গোলাম মোর্তোজা
জোট সরকারের পাঁচ বছরের ক্ষমতার অংশীদার জামায়াত। জোট সরকারের দুর্নীতি অরাজকতা আর অপকর্মের সংবাদ এখন জানছে দেশের মানুষ। গ্রেপ্তার হওয়া বড় বড় নেতারা বলছেন, নেতা-নেত্রীর দুর্নীতির কথা। জানা যাচ্ছে, খালেদাহাসিনার দুর্নীতি বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়ার নানা কাহিনী।
বর্তমান সরকারের এসব কাজে দেশের মানুষ খুশি নয়- এটা বলার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু পাঁচ বছরের ক্ষমতার অংশীদার জামায়াত বিষয়ে নীরবতা জন্ম দিচ্ছে অনেক প্রশ্নের।
জামায়াত নেতা চট্টগ্রামের শাহজাহান চৌধুরীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড গত পাঁচ বছরই ছিল আলোচনায়। এমন কী বিএনপির নেতারাও তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করেছেন। ২৮
অক্টোবরের পল্টন ধ্বংসযজ্ঞে জামায়াত ছিল একটি অংশ। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষ তারাই করেছে। উভয়পক্ষেরই হতাহত হয়েছে। অস্ত্র প্রথম ব্যবহার করেছে জামায়াত ক্যাডাররাই।
উপরের নির্দেশ ছাড়া জামায়াত ক্যাডাররা অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে না। তাহলে নির্দেশদাতা কে? নিজামীদের কী এই দায় নিতে হবে না? চট্টগ্রাম, রাজশাহীতে জামায়াত ক্যাডারদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কথা সবারই জানা। যশোর, খুলনা অঞ্চলের সর্বহারাদের সঙ্গে জামায়াতের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। এই বিষয়গুলোর তদন্ত কী হচ্ছে?
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কত এনজিওর জন্ম দিয়েছে আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ? কত এনজিওর ফান্ড আটকে দেয়া হয়েছে? এগুলো করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। বিষয়গুলোর কোনো তদন্ত হচ্ছে বলে মনে হয় না। জঙ্গিদের অর্থ সরবরাহের অভিযোগে অভিযুক্ত হলো জামায়াতের ইসলামী ব্যাংক। শুধু কয়েক টাকা জরিমানা দিয়েই এত বড় দায়
থেকে বেঁচে যাবে জামায়াত নেতারা!
সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন উ আহমেদ যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা বললেন, তার কী হলো? এটা কী শুধুই কথার কথা ছিল?
মতিউর রহমান নিজামী কৃষিমন্ত্রী থাকাকালে বেশ কিছু অনিয়ম করেছিলেন। যে কারণে বিএনপি তাকে কৃষি থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। বিষয়টি কী বর্তমান সময়ে সামনে আসবে না?
আজ যে দলীয়করণের কথা আলোচনা হচ্ছে, তার দায়ভার কী একা বিএনপির? ছাত্রদলের সঙ্গে কী শিবিরের নেতা-ক্যাডারদের চাকরি দেয়া হয়নি পুলিশসহ বিভিন্ন সেক্টরে? নিজামী মুজাহিদরা নেপথ্যে থেকে এই কাজগুলো করেছেন, করিয়েছেন। আইন যদি সবার জন্যে সমান হয় তবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জামায়াতের ক্ষেত্রে আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি কেন হবে?
এই প্রশ্নই বা কেন উঠবে? এই প্রশ্নগুলো অবশ্য নতুন নয়। যখন ক্রসফায়ারের জমজমাট অবস্থা তখনও দেখা গেছে জামায়াতের ক্যাডাররা ক্রসফায়ারের আওতামুক্ত। সেই ধারাবাহিকতাই যেন এখনো চলছে।
যদিও আমরা এমনটা বিশ্বাস করতে চাই না। আমরা বিশ্বাস করতে চাই বর্তমান সরকার দলমত নির্বিশেষে দুর্নীতি নির্মূল করতে না পারলেও দমন করবে, হ্রাস করবে। অন্তত একটা
সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসবে। বিশ্বাস করব জামায়াতকে নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে সেটা স্থায়ী হবে না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




