কদিন ধরে সিলেটে অবিরাম বৃষ্ঠি। বৃষ্ঠি দেখলেই তোমার কথা খুব মনে পড়ে। বৃষ্ঠি তে ঝাপাঝাপি তুমি একদম পছন্দ করতেনা। প্রায়ই বৃষ্ঠি স্নাত দুপুরে আমাকে আবিষ্কার করতে বড় পুকুরটাতে। রাগী চোখে তাকিয়ে থাকতে, কিছু বলতেনা। তারপর আমার জ্ব্বর আর তুমার নিদ্রাহীন, আহারহীন সারারাত্রি। মা, এত ভালোবাসো কেনো তুমি আমাকে?
গতবার যখন বাড়ি থেকে আসছিলাম তখনও বৃষ্টি হচ্ছিল। কোন রকমে উঠানটা পেরিয়ে আর পেছনে ফিরে থাকাইনি। জানি তুমি কাদছিলে। আমার চুখ ও খুব জ্ব্বলছিল। সত্যি বলছি মা, ঐ টা কান্না না, বৃষ্টির জল ছিল!!
চার মাস হয়ে গেল তুমাকে দেখিনা। কখনও Exm-র ঝামেলা, কখনও টিউশনি আবার কখনো টাকা-পয়সার টানাটানি। এটা তুমাকে বলা যাবেনা মা। এমনিতেই ছোট দুইটা ভাই-বোন নিয়ে তুমি খেয়ে না খেয়ে কেমনে আছ আমি জানি। কতদিন নতুন শাড়ি পরতে তুমাকে দেখিনা। কখনো প্যারালাইজড বাবার ঔঘধ, কখন ও আমার মেস ভাড়া, আবার কখন ও ছোট বোনের Exm-র ফী। দুধ বেচার টাকা দিয়ে কতোটাই বা সপ্ন পুরন হয়? গত ঈদে বড় মামার দেওয়া শাড়ীটা ছোট ভাইয়ের জামা কেনার আবদার রাখতে যখন বিক্রি করে দিলে। বিশ্বাস কর মা ঐ একবারই আমি কেদেছিলাম, কিছুই করতে পারিনি।
জানি তুমি এত কষ্ঠের বিনিময়ে আমাকে নিয়ে একটা স্বপ্ন দেখ। একটা চাকরীর স্বপ্ন। কিন্তু মা তুমি জাননা যে আজকাল মামা, চাচা ছাড়া ঐগুলা হয় না। আমার যে ঐসবের কিছুই নেই মা। বইগুলো পড়ার টেবিলে এলোমেলো পড়ে আছে। রেজাল্ট টাও দিনদিন খারাপ থেকে খারাপ হচ্ছে। পড়তে বসার চেষ্টা করি, মাথায় কিচছু ঢুকেনা। গতকাল মেসে রুমমেট Birthday Party দিল। বিরিয়ানী দিয়ে খাবার, সে কি কাড়াকাড়ি। আমার ভাল লাগে নি। ভালো খাবারে আমার অরুচি লাগে মা। তুমার অনাহারী মুখটা বড় কষ্ঠ দেয়। দিনদিন নিজেকে ভারসাম্য হীন মনে হচছে। সবাই যখন সুন্দর স্বপ্ন দেখার প্রত্যাশায় ঘুমিয়ে পড়ে আমি তখন খোলা জানালায় থাকিয়ে থাকি আকাশের দিকে। না বলা কষ্ঠ গুলো ঐ বিশালতায় বলতে খুব ইচ্ছে করে। হতাশার চাদরে আচ্ছন্ন আমি সিগারেটের ধুয়ায় নিজেরে জড়িয়ে রাখি। মাস শেষ হয়ে এল। গতমাসের মেস ভাড়াটা ও বাকি। দো্যা কর মা, তুমার দো্যাই যে বড্ড দরকার।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





