somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

আপনার পছন্দের মেয়েটি কি আপনার প্রেমে পড়েছে!

০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষ না বলেও অনেক কিছু বলে দেয়। ইশারায়, ইঙ্গিতে, আচরণে, উপহারে, পোশাকের ধরণে মিলে যেতে পারে অনেক গোপন অভিব্যক্তি। আমরা সবসময় নিজেকে প্রকাশ করে থাকি। কখনো কখনো সেই প্রকাশ ঘটে থাকে একদম নিঃশব্দে, আমাদের নিজেদেরও অজান্তে!

প্রথম পরিস্থিতি: আপনার পছন্দের মেয়ে কি আপনার সাথে একই রিক্সায় কখনো উঠেছে? যদি উঠে থাকে তবে নিশ্চয় সেটা প্রেমের লক্ষণ নয়। আমরা স্বাভাবিকভাবেই কখনো কখনো রিক্সা শেয়ার করে থাকি। ক্যাম্পাসে হোক, কাজের সূত্রে হোক। কিন্তু এমন ঘটনা যদি বারবার ঘটে তাহলে নিশ্চয় একটু সময় নিয়ে পুরো বিষয়টি চিন্তা করা উচিত।

সাধারণত মেয়েরা রিক্সার বামদিকে বসে। কারণ হলো, বামদিকে তূলনামূলক জায়গা বেশি থাকে। তূলনামূলক রিক্সা থামলে বামদিক থেকে নামতেও সুবিধা হয়। কিন্তু সে কি আপনাকে বারবার অনুরোধ করেই বামদিকে বসে? যদি তাই হয়, তাহলে ক্ষেত্র বিশেষে উত্তর আলাদা-আলাদা হবে।

আপনাদের কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিভাগ একই বা কর্মস্থল একই জায়গায়, এবং নির্দিষ্ট জায়গা থেকে রিক্সা না পাওয়ার কারণে রিক্সা শেয়ার করতে হয়। তাহলে বেশি চিন্তা করা যাবে না। কিন্তু যদি এই একই বিষয় মেয়েটির নির্বাচিত চয়েজ বলে মনে হয়, সম্মতি বলে মনে হয় তাহলে পুরো চিত্র-ই পাল্টে যায়।

কারণ হলো, বামদিকে বসা শুধুমাত্র কমফোর্ট বোধ করার জন্য নয়, বামদিকে বসলে আপনারা মুখোমুখি হয়ে কথা বলতে পারবেন। আপনার বামপাশে বসা মানে আপনাদের মধ্যে শারীরিক দুরত্ব কমে আসে এবং রোমান্টিক বা বন্ধুত্বের সম্পর্কের সিগন্যাল হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আর যেহেতু সে অনুরোধ করেই বামদিকে বসার সম্মতি নিচ্ছে সেহেতু এটা এক ধরণের কনশাস চয়েজ, শুধুমাত্র কমফোর্ট নয়।

দ্বিতীয় পরিস্থিতি: শহরের রাস্তা। ঘড়ির কাঁটায় সন্ধ্যা ৬টা। রিমঝিম বৃষ্টিতে আপনার হাতে একটি ছাতা। যেহেতু এই বৃষ্টিতে ভিজলে আপনার পছন্দের মেয়েটির গায়ে জ্বরও আসতে পারে সেহেতু ছাতা মেলে ধরলেন। বৃষ্টির কারণে চারপাশে বিদ্যুৎ নাই। শহরের ব্যস্ততা অনেকখানি কম। কিন্তু আপনারা গল্প করছেন। একসময় আপনি খেয়াল করলেন, ছাতা থাকা সত্ত্বেও আপনি তাকে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে পারছেন না। কিন্তু এটা নিয়ে মেয়েটি মোটেই সচেতন নয়। সে বরং বেশি সচেতন আপনার গল্প শোনার জন্য বা আপনার সাথে কথা বলার জন্য। এছাড়াও ছাতার মধ্যে থাকার কারণে আপনাদের মধ্যে দুরত্ব কমে এসেছে। সর্বোচ্চ ২-৩ ইঞ্চি। মেয়েটি বৃষ্টিতে ভিজে চুল আঁচড়াচ্ছে এবং আপনার দিকে সময় সময় তাকিয়ে হাসছে।

যদি হুবহু আপনাদের গল্প এরকম হয় তাহলে মেয়েটির ঐ আচরণ কে তীব্র রোমান্টিক সিগন্যাল হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু সেটিংস সবসময় শহর বা শহরের ফুটপাত হয় না। একই দৃশ্য একইরকম ভাবে সবসময় ঘটেও না। সুতরাং এর কাছাকাছি হলেও সেটাকে রোমান্টিক বা বন্ধুত্বের সিগন্যাল হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন।

কিন্তু যদি মনে হয়, মেয়েটি আন-কমফোর্টেবল বোধ করছে তাহলেও একটা সিগন্যাল পাওয়া যায়; তবে সেটা ‘রেড সিগন্যাল’। ভালো হয়, শেষের দিকে হলেও আপনি একবার তাকে বলুন, “ইশ্‌! আমরা তো ভিজে গেলাম। ছাতাটা কোনো কাজেই আসলো না!” মুচকি হাসি হাসলে উত্তর পেয়েই গেলেন।

বিশেষ কনফার্মেশন পয়েন্ট টেবিল: ১০ নম্বর

১. ছাতা থাকা সত্ত্বেও সচেতন না হওয়া = রিস্ক-টেকিং ক্লোজনেস = ২ নম্বর
২. ২–৩ ইঞ্চি দূরত্ব বজায় রাখা = ইনটিমেট জোনে ঢুকে পড়া = ২ নম্বর
৩. বারবার চোখে চোখ + হাসি = স্ট্রং ইন্টারেস্ট কিউ = ২ নম্বর
৪. চুল আঁচড়ানো (গ্রুমিং) = সাবটল সেল্ফ-প্রেজেন্টেশন = ২ নম্বর
৫. বৃষ্টি-ভিজা ভালনারেবিলিটি = ট্রাস্ট-বিল্ডিং ডিসপ্লে = ১ নম্বর
৬. আপনার কথা শুনে মুচকি হাসি = পজিটিভ রিসিপ্রোসিটি = ১ নম্বর

মাইনাস মার্ক পেলে মন খারাপ করবেন না। তবে ১০ এ ১০ পেলে তীব্র রোমান্টিক সিগন্যাল হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।

তৃতীয় পরিস্থিতি: উপহার দেওয়া-নেওয়া। দেখুন, উপহার দেবার বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করে কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের উপর। সুতরাং এখানে সিগন্যাল দেবার বিষয়টি কনটেক্সট ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

ধরে নিচ্ছি, আপনার পছন্দের মেয়ে আপনাকে একটি রিং দিলো। যেখানে আপনি আপনার বাইক থেকে ঘরের চাবি আটকিয়ে রাখতে পারবেন। এখন ঐ রিং-এ নির্দিষ্ট টোকেন থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ: ‘Love’ লেখা বা হার্টের ছবি বা প্রতীক যা রোমান্টিক ধারণা দেয়।

এখানে দুটো বিষয় স্পষ্ট হয়,

১. ঘরের চাবি কে প্রতীকী অর্থে ঐ রিংয়ের মধ্যে আটকানো মানে হচ্ছে ঘরের দায়িত্ব নেওয়ার মত। এখানে নিরপত্তা ও বিশ্বাস বুঝায়। ঠিক যেমন করে চাবি আপনার ঘর কে সুরক্ষিত রাখে। ঠিক যেমন করে চাবি ছাড়া আপনার বাইক অচল। এভাবে টানলে প্রতীকী অর্থ অনেক দূর অবধি যায়।
২. হার্টের ছবি বা প্রতীক মানে হলো, ভালোবাসার সাথে বিশ্বাস ও নিরাপত্তা।

মুশকিল হলো, এত ভেবে কেউ অদৌ উপহার দেয় কিনা সেটা একান্তই নির্ভর করে আপনার পছন্দের মেয়েটার ব্যক্তিত্বের উপর। ওর মনে হইলো, ভালোই হবে। তাই কোনো দোকান থেকে তুলে এনে দিলো আপনাকে। আপনি দয়া করে তখন প্রতীকী অর্থ খুঁজবেন না। জীবন তামা তামা হয়ে যাবে।

আর যদি চিন্তাশীল মেয়ে হয়! এবং ইতিমধ্যেই আপনাকে জানে ও বুঝে তাহলে কিন্তু অনেক বড় একটি রোমান্টিক সিগন্যাল!

চতুর্থ পরিস্থিতি: আপনার সাথে দেখা হবার সময় নির্দিষ্ট ধরণের পোশাক পরিধান অন্যতম একটি লক্ষণ হতে পারে। প্রথমত, আপনি আপনার পছন্দের মেয়েকে দুপুরে এক রেস্টুরেন্টে একসাথে খাবার অনুরোধ করলেন। এখন যদি সে উপস্থিত হয় তারমানে এই নয় যে, সে রোমান্টিক ধারণা নিয়ে আপনার সাথে দুপুরের খাবার খেতে বসেছে। প্রেক্ষাপট এখানেও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

সে যদি নিয়মিত যে পোশাক পরে এবং আপনার সাথে দেখা হবার পরও আপনি ঐ একই ধরণের পোশাক লক্ষ্য করেন তাহলে হতে পারে বন্ধুসুলভ কোনো বিষয় বা আপনার নিমন্ত্রণ কে ছোট করতে চায় নাই। তবুও, সাধারণত এই ধরণের ব্যাপার-স্যাপার কে মোটামুটি একটি ‘ডেট’ হিসেবেই ধরা হয়। মেয়েরা সচরাচর একেবারে সাজগোছ ছাড়া কারো সাথে দেখা করে না বলেই আমার ধারণা।

ধরে নিচ্ছি, সে সাধারণত ঢিলেঢালা পোশাক পরে কিন্তু আপনার সাথে দেখা করার সময় টাইট-ফিটেড পোশাক পরে এসেছে। সাথে অতিরিক্ত এক্সেসরিজ যেমন, হার, চেন, ব্রেসলেট ইত্যাদি পরে এসেছে। কড়া পারফিউম পর্যন্ত গায়ে মাখা। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সে যদি আপনাকে প্রশ্ন করে কমপ্লিমেন্ট নিতে চায়। যেমন: “আচ্ছা, আমাকে কেমন লাগছে?” এই ধরণের প্রশ্ন সরাসরি একটি ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেয়।

তাছাড়া শাড়ি-চুড়ি পরে একেবারে পার্লার হয়ে এসেছে মনে হলে কিচ্ছা খতম। দুর্দান্ত এবং সরাসরি একটি রোমান্টিক সিগন্যাল। কিন্তু ব্যস্ততার মধ্যেও একটু গুছিয়ে আসা, মিষ্টি আলাপ চালিয়ে যাওয়া, একটু ব্যক্তিগত আলাপও প্রেক্ষাপট অনুযায়ী একটি রোমান্টিক সিগন্যাল দিতে পারে।

উপরোক্ত ৪টি পরিস্থিতি পুরোপুরি কাল্পনিক। এবং এসব সিগন্যাল ধরে সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়া বা কাউকে বিরুক্ত করা উচিত হবে না। কিন্তু আপনাদের গল্পটা এগুতে পারে। হয়তো আপনারা দুজনেই অনেক লজ্জা পাচ্ছেন বা একে অন্যকে নিজের কথা বলতে পারছেন না তখন এসব কাজে দেয়। ভালো হয় সরাসরি আপনি আপনার পছন্দের মানুষ কে নিজের মনের কথা বলুন। আজ এই পর্যন্ত-ই।

ছবি: VidIQ
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:৪৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×