somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুজিব রহমান
সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

জামিনে মুক্ত হয়েছেন শরিয়ত সরকার ও রীতা দেওয়ান

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শরিয়ত সরকার চারমাস আগেই জামিনে মুক্ত হয়েছেন। খবরটি জাতীয় কোন দৈনিকেই দেখিনি। করোনা সংকটে সারাদেশেই গানবাজনার অনুষ্ঠান প্রায় বন্ধ। মাত্র কয়েকটি অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। ভাববাদী দর্শনের মানুষেরাও স্রষ্টারই আরাধনা করেন একভাবে। তারা গানের মাধ্যমেই ধর্মের কথা বলেন, স্রষ্টার আরাধনা করেন। এরপরও গানবাজনা না করার জন্য তিনি অহরহই হুমকি পান অন্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীর কাছ থেকে। ভাল লাগলো দেখে যে, তিনি গানবাজনা ছাড়েন নি। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জঙ্গি গোষ্ঠীর হুমকি ধামকি ও হয়রাণিমূলক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেছেন। পৃথিবীতে ৪৩০০টি ধর্ম। প্রত্যেক ধর্মের মানুষই নিজ ধর্মকে একমাত্র সত্য বলে ধরে নেয়। আবার অনেক ধর্মের ভিতরেও বহু মতপথ রয়েছে। সবাই সবার বিরুদ্ধে থাকে। নিজের অন্ধ বিশ্বাসটাকে সঠিক ধরে, অন্যের বিশ্বাসকে সকলেই ভ্রান্ত বলে। এর বাইরেও বহু মত-পথ রয়েছে। সকল বিশ্বাসীরাই অলৌকিক সত্ত্বার আরাধনা করেন নিজ দর্শন অনুযায়ী। শরিয়ত বয়াতিদেরও একটি দর্শন রয়েছে। তারা গান বাজনা করেই স্রষ্টাকে খুশি করতে চান। তারা ভুল না শুদ্ধ সেটা স্রষ্টাই বিচার করবেন। কিন্তু অনেকেই নিজেকে স্রষ্টার স্থানে স্থাপন করে নিজেই আখেরাতের বিচার এখনই করতে চায়। শরিয়ত বয়াতি তাদের আক্রোশের শিকার।

গানের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে আরেক বাউল শিল্পী রীতা দেওয়ানের নামেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয় গত ফেব্রুয়ারিতে। আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। আজ তিনিও জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। পালাগানের একটি ধরন রয়েছে। মঞ্চে তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন এবং আসর মাতিয়ে রাখেন।শ্রোতারা ভিন্ন মত শ্রবণ করেন এবং সত্যটা বুঝার চেষ্টা করেন। এই বিতর্কের মধ্য দিয়েই সমাজ আগায়, মানুষের বিকাশ ঘটে। তাদের বক্তব্যের খণ্ডন মঞ্চেই হয়। তাদের খণ্ডিত বক্তব্য উপস্থাপন করে তাদের জেল খাটানো কোন ভাবেই মানবতার মধ্যে পড়ে না। যদি শেষ পর্যন্ত প্রমাণ হয় তারা নির্দোষ তবে তাদের জেল খাটার দায় কে নিবে? এমন বর্বরতা সভ্য দেশগুলো মধ্যযুগেই পেছনে ফেলে এসেছে। তারা এখন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

ধর্মান্ধরা প্রখ্যাত লেখকদেরও অসম্মান করার চেষ্টা করেছে বারবার। এ কারণে পাদ্রী-পুরুতদের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করলে লিও তলস্তয়কে খ্রিস্ট ধর্ম থেকে বহিস্কার করা হয়। তিনি যখন মারা যান তখন পাদ্রী-পুরুতরা দল বেধে এসেছিলেন কিন্তু তাঁর অনুসারীরা তাদের কাছে ঘেঁষতে দেননি। দেশ-বিদেশের হাজার হাজার শোকার্ত অনুরাগী কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়াই তাঁর শবযাত্রায় শামিল হয়ে তাকে সমাহিত করেন। পাদ্রী-পুরোহিতরা কি তলস্তয়ের কোন ক্ষতি করতে পেরেছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়া সমাহীত হওয়ায় তার কোন ক্ষতি হয়নি। তিনি আজও মহান লেখক হিসেবেই বিশ্বজুড়ে পঠিত, নন্দিত এবং রয়েছেন শ্রদ্ধার আসনে। জঁ পল সাত্রের ক্ষেত্রেও দেখেছি- শেষ জীবনে তিনি অন্ধ ছিলেন। তাঁর সঙ্গিনী বোভ্যুয়ারও মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরে শবযাত্রায় হেঁটেছিল লক্ষ লক্ষ মানুষ। ইউরোপ বদলে গেছে। তারা ধর্মান্ধতা থেকে বের হয়ে ভাসছে বিজ্ঞানের আলোয়।

আর আমরা আজও অর্জন করতে পারিনি মানবাধিকারের সূচকগুলো। এখনো শিশু বলাৎকারের বিরুদ্ধে কথা বলা যায় না। ভোটাধিকার নিয়ে কথা বলা কঠিন। বাক স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলতে পারি না। মত প্রকাশ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তারই শিকার হয়েছেন শরিয়ত বয়াতি আর রীতা দেওয়ান। এসব অতিক্রম করতে না পারলে সভ্য জাতি দাবি করার কোন সুযোগ থাকে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:২০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×