somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুজিব রহমান
সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

কি আছে পাথরে, কেন পাথর?

১৬ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পাথর সাধারণত খনিতেই পাওয়া যায়। এগুলো বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের যৌগ। যেমন রুবি মূলত অ্যালুমিনিয়াম এবং ক্রোমিয়ামের সংমিশ্রণে গঠিত একধরনের যৌগ থেকে তৈরি হয়। সাপের মাথায় যে রত্ন পাওয়া যায় বলা হয় তা হল এই রুবি। রুবিকে বাংলায় বলে চুনি বা মানিক, পদ্মরাগমণি, রক্তরাগ ইত্যাদি। বাস্তবিক সাপের মাথায় কোন মণি থাকে না। পাথর এতো সুন্দরভাবে খনিতে থাকে না। খনি থেকে উঠানোর পরে একে কেটে সুন্দর আকার দেয়া হয়।পোখরাজ পাথর এর মধ্যে যে সকল রাসায়নিক উপাদান রয়েছে তা হল- অ্যালুমিনিয়াম, অীক্সজেন, হাইজ্রোজেন, সিলিকন ও ফ্লুয়োরিন। গোমেদ এর মধ্যে আছে- লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন, অক্সিজেন। বৈদুর্যমণি, চন্দ্রকান্তমণি ইত্যাদি পাথর অ্যালুমিনিয়াম যৌগ। হিরা আবার শুধুমাত্র কার্বণ মানে কয়লা থেকে তৈরি হয়। কয়লার খনিতেই পাওয়া যায় হিরা। উচ্চ চাপ ও তাপ প্রয়োগ করে এখন কৃত্রিমভাবেই হিরা বানানো হচ্ছে।মুক্তা তৈরি হয় ঝিনুকের ভিতরে। ঝিনুকের ভিতরে কোনভাবে বালুর কণা ঢুকে গেলে প্রদাহ তৈরি হয়। সেই প্রদাহ থেকে রক্ষার জন্যই ঝিনুকের শরীর বালুর চারদিকে একটি আবরণ তৈরি হয় যাতে শরীরে ব্যথা পাওয়া না যায়। এই আবারণ বড় হতে হতে মুক্তার আকার হয়। বর্তমানে কৃত্রিমভাবেই ঝিনুকের মধ্যে বালুর কণা ঢুকিয়ে মুক্তার চাষ করা হচ্ছে। আপনার হাতের মুক্তা হল ঝিনুকের কষ্টের ফসল।প্রবাল সমুদ্রের নীচে পাওয়া যায়। সেখান থেকে তুলে এনে মোটামুটি একটা আকৃতিতে কাটার পর শুকিয়ে পাথরে রূপ দেয়া হয়। সামুদ্রিক প্রবালরাই তৈরি করে এটি।


জ্যোতিষিরা মানুষের শরীরে গ্রহ-নক্ষত্রের খারাপ প্রভাবের কথা বলেই পাথর গছিয়ে দেয়। আপনার শরীরে সূর্যের যে প্রভাব তা আমার শরীরেও একই সময়ে একই প্রভাব। সূর্যের আলো ছাড়া পৃথিবী প্রাণশূন্য হয়ে পড়বে। সবার জন্যই এক। কিন্তু ওরা মওকা বুঝে আপনাকে বলবে- আপনার উপর রবির কুপ্রভাব রয়েছে। এটা কাটাতে হলে পাথর লাগবে। আপনি ধনী হলে বলবে- পদ্মরাগমণি বা চুনি মানে রুবি লাগবে আর গরিব হলে বলবে সূর্যকান্তমণি লাগবে। পাথর বিক্রি করাই মূল কথা। সূর্যের সাথে লাল রঙের একটা সম্পর্ক আছে। আপনাকে বিশ্বাসের জগতে ধররে রাখতে এসব গরুত্বপূর্ণ। এজন্য চন্দ্রের কুপ্রভাবের কথা বলে আপনাকে গছিয়ে দিবে চন্দ্রের মতো সাদা/রূপালী রঙের মুক্তাকে। মুক্তার দামে রয়েছে বিস্তর প্রভেদ। গরিবদের জন্য রয়েছে চাষের মুক্তা অথবা চন্দ্রকান্তমণি। ওদের জালে ধনী গরিব সব অন্ধবিশ্বাসীই আটকে যায়।রাহুর প্রভাব আরো আজব! হিন্দু ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী রাহু হল একটা দানবের কর্তিত মুখ। সেটা আকাশে ঘুরে বেড়ায়। যখনই সূর্য বা চন্দ্রকে পেয়ে যায় খপ করে গিলে ফেলে। কিন্তু কাটা মাথা থাকায় তা গলা দিয়ে বেরিয়ে যায় বলে আমরা রক্ষা পাই। আজ বিজ্ঞান প্রমাণ করে দিয়েছে- চন্দ্রের আড়ালে পড়ায় সূর্যগ্রহণ হয় আর পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ায় চন্দ্রগ্রহণ হয়। অথচ জ্যোতিষিরা এখনো সেই রাহুর ভয় দেখিয়ে, রাহুর প্রভাবের দোহাই দিয়ে বিক্রি করছে পাথর। রাহুর প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য আপনাকে গছিয়ে দিচ্ছে গোমেদ। ওই দানব অসুরের মাথাবিহীন শরীরটিও নাকি আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছো। তার নামই কেতু! হা! হা! কি হাস্যকর। বিস্ময়কর হল ওই কেতুর প্রভাবও নাকি আছে মানুষের শরীরে। ওই প্রভাব থেকে বাঁচানোর কথা বলে গছিয়ে দিবে বৈদুর্য মণি পাথর। একেক গ্রহেরও নাকি প্রভাব রয়েছে একেক জনের শরীরে! তার থেকে রক্ষার জন্য গছিয়ে দিচ্ছে পাথর। বুধের প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য পান্না, শুক্রের প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য হিরা ও শ্বেত প্রবাল, মঙ্গলের প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য রক্ত প্রবাল, বৃহস্পতির প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য পোখরাজ, শনির প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য নীলা গছিয়ে দিবে। দামের পার্থক্য আছে। গরিবদের জন্য গ্রহের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা রয়েছে।

কত হাস্যকর ভাবেই না মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। অথচ মানুষ বুঝতেই পারছে না তাদের কিভাবে মুরগী বানানো হচ্ছে। হাতে পাথর দেখেই বুঝে নিবেন- এই লোকটিকে জ্যোতিষিরা মুরগী বানিয়ে ঠকিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×