somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় অর্থমন্ত্রী, আমি কিছু বলতে চাই......

২২ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমেরিকার নির্বাচন। আফ্রিকান ওবামা'র "CHANGE WE NEED" স্লোগানে আন্দোলিত আমরা নতুন প্রজন্ম। ঘনিয়ে আসে বাংলাদেশের ও নির্বাচন। CHANGE-এর আবেগী টোপ কে ব্যবহার করতে একটু ও ভুল করেনি আওয়ামি লীগ। তার সাথে যোগ হয় ডিজিটাল কল্পকথা। রঙিন রঙিন স্বপ্নে ভেসে যেতে থাকি আমরা ও। দলবেধে উঠে পড়ি ফোটা হওয়া নৌকায়। শুধুই কি ডিজিটাল স্বপ্নে পা বাড়িয়ে ছিলাম সাগর পানে? মনে হয় না। আমি বাংলাদেশের কথা জানিনা। আমি বলব আমার কথা, আমার বন্ধুদের কথা, আমার স্বপ্ন আমার নিঃশ্বাস, আমার নাড়ি সিলেটের কথা। আরিফ নামক জনৈক গুন্ডার রাজত্যে তখন অসহায় আমরা। আমি অন্য কিছু বলতে চাইনা। আমি দেখেছি কেমনে আমার বাসার সামনের জায়গাটা দখল করে নিল কুলাঙ্গারটা। মসজিদের জন্য নির্ধারিত জমি বউয়ের নামে লিখে নিতে একটু ও কাঁপেনি ওর বুক। প্রতিদিন বাজার শেষে বাসায় এসে ধড়ফড় করত আমার বাবার বুক, সঙ্গে আমারও। পানির গ্লাস আগায়া দিতাম। বাবা এক চুমুক দিয়েই রেখে দিত। যেন কেউ আবার টাকা চেয়ে বসে এই ভয়ে। বাইরে বের হইলে মা ভয়ে তসবিহ পড়ত সারাক্ষণ। কখন কোথায় বোমা ফাটে কে জানে। রাজশাহীতে বাংলা ভাইয়ের আস্ফালন আমার নিষ্পাপ সিলেটের মাটিকে ও কাঁপায়া দিত।

দিন বদলের আশায় ঘুণতে থাকি প্রহর। স্বপ্ন দেখায় আওয়ামিলীগ। বাবা বলতেন আবার যদি বিএনপি ক্ষমতায় বসে তাহলে আমাদের পাড়ার মুড়ে মুড়ে দেখা যাবে টঙ্গ। চায়ের না, চাঁদার টঙ্গ। আমরা লাইন ধরে টাকা দিয়ে আসব আরিফ জানো্যারটাকে। আমি আজ জানি, বাবা কম বৈ বেশী বলেননি। কেমনে কেমনে জানি আল্লাহ বাচিঁয়ে দেন আমাদেরকে। লগি-বৈঠার কাহিনী নিয়া কিছু নাই বা বললাম। আসে নির্বাচন। প্রার্থী হয়ে আসেন আপনি। আমার বাবার কাছে দেবতা। বাবা উৎফুল্লিত। আমিও। জানিনা কেন? হয়ত আরিফ রাজত্য থেকে মুক্তির আশা, আবার হতে পারে নতুন দিনের প্রত্যাশা। আমি জানি লাইন ধরে আপনাদের ভোট দিয়েচে আমার ভার্সিটির বন্ধুরা ও। কিন্তু আমাদের স্বপ্নকে ফিকে করে দিতে একটুও দেরি করেননি আপনারা। কিন্তু কেন? কি দূষ ছিল আমার বন্ধুদের? স্বপ্ন দেখা? আপনারাই জানেন....

আমার বাবার হাসি লেগে থাকা মুখটা হটাৎ এত কালো হয়ে গেল কেন? কেন আমার বাবা আমার সামনে তার মুহিত দেবতা নিয়ে কিছু বলতে পারেনা, আপনি কি বলতে পারবেন?

অর্থমন্ত্রী সাহেব, আপনার সঙ্গী-সাথীদের কথার মারপ্যাঁচে মুগ্ধ বাবা ৩৩ লাখ মানুষের মত সহায় সম্বল সব নিয়া নামে শেয়ার নামক জুয়া খেলায়। আমি ঐ ব্যবসা বুঝিনা। একটা একশ টাকার জিনিসের দাম ২০০ টাকা পর্যন্ত আমি মানতে পারি কিন্তু কেমনে ৬ হাজার টাকা হয় আমি জানিনা। আমি সত্যি বুঝিনা কেমনে একটা জিনিসের দাম ৫ মিনিটে অর্ধেকে নেমে যায়। মাননীয় অর্থমন্ত্রী, আপনি আমার প্রতিবেশী। আমি শুনেছি আপনি বিশাল বড় ডিগ্রী ওয়ালা অর্থনীতিবিদ। এই ক্ষুদ্র আমি বুঝি ঐখানে খেলা চলে। সারা বাংলাদেশের মানুষ বুঝে। খালি বুঝেননা আপনি আর আপনার ডিগ্রীওয়ালা সাঙ্গ-পাঙ্গরা। মাননীয় অর্থমন্ত্রী, আমার বাবাকে পথে বাসানোর জন্য আমি আপনাকে ভোট দেইনি। যে সিলেটের মানুষগুলো আপনার নামে উন্মাতাল ছিল তারা আজ যায় আপনার বাসায় আগুন জ্বলাতে। কিন্তু কেন, আপনি কি কিছুই বুঝেননা?

কয়দিন থেকে বাসা সেই আগের অবস্তায় ফিরে গেছে। সেই ৪-৫ বছরের আগের অবস্তায়। যখন বাবার পানির গ্লাস ধরা আঙুল ঠকঠক করে কাঁপত সেই সময়ে। বাবার সারা জীবনের সঞ্চয় একটুকরো জমি। তাতেও লোভ হয় আপনাদের সোনার ছেলেদের। এখন কেমনে কি হবে আমরা জানিনা। আমার বাবার বোবা কান্না আমার আর সহ্য হয়না, আমার মায়ের আর্তনাদ আমার আর ভালোলাগেনা। মাননীয় অর্থমন্ত্রী, আমি অসহায়। অসম্ভব অসহায়। আপনার খোদার দোহাই লাগে একটু দেখেন। একটা বারের জন্য প্রমাণ করে দিন আমার বাবার স্বপ্ন মিথ্যা ছিলনা, আমার স্বপ্ন মিথ্যা ছিলনা, আমার লাইন ধরে রোঁধে পোড়ে ভোট দিতে যাওয়াতে কোন ভূল ছিলনা...।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×