somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

অপশন

২১ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




টেকনিক্যাল টার্মে অপশন দুটো হয়,
√ হ্যাঁ
√ না

এখন আবার মুলতবি(Pending) নামক নতুন একটি অপশন যোগ হয়েছে।কিন্তু জীবনগল্পে এই তিনটি অপশনের বাহিরেও অনেক অপশন থাকে।যেমন ধরুন, প্রশ্ন হলো আপনার কি চা পছন্দ?
উত্তর বিভিন্নভাবে আসতে পারে,

√ হ্যাঁ পছন্দ, কিন্তু র’চা পছন্দ করি আমি।
√ হ্যাঁ পছন্দ, কিন্তু লেবু চা পছন্দ করি আমি।
√ হ্যাঁ পছন্দ, কিন্তু দুধ চা পছন্দ করি আমি।
√ হ্যাঁ পছন্দ, কিন্তু ঝাল চা পছন্দ করি আমি।
√ হ্যাঁ পছন্দ, কিন্তু আদা চা বেশি পছন্দ করি আমি।
√ হ্যাঁ পছন্দ, কিন্তু র’চা হতে হবে এবং কড়া লিকার।
√ হ্যাঁ পছন্দ, কিন্তু র’চা আবার লিকারটা কম হবে।
√ হ্যাঁ পছন্দ, কিন্তু অমুক ভাইয়ের তমুক চা আমার পছন্দ।
√ না, আমি চা পছন্দ করি না।
√ পছন্দ করি কিন্তু সবসময় না, বন্ধুরা মিলে রাত দুপুরের আড্ডায় এক কাপ চা-কফি হতেই পারে।
√ পছন্দ করি না কিন্তু কেউ চায়ের কাপ এগিয়ে দিলে ফিরে দেইনা।
√ পছন্দ, তবে শীতের সময়।
√ চা আমার খুব পছন্দ কিন্তু এতে করে স্কিন খারাপ হয়ে যায় তাই খাওয়াটা আর হয় না।
√ না, কিন্তু আমার প্রিয়তমা করে দিলে অন্য কথা।

এই প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তর শতাধিক বা তারও বেশি যোগ করা সম্ভব।তারমানে হলো একজন মানুষের কাছে শুধুমাত্র চা খাওয়ার জন্য এতগুলো অপশন থাকে।

টিভি দেখতে বসে একদিন খুব বিড়ম্বনায় পড়ে যাই।চ্যানেল সুইচ করতে করতে একসময় ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম আমি পুরো একঘন্টা সময় কিছু না দেখেই নষ্ট করেছি।কারণ আমার সবচেয়ে ভালোলাগার অনুষ্ঠান বা মুভিটি আমি বিভিন্ন চ্যানেলে খুঁজছিলাম।
এছাড়া ইউটিউবে সবচেয়ে বেশি সমস্যা যেটা হয়, হাতে রাখা পাঁচমিনিট নিয়ে ইউটিউবে বসে কখন জানি পাঁচঘন্টা কাটিয়ে দিয়েছি।ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একজনের বার্তার অপেক্ষায় অন্য বিশজনের সাথে চুটিয়ে চ্যাটিং করে ঘুমের সময়টাও নষ্ট করেছি।আড্ডা দিবো না ভেবে বাহিরে বের হয়ে পুরনো বন্ধুর সাথে দেখা হওয়ায় পুরো দিনটাই আড্ডা দিয়েছি।ব্যাপারটা হলো, অনেক উপন্যাস লিখে ঔপন্যাসিক হওয়ার চিন্তা মাথায় নিয়ে এক পৃষ্ঠাও লেখা হয়নি যেন।

না, আমি এসব নিয়ে অত সিরিয়াস নই।কিন্তু ভাবছিলাম এই “অপশন” শব্দটা কতটা ভয়াবহ।কিছুই ঠিকঠাক দেখা হয় না, বুঝা হয়ে উঠে না।তার আগেই আচমকা সময়টা চলে যায় একেবারে বাউন্ডারি পেরিয়ে জীবন মাঠের একদম শেষ প্রান্তে।যেখানে আর ফিরে যাওয়া যায় না।কি ভাবছেন যাওয়া যায়? নাহ্, একদমই যাওয়া যায় না।

আর ঠিক এই কারণেই আমি বা আপনি ব্যক্তি হিসেবেও একেক জনের কাছে একেক রকম।কারো কাছে আমি/আপনি মূল্যহীন আবার কারো কাছে আমি/আপনি মূল্য দিয়ে পরিশোধ করা যায় না এমন একজন প্রিয়জন।তবে অন্য কাউকে অপশন হিসেবে রাখা মানুষগুলো নিজের কথা ভাবে না।এবং এই ব্যাপারটা বেশ মজার এবং হাস্যকর।কাউকে প্রিন্সেস(রাজকুমারী) বলে ডাকলে তার মনে করা উচিত যে, সেই ছেলেটা তোমায় সম্মান করে এবং স্পষ্টত তুমি প্রিন্সেস নও।আর হে বালক, হিরো বলেছে বলেই টম ক্রুজ হিসেবে নিজেকে ভাবার কোন অবকাশ নেই।কারণ এই “হিরো” দিয়ে তোমাকে “হিরো আলমও” বানাতে পারতো কিন্তু তোমায় সম্মান করে মেয়েটা।

কিন্তু আবেগ এবং অপশন এর মধ্যের যুদ্ধটা দেখবার মত।যেমন ধরুন, শুধুমাত্র চাইলেই একজনকে পেয়ে যাবেন হাতের মুঠোয়, সেখান থেকে বের হবার কোন চ্যান্স-ই নেই।কিন্তু আবেগ আপনার সেই দামী ব্যক্তিকে ফেলে রেখে অন্য একজনকে দেখিয়ে দিবে।তারপর মূলত আপনি সেখানে পড়ে থাকবেন।কখনো কখনো সেটা পুরো জীবনের জন্য।এবং এটা আরো কষ্টের হয় যখন সেই মানুষটি আপনার আবেগটা বুঝে না।ফিরিয়ে দেয় আপনাকে।স্রেফ “না” বলে দেয়।এরপর আপনার মনের ব্যাকগ্রাউন্ডে “ইসমে তেরা ঘাটা, মুঝে কুচ নেহী যাতা...” গানটা কয়েকদিন চললেও ফের আপনি রাতের বেলা চোখে জল খুঁজে পান এবং নিজেকে বিশ্বাস করতে বলেন যে, “চোখে কি যেন একটা পড়েছিলো! তাই না?”।এটাকে বলা হয়, “সেলফ্ ডিসেপশন” যা অত্যন্ত কঠিন কাজ বলেই আমার কাছে মনে হয়।

অবশ্য এদের জন্য চোখে জল আসাটা আমার মতে যুক্তিযুক্ত কিন্তু যারা আপনাকে অপশন হিসেবে রাখছে তাদের বলে দেওয়া ভালো, If you treat me like an option, I will leave you like a choice... ব্যাস! এরপরে ইট-পাটকেল থিওরি অনুযায়ী ফেসবুকের(শুধু ম্যাসেঞ্জারের নয়) ব্লকিং নামক অপশনটিতে তার নামটা যোগ করে দিন।




আগামীর দিন হোক অপশনমুক্ত এবং আবেগঘন।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১২:৩১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×