যারা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সাথে চলাফেরা করেছেন বা যারা ইতিহাসবিদ তারা অবশ্যই স্বীকার করে নেবেন, মুজিব অত্যন্ত কোমল প্রক্রিতির ছিলেন। তিনি মানুষকে খুব সহজেই বিশ্বাস করে ফেলতেন। এই সহজেই বিশ্বাস করেছেন বলেইতো বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ গড়ার কাজ এমন কিছু লোকের হাতে ন্যস্ত করেছেন তারা ছিলেন চোর।
এটা আমার কথা না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নিজেই এ কথা বলেছিলেন বেশ আক্ষেপ আর দুঃখ নিয়ে।
"আমার আশে পাশে সব চোরের দল"
তবুও তিনি এ চোরের দলকে কোন সাজা না দিয়ে তাদেরকে ভালো হবার সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু হয়ত এটাই তার জন্য ভুল ছিল। কথায় বলে না চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী। এরাও শুনেনি। যার দায় শেষ পর্যন্ত মুজিবকেই দিতে হল জীবন দিয়ে।
মুজিব এই স্বভাবটা পেয়েছিলেন তার রাজনৈতিক গুরু শহীদ সোহরাওয়ার্ধী এর নিকট হতে। তাইতো মুজিব পুর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার জন্য সংঘাতের পথে হাটতে চাননি। তিনি প্রচলিত ধারায় আন্দোলনের মাধ্যমে এটা অর্জন করেতে চেয়েছেন।
কিন্তু যখন কোন ব্লগার মুজিবের স্বাধীনতা চাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তখন খুব খারাপ লাগে।
প্রখ্যাত ইতিহাস লেখক কামরুদ্দিন আহমদ তার 'স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয় এবং অতঃপর ' বইয়ের পৃষ্ঠা নং-১০৯ পড়ে যানা যায়, তৎকালীন ছাত্রনেতৃত্ব মুজিবকে না জানিয়েই বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করে ঢা.বি ক্যাম্পাসে। যার নির্দেশনা আসে জহরুল হক হল থেকে। যার মূলে ছিলেন সিরাজুল আলম খান। মূলত তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামের গোপন তৎপরতা শুরু করেই ১৯৬৭ সালের দিকে।
এই বইয়ের পৃষ্ঠা নং-১০৪ এ তিনি লিখেন, "সিরাজুল আলম খান তখন মুখে বাংলার স্বাধীনতার কথা না বললেও স্বাধীনতা লাভের জন্য শেখ মুজিবের অজ্ঞাতে আওয়ামী লীগের কিছু কর্মী নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় গুপ্ত সংস্থা গঠন করেছিলেন। ঐ সংগঠন সমূহের জন্য প্রচারপত্র লিখা হত ও তাদের মধ্যে বিতরণ করা হত। এ সংগঠনের কথা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটি এমনকি শেখ মুজিবও জানতেন না।"
তাইতো পরবর্তীতে মুজিবের বিভিন্ন নির্দেশাবলীর সাথে তৎকালীন ছাত্র ও যুব নেতাদের কথায় মিল ছিল না।
তবে এসব তথ্য এটা প্রমাণ করে না যে, মুজিব স্বাধীনতা চাননি। অবশ্যই তিনি স্বাধীনতা চেয়েছেন এবং চেষ্ঠা করেগেছেন। তিনি ধারনা করেছিলেন, যদি দেশের পরিচালনায় অংশীদার হওয়া যায় তবে এটা অনেকটা সহজ হবে।
যাই হোক মুজিবের সংগ্রামী পথে বাংলার স্বাধীনতা আসে এটা যেমন ঠিক, তেমনি মুজিবের তৎকালীন ভূমিকা তার অজান্তেই বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য অনেক সহায়ক ছিল। তাই মুজিবের ভূমিকাকে কোন ভাবেই অগ্রাহ্য করার মত নয়।
আসুন আমরা অন্ততঃ এই একটি কারনে হলেও মুজিবকে সম্মান করি।
আর স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের কথায় আসলে তখনও মুজিবকে দোষ দেয়া হবে নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক। কারণ তখন যা কিছু হয়েছিল তা মুজিবের আশেপাশের লোকদের দ্বারাই সংগঠিত হয়।
আর সেসব লোকরা এখনো বর্তমান। শেখ হাসিনার আশে পাশেই ঘুরাঘুরি করছেন। তাদের অনেকেই আবার মন্ত্রীত্ব না পেয়ে তুষের আগুনের মত হয়ে আছেন।
অতএব, শেখ হাসিনা আপনি শিক্ষা নিন এবং সাবধান হউন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ১১:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




