somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)
নিজেকে বোঝার আগেই মনের মধ্যে একটা চেতনা তাড়া করে ফিরতো। এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, একটা বিপ্লব দরকার। কিন্তু কিভাবে?বিপ্লবের হাতিয়ার কি? অনেক ভেবেছি। একদিন মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে উঠলো একটি শব্দ, বিপ্লবের হাতিয়ার 'কলম'।

যাদের বসবাস অন্ধকারে তারা আলোর ভালো বুঝবে কি করে

০৮ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনি বিদেশে থাকেন। ধরুন, আপনার এক কোটি টাকা আছে।ভাবলেন দেশে গিয়ে মানুষের কল্যাণের জন্য নিজ অর্থে একটি প্রজেক্ট করবেন। দেশে গেলেন, কিছু করতে শুরু করলেন, তখন একটা শ্রেণী বলতে শুরু করবে, আপনি বিদেশী কোন দাতা সংস্থার অর্থ এনে কিছু মানুষকে দিচ্ছেন আর বাকীটা মেরে খাচ্ছেন। আর এক গ্রুপ এসে বলবে, এসব করতে হলে আমাদের চাঁদা দিতে হবে।

দুই চারটা বই লিখেছেন। কিন্তু আপনার বই বিক্রি হয় না। পাঠক সমাজে আপনার কোন পরিচিতি নেই। আপনার বই পয়সা দিয়ে কেউ কেনে না। অথচ নিজেকে অনেক জ্ঞানী লেখক ভাবেন। কারণ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি পড়াশুনা করেছেন।ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন। এটাই আপনার অহংকার। বাংলাদেশী লেখক কাশেম বিন আবুবাকার মেট্রিক পাশ করা লেখক। লিখেছেন ৭২ টি উপন্যাস। উপন্যাসগুলো পাঠক সমাদৃত ও ব্যবসা সফল। বাংলাদেশের এক শ্রেণীর পাঠক সমাজে তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে।আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম যেমন যুক্তরাজ্যের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইয়াহু নিউজ, মধ্যপ্রাচ্যের আরব নিউজ, মালয়েশিয়ার দ্য স্টার ও মালয়মেইল, পাকিস্তানের দ্য ডন, ফ্রান্সের ফ্রান্স টুয়েন্টি ফোর ও রেডিও ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনাল, হাঙ্গেরির হাঙ্গেরি টুডেসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বাংলাদেশের পত্রিকাগুলোও তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।এতেই আপনারা শিক্ষিত লেখকরা তার পিছু লেগে গেলেন। মাস খানেক ধরে ফেচবুকে তার পিণ্ডি চটকালেন। বললেন, সে চটি লেখক, সে জামাতের লেখক, তার নামের সাথে ঔপন্যাসিক উপাধি যায়না। আরও অনেক কিছু বলে তাকে হেয় করার চেষ্টা করলেন। বোঝার চেষ্টা করুণ, সেতো ঘুষ দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন করাননি ।আপনার তাকে ভালো না লাগলে চুপ থাকতে পারতেন। তার নামটি যখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে সাথে বাংলাদেশের নামটিও প্রচার হয়েছে। আপনি অনেক শিক্ষিত লেখক কিন্তু আপনার জীবনে এমনটি হয়নি, হয়তো কোনোদিন হবেও না। সেই ঈর্ষার জায়গা থেকে ভদ্রলোককে ছোট করে বন্য আনন্দ নিয়েছেন।ভেবেছেন, অশিক্ষিত মানুষটা যদি কোন পুরষ্কার পেয়ে যায়। যেটার জন্য বছর জুড়ে আপনারা শাসকদের পায়ে তৈল মালিশ করেন।

আমাদের দেশের মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন নয়। এই স্বাস্থ্য জ্ঞানহীনতার কারণে তারা নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন। ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির নামে এক তরুণ ডাক্তার এক সময় স্বাস্থ্য সচেতনতা মূলক ভিডিও বানিয়ে ইন্টারনেটের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে পোষ্ট করতে লাগলেন। মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হতে লাগলো। তার জনপ্রিয়তা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে যেতে লাগলো। চেম্বারে রুগীর সংখ্যা বাড়তে লাগলো। এতেই এক শ্রেণীর ডাক্তারদের এলার্জি শুরু হয়ে গেলো। তারা ভাবল, সারা জীবন ডাক্তারি করেছি, বাড়ী বানিয়েছি, গাড়ি কিনেছি কিন্তু কেউ আমাকে চেনে না। কোথায়ও বক্তৃতা দিতে ডাকে না। এই হিংসার জায়গা থেকে ভদ্রলোককে বললেন, সে একজন ক্যানভাচার। রোগী পাওয়ার জন্য রাস্তার কবিরাজদের মত আধুনিক পদ্ধতিতে পাবলিসিটি করছে। বোঝার চেষ্টা করুণ, ডাক্তার কবির তার কর্মব্যস্ততার মধ্য থেকে পরিশ্রম করে সচেতনতা মূলক ভিডিওগুলো বানিয়েছে,কোন বিনোদন ভিডিও বানাননি। এগুলো না করেও তিনি আপনাদের মত ঔষধ কোম্পানির উৎকোচ ও রোগী দেখে আয়েশি জীবন যাপন করতে পারতেন। তিনি মনে করেছেন, দেশের মানুষকে ন্যূনতম স্বাস্থ্য সচেতন করা দরকার। অনেকে তার চেম্বারে না গিয়ে শুধু তার ভিডিওগুলো অনুসরণ করে উপকৃত হয়েছে। ওনার মত জনপ্রিয় হতে চাইলে আপনি আরও ভালো কিছু তৈরি করে মানুষকে উপকার করুণ, দেখবেন আপনিও মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন। বাজে কথা বলে কি তাকে থামাতে পেরেছেন। বরং আপনারা থেমে গেছেন, তিনি জেগে আছেন।

অনেকেই অভিযোগ করে থাকেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শিক্ষিত মানুষ এগিয়ে আসে না।অনেকেই হয়তো ভুলে গেছেন, ২০০৯ সালে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ইচ্ছে পোষণ করে খোলা চিঠিতে মাধ্যমে অভিমত জানতে চেয়েছিলেন। তাকে আমরা খুব নোংরা ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছি। তিনি কিন্তু চাল গম চুরি করার জন্য রাজনীতিতে আসতে চাননি, তিনি তার অর্জিত জ্ঞানের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন।বিনিময়ে আমরা তাকে অসম্মান, অপমান উপহার দিয়েছি। সুদখোর বলেছি, মার্কিনীদের দালাল বলেছি, আরও অনেক কিছু। ভদ্রলোক মনের অনুরাগে আমাদের থেকে নিজেকে আড়াল করে নিয়েছে। যে মানুষটিকে আমাদের দেশের সরকার ও একটা শ্রেণী ফুটো পয়সা দাম দেয় না, সেই মানুষটি ইউরোপ আমেরিকার শিক্ষা দীক্ষায় উন্নত দেশগুলোতে পরামর্শ দিয়ে বেড়ায়। তার বক্তৃতা কভার করার জন্য পশ্চিমা মিডিয়াগুলো ভিড় জমায়।তার আগমনে উন্নত বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ভবনের দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যায়। অনেক পার্কে তার ছবি টাঙানো থাকে।বিদেশে তার নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমরা যারা দেশের বাইরে থাকি তারা জানি, অনেক সময় আমাদের ছোট্ট দেশটিকে অনেকই চেনে না, কিন্তু ডক্টর ইউনূসের জন্মভূমি বললে চেনে। বিশ্বের অনেক নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বক্তৃতা দেন, তার বই উন্নত বিশ্বের লাইব্রেরীগুলোতে গবেষণার জন্য রাখা হয়। অথচ ভদ্রলোকের নিজের দেশের সরকার ও এক শ্রেণীর অযোগ্য মানুষ উপেক্ষা করে।

কিশোর কুমার দাস নামে এক সুশিক্ষিত তরুণ নিজের জীবনবোধের তাড়না থেকে নিজের কষ্টার্জিত অর্জিত অর্থ নিয়ে সমাজের বঞ্চিত মানুষদের জন্য কিছু করতে এগিয়ে আসলেন। তৈরি করলেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অনেক তরুণ তরুণী স্বেচ্ছা শ্রমে যুক্ত হলেন এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। তাদের নতুন নতুন সমাজ বান্ধব কার্যক্রমের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়লো দেশব্যাপী। এই সুনাম এক সময় চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়ালো সমাজের এক শ্রেণীর কুচক্রী মহলের কাছে। যে সব ধর্ম ব্যবসায়ী ফতোয়াবাজ পানি ফু দিয়ে পেট চালান তারা উঠেপড়ে লাগলো এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তাদের সমস্যা এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাসের ব্যক্তিগত ধর্মীয় পরিচয়।তিনি অর্থ ও স্বশরীরে শ্রম দিয়ে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললেন অথচ দেশের এক শ্রেণীর পবিত্র লোকজন দাবী তুললেন হিন্দু লোকের এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের পদে থাকা চলবেনা। ফেচবুকে তার ধর্ম তুলে গালাগালিও করা হল। বিদ্যানন্দ নামটা নাকি হিন্দুয়ানী নাম।অথচ বিদ্যানন্দ নামটি দিয়েছেন এক মুসলিম ব্র্যান্ড এক্সপার্ট। “আনন্দের মাধ্যমে বিদ্যা অর্জন” স্লোগানে তিনি এই নাম দিয়েছিলেন। কাজের থেকে ব্যক্তির ধর্ম ও নাম আমাদের মাথা ব্যথার কারণ হল!

দেশ থেকে ফ্রান্সে চলে আসার পর দেখলাম, এখানকার বাংলাদেশী কমিউনিটি বেশ পেছনে পড়ে আছে। নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। একটা শ্রেণী দেশের পচা রাজনীতি চর্চা করে এবং নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাতে লিপ্ত থাকে। কমিউনিটির এই সংকটকে উপলব্ধি করে বেশকিছু উদ্যমী তরুণ কিছু সংস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়।সংস্থাগুলোর সাথে এখানে বেড়ে ওঠা ও শিক্ষা অর্জন করা কিছু মহৎ তরুণ যুক্ত থাকায় সংস্থাগুলো আজ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। বিপদগ্রস্ত মানুষ কোননা কোন ভাবে সংস্থাগুলো থেকে সহায়তা পাচ্ছে। তাদের সমস্যাগুলো নিজের ভাষায় ব্যক্ত করতে পারছে।মহৎ তরুণেরা বিনামূল্যে নানাবিধ পরামর্শ দিয়ে কমিউনিটির মানুষদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে চলছে। ফলে বিপদকে পূঁজি করে পেট চালানো কিছু টাউটদের আয় কমে যাচ্ছে। সংস্থাগুলোর সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের অনেক ভুল থাকতে পারে, তবে তাদের ভালো কাজের পাল্লাটাই ভারী । ভুলগুলো ধরে তাদেরকে শুধরানোর পরামর্শ দেয়া যেতে পারে ,অথচ ঐসব টাউট ও এক শ্রেণীর অযোগ্য মানুষ এই সব মহৎ তরুণদের গালাগালি করে থাকে, ফেচবুকে অপপ্রচার করে নানা ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে থাকে ।এই সব নিম্ন চিন্তা ধারার মানুষদের কাছে প্রশ্ন, আপনারা যারা এমন করেন তারা কি ঐ সব তরুণদের সমালোচনা করার যোগ্য? কিংবা এই জনমে ওদের মত দুই একটি ভালো কাজ করে দেখাতে পারবেন?নিজেকে প্রশ্ন করুণ, অন্যের পিছু লাগা ছাড়া আর কি শিখেছেন জীবনে।

যে জন্য এতোগুলো উদাহরণ টেনে আনলাম তা হল যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফেরদৌস খন্দকারকে কেন্দ্র করে চলমান বিতর্কের কারণে। সমগ্র পৃথিবী যখন করোনা ভাইরাসের আক্রমণে দিশেহারা , সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছে সকল রাষ্ট্র নায়কেরা, তখন পৃথিবীর কিছু উদার ডাক্তার ও নার্সেরা বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে আলোর দিশা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।ডা. ফেরদৌস খন্দকার এই সময়ে বিভিন্ন ভিডিও বার্তার মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের মত মানুষকে স্বাস্থ্য জ্ঞান দিয়েছেন। করোনা ভাইরাস থেকে প্রতিরক্ষার পথ দেখিয়েছেন। মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। তার নিজ বাসস্থান নিউইয়র্ক ও বাংলাদেশের মানুষের জন্য নানাবিধ পরামর্শ দিয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। শুধু চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শই নয়, সামাজিক কর্মকাণ্ডের ভেতর দিয়ে মানুষকে আর্থিক সহায়তা করার চেষ্টা করেছেন। মানুষ তার কর্মকাণ্ডকে প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশ এখন করোনা মহামারীর মধ্যে দিয়ে কঠিন সময় পার করছে।দেশের কথা চিন্তা করে, দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে, মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসার টানে বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে দেশে গিয়েছেন। ভেবেছেন দেশের মানুষকে সরাসরি চিকিৎসা সেবা দেবেন। ভেবেছিলেন, আর কিছু না হোক মানুষের ভালোবাসা পাবেন, সম্মান পাবেন। কিন্তু, প্রথমেই দেশের মাটিতে নেমে তিনি এয়ারপোর্টে হয়রানির স্বীকার হয়েছেন। সম্মানতো দূরে থাক, তার আসার সংবাদ শুনে দেশের ইতর বাদর প্রকৃতির একটি মহল তাকে অপমান করার পূর্ব প্রস্তুতি সাজিয়ে রেখেছেন। কারণ ভালো মানুষের উপস্থিতি থাকলে খারাপ মানুষদের অপকর্ম বাধাগ্রস্ত হয়।সমস্যা তার নামের পাশের খন্দকার ও তার জন্মস্থান কুমিল্লা জেলা।বলা হচ্ছে, তিনি নাকি খুনি খন্দকার মোশতাকের ভাতিজা কিংবা খুনি কর্নেল রশিদের খালাতো ভাই। কোন কিছুর প্রমাণ দাঁড় না করে কাউকে অপবাদ দেয়া কত বড় মাপের অপরাধ ও গর্হিত কাজ, এটা কি আমরা ভেবে দেখেছি। এই ভদ্রলোকতো দেশ থেকে কিছু আনতে যায়নি, বরং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনাদেরকে দিতে গিয়েছেন , তবে কেন এই অপবাদ? যারা মানুষকে হেয় করেন, মতের বিরুদ্ধে গেলে নামের পাশে জামাত, রাজাকার ট্যাগ লাগিয়ে দেন, তারা কি একবার আয়নার সামনে গিয়ে দেখেছেন, আপনার চেহারা কতটা কুৎসিত? কতটা কদর্যতায় ভরা আপনাদের অন্তর? জীবনে সোজা পথে রুটিরুজির যোগ্যতা অর্জন করতে না পেরে নোংরা পথ বেঁচে নিয়েছেন। এ কথা কি একবারও উপলব্ধি হয়না আপনাদের? একবার খোলা দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখেছেন কি? নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য যাদেরকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছেন তারা আরও উজ্জ্বল হয়ে মানুষের শ্রদ্ধা অর্জন করেছে । বরং আপনাদের চেহারা কুৎসিত থেকে আরও নিকৃষ্ট মানের কদাকার হয়েছে।

রাষ্ট্র ক্ষমতা শেয়াল শকুনদের দখলে, কিন্তু দেশ, দেশের জনগণ ও ভূমি আমাদের সকলের। বিশাল জনগোষ্ঠীর দেশটি পরিচালিত হয় একে অপরের কাঁধে ভর করে। যারা ভালো কাজ করতে গিয়ে গুটিকয়েক কদাকার মানুষের তিরস্কার ও ভৎসনায় হতাশ হন তাদেরকে বলছি, মানুষের প্রশংসা করার জন্য একটি যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, একটি চর্চার প্রয়োজন হয়, ভালো মানসিকতার প্রয়োজন হয়। যাদের বসবাস অন্ধকারে, রুটিরুজি অন্ধকারে, তারা আলোর ভালো বুঝবে কি করে? বরং আলোকে তারা প্রতিপক্ষ মনে করে। তাই তাদের এই হীন প্রচেষ্টা সর্বক্ষণ।অন্ধকারের বাসিন্দাদের কথায় হতাশ হবার কি আছে। বরং আরও ভালো কাজের মাধ্যমে এদের দমন করতে হবে।

পরোপকার সর্বোৎকৃষ্ট মহৎ গুণ।সমাজে কিছু মানুষ জন্ম গ্রহণ করে যারা অন্যের কষ্টে ব্যথিত হয়।অন্যের বিপদ দেখে নিজ শ্রম সময় অর্থ ব্যয় করে অন্যের দুঃখ লাঘবের চেষ্টা করে আত্মতৃপ্তি লাভ করে।এমন মানুষদের মহানুভবতার কারণেই সমাজ ভিত্তিক রাষ্ট্রগুলোর ভারসাম্য টিকে থাকে।বাংলাদেশ একটি সমাজ ভিত্তিক রাষ্ট্র। সমাজের চলমান সমস্যাগুলোর সমাধান এমন উদার মানুষেরাই করে থাকে।অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা এদের তুলনায় গৌণ থাকে।একে অপরের কাঁধে ভর করে আমাদের দেশ ও সমাজ এভাবেই চলছে।প্রবাসের বাংলা কমিউনিটিগুলোতে একই পরিস্থিতি বিদ্যমান।

আমরা জাতিগত মানুসিকতায় আত্মকেন্দ্রিক জাতি।নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে রাষ্ট্রের বৃহত্তর জাতিগত স্বার্থ বিকিয়ে দিতে আমাদের হৃদয় কাঁপেনা।ভোগের জন্য,স্বার্থের জন্য আত্মসত্তাকে অপমান করে অন্যের কাছে নতজানু হওয়ার প্রবৃত্তি আমাদের অস্থি মজ্জায়।ফলে অন্যের উন্নতি যেমন আমাদের সহ্য হয়না, তেমনি অন্যের ভালো কাজের প্রশংসা আমাদের অসুস্থ করে তোলে।এই হীনমন্যতার কারণে নিজের উন্নতির জন্য যতটুকু সময় ব্যয় করা দরকার অনেক ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করি অন্যকে হেয় করে আনন্দ লাভের নেশায়।

জাতিগত এই মানুসিকতার পরিবর্তন রাতারাতিই সম্ভব নয়।এ এক সুদীর্ঘ সাধনার যাত্রা।কাজের প্রশংসা আরও ভালো কাজের অনুপ্রেরণা যোগায়, তবে এমন সমাজে যে মানুষগুলো আপামর মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সমাজের অগ্রগতির ব্রত গ্রহণ করতে চান, তাদের প্রথমে চিন্তা করতে হবে তার ত্যাগের পুরষ্কার কোন বড় মঞ্চে উত্তরীয় পড়িয়ে নাও দেয়া হতে পারে, বরং লাঞ্ছনা,গঞ্জনা, অপবাদ তাদের কাছ থেকেই জুটতে পারে যাদেকে আপনি কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন।তাই বলে আপনার থেমে যাওয়া ঠিক হবেনা।থেমে যাওয়া মানে, আপনার মহৎ হৃদয়কে অকৃতজ্ঞ আত্মকেন্দ্রিক মানুষের কুৎসিত হৃদয়ের কাছে পরাজয় ঘটানো।বরং আপনার আজকের ত্যাগ আগামীর একটি উদার মানুসিকতার জাতি গঠনের সোপান।যে স্বপ্ন আপনি লালন করে সুখ লাভ করেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:২৫
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×