somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুজিব রহমান
সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

নারী নিপীড়নের পরিসংখ্যা সব বলে না!

০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পরিসংখ্যান বলে ভারতে প্রতি দশ লাখে ১.৮ জন নারী ধর্ষিতা হয় আর বাংলাদেশে ১০ জন। অর্থাৎ ভারতের চেয়ে সাড়ে পাঁচগুণ বেশি নারী ধর্ষিতা হয়। এসব পরিসংখ্যান হয় পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী। ভারত-বাংলাদেশে বহু নারী মুখই খুলতে পারে না। সমাজ সব দোষ চাপিয়ে দিতে চায় ওই নারীর উপরই। তারপরও সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক নারী নিপীড়নের খবর আসছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজনীতি করে নষ্ট হয়ে যাওয়া বখাটে যুবকরাই জড়িত। সিলেটে একদল রাজনৈতিক কর্মী স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ধর্ষণ করলো স্ত্রীকে। মুন্সিগঞ্জে ৭২ বছরের এক বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করে এক বখাটে। নোয়াখালীতে এক নারীকে উলঙ্গ করে নিপীড়ন করে স্থানীয় বখে যাওয়া যুবকরা। কিন্তু এমন আরো হাজারো ঘটনাই অপ্রকাশিতই থেকে যায়।

সৌদি আরবে ধর্ষণের ক্ষেত্রে কড়া আইন রয়েছে৷ তা সত্ত্বেও ধর্ষিতার সংখ্যা সেখানে যথেষ্টই বেশি৷ ধর্ষক তখনই শাস্তি পাবে, যখন এমন কাজের চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য পাওয়া যাবে৷ তাই ধর্ষণ প্রমাণ করা বেশ কঠিন এখানে৷ শুধু তাই নয়, একা ঘরে ধর্ষণের পর সেই নির্যাতিতা যদি একাই রাস্তায় বের হয় তবে সেও শাস্তি পাবে৷ এখানে, স্ত্রীর সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকে ধর্ষণের আওতায় ধরা হয় না৷ আবার সেখানে বিদেশ থেকে যাওয়া নারী কর্মীদের অহরহই ধর্ষণ করা হয়। এই নারীরাও কোন আইনী সাপোর্ট পায় না। ধর্ষিতার পক্ষে চারজন সাক্ষী পাওয়া বাস্তব সম্মত নয়। হয় ওই চারজন ধর্ষকদের পিটিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করবে নয়তো নিজেরাও সামিল হবে। চার জন সাক্ষী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ধর্ষণ হতে দেখবে? হাস্যকর আইন। ইরানে প্রচুর গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে পুলিশ কর্তৃপক্ষ "হিজাব" পরিধান না করার জন্য ধর্ষিতাদের দোষারোপ করে। গণ ধর্ষণের শিকার ধর্ষিতাকেও উল্টো দোষারোপ করে গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটে ওখানে। বাস্তবিক আরব ও পারস্যে ধর্ষণের প্রকৃত চিত্র পাওয়া অসম্ভব। বাংলাদেশ ও ভারতেও। যুক্তরাষ্ট্র ও সুইডেনে ধর্ষণ অনেক বেশি দেখা যায় পরিসংখ্যানে। সেখানে অধিকাংশ নারীই পারে থানায় অভিযোগ/মামলা করতে। তাই পরিসংখ্যান এসব ক্ষেত্রে কোন সত্যই প্রকাশ করে না।

ভারতের জন্য আরেকটি পরিসংখ্যান রয়েছে যা ভিন্ন তথ্য দেয়। নারীদের জন্য পৃথিবীতে সবচেয়ে অনিরাপদ দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ভারত। অন্য চারটি দেশ হল কঙ্গো, কেনিয়া, ব্রাজিল, মেক্সিকো। ভারতে গণধর্ষণ, ঘরোয়া অত্যাচার, মানব পাচার, প্রচুর পরিমাণে মেয়ে শিশু হত্যার ঘটনা ও পতিতালয়ে বিক্রির ঘটনা ঘটে। সেবাদাসী/দেবদাসী হিসেবেও ওখানে নারীরা নিপীড়িত হয়। পরিসংখ্যান মতে, গত ৩০ বছরে মেয়ে শিশু হত্যার কেস ৫ কোটি ছাড়িয়ে গেছে! পরস্পর বিরোধী পরিসংখ্যান।

ইতালিতে কত শতাংশ নারী কর্মজীবী? আর বাংলাদেশে কতজন নারী সারাদিন ঘর থেকেই বের হয় না? দুটি ক্ষেত্রেই উত্তর অধিকাংশ। এককালের মাফিয়াদের দেশ ইতালিতে এখন ধর্ষণের বা গণধর্ষণের খবর পাওয়াই যায় না। পত্রিকায় রিপোর্ট দেখি গভীর রাতেও ইতালিতে নারীরা নিরাপদ। রাতে দক্ষিণ এশিয়া, আরব/পারশ্যে বা আফ্রিকায় নারীদের দেখাই যায় না। নারীরা এসব দেশে সাধারণত একা একা চলাফেরাও করে না। ধর্ষণে শীর্ষ দশটি দেশের মধ্যে আফ্রিকার দেশই সাতটি। ধর্ষণের সংজ্ঞাতেও পার্থক্য রয়েছে দেশে দেশে। বাংলাদেশে নিজ স্ত্রীকে ধর্ষণের বিষয়টি হাস্যকর মনে করা হবে কিন্তু সুইডেনে এটাও ধর্ষণ। আবার ধর্ষণের কমপক্ষে ৮০% ঘটনা থেকে যায় অপ্রকাশিত। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে বাংলাদেশে প্রায় ৮৭ ভাগ নারী পরিবারেই যৌন-নিপীড়নের শিকার। এদের প্রায় সকলেই বিষয়টি গোপন করে যায়। বাংলাদেশেও ৮০% ধর্ষণের ঘটনা ঘটে পরিচিত লোকদের দ্বারাই। এসব তথ্য প্রকাশ করতে পারলেও ধর্ষণ কমে আসতো। আমেরিকা ও সুইডেনে এটা প্রকাশ করার প্রবণতা বেশি তাই পরিসংখ্যানেও ধর্ষণ বেশি। ভারত-বাংলাদেশের নারীরাও এসব গোপন রাখতে বাধ্য হয় তাই বিপুল নিপীড়নের শিকার হয়েও পরিসংখ্যানে সেই নিপীড়নের তথ্য নেই তণুকে কে হত্যা করেছে তার তথ্যের মতোই। নুসরাতের নিপীড়ক সিরাজ মাওলানার বিরুদ্ধে বহু যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ছিল যার কোনটাই পরিসংখ্যানের আওতায় ছিল না। শুধু নুসরাত মামলা করেছিল বলেও না, যদি ওভাবে খুন না হতো তবে সিরাজ মাওলানা পবিত্রই থেকে যেতো।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৪২
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×