম দেওয়া হল আইসিস ও আল নুশরাসহ আরো ভয়ংকর কিছু জঙ্গী গোষ্ঠীর। ইয়েমেনের হুথিদের দমন করতে সেখানেও সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের সহযোগিতায় আল কায়েদাকে সহায়তা করেই যাচ্ছে আমেরিকা। আবার আলকায়েদাসহ বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠী দমনের অজুহাতে এসব দেশগুলিতে আমেরিকা নিজের অনাকাঙ্ক্ষিত উপস্থিতির বৈধতা আদায় করে নিচ্ছে!

৯/১১ এর ট্রাজেডিকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসাবে নয় বরং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী শাসকদের উৎখাতের জন্য দেশে দেশে মার্কিন আগ্রাসন, হামলা ও দখল দারিত্বকে বৈধতা দেওয়ার জন্যই আমেরিকা শুধুমাত্র টুল হিসাবে ব্যবহার করেছে। সাম্প্রতিককালে ট্রাম্প যেমনটি বলেছেন, পেন্টাগনের কর্মকর্তাগণ এবং সামরিক শিল্পের মালিকেরা অস্ত্র বিক্রির জন্যই নতুন নতুন যুদ্ধের আয়োজন করেন।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×