somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

:):)অপরুপB-)B-)

০৪ ঠা মে, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাতে ঘুমুতে দেরী হয়েগিয়েছিলো ,তাই সকালে যখন কাচাঁ ঘুম থেকে মনির টেনে তুল্ল তখন কিছুটা বোকার মত বসে রইলাম।দুই মিনিট লাগল বুঝতে সে কেন ডেকে তুলেছে ...সে জানলা দিয়া বাইরে তাকিয়ে আছে...আবেগ আপ্লুত চোখে বলছে “দেখ দেখ কি অপরুপ প্রকৃতি”
অপরুপ প্রকৃতি দেখের আশায় আমি ঘুম ঘুম চোখে বাইরে তাকালাম , অপরুপের কিছুই চোখে পরল না,একটা বাড়ীর ছাদে বেটেঁ মত কিছু গাছ দাড়িয়ে আছে।
“আরে দেখনা” আবার ঝাঁকি দিয়ে মুনির ব্যাগ্র ভাবে দেখানোর চেষটা করল”এই গুলির নাম বনসাই”
বনসাই,আমার হাত এবং মুনিরের একটা বিশেষ অঙ্গের সংযোগ স্থাপনের প্রবল ইচছা বহু কষেট দাতেঁ দাতঁ চেপে দমন করতে করতে আমি বাথরুম এর দিকে রওনা হলাম,অনেকে বাথরুমে ঘুমাতে পারেনা ,কিন্তু আমার কোন সমস্যা নাই।ঘুমিয়েও গিয়াছিলাম ,এমন সময় মুনির বাথরুম এর দরজায় লাফিয়ে পড়ল ”অই দেখে যা, রোদ উঠেছে,কি অপরুপ”...অসংলগ্ন অবস্তায় ছিলাম হঠাৎ লাফিয়ে উঠতে গিয়া দড়াম করে আছাড় খেলাম,আমার মনে হল পুরো বাথরুম বুঝি আমার উপর ভেঙ্গে পরল,তীব্র ব্যাথায় আমার চোখ ফেটে জল বেরিয়ে গেল।মুনির এবং পৃথিবীর তাবৎ প্রকৃতির উপর আমি মারাত্তক ভাবে চটে গেলাম।
মুনির এমনই ।আমাদের বন্ধু হওয়ার পর আমরা ওর এই প্রকৃতি প্রেমকে নিয়া হাসা হাসি করলাম...দুদিন যেতে না যেতেই আমাদের মুখের হাসি মিলিয়ে গেল,এই বেটা যাকে পায় তাকেই নিজের মত প্রকৃতির প্রেমিক বানানোর চেষটা করে...কিছু দিনের মধ্যে আমারা আতংকিত হয়ে লক্ষ করলাম মুনিরের প্রকৃতি প্রেম সময় অসময় কিছুই বোঝেনা, রুমি তার প্রেমিকাকে নিয়া প্রথম বারের মত ঘুরতে বেরিয়েছিলো,পথে মুনিরের সাথে দখা হওয়ায় মুনির তাকে প্রকৃতির বিষয়ে একগাদা কথা শুনিয়ে দিল,রুমির প্রেমিকা কতটুকু বুঝল কে জানে,কোনভাবে পালিয়ে বাঁচল, রুমি পালাতে পারলনা,কাদোঁ কাদোঁ মুখ করে বাস স্যাণ্ডে দাঁড়িয়ে রইল।
রাজউকের লাইনে ফরম জমা দিতে গেছি,বিশাল ভীড়।৪/৫ হাজার লোক পাথর এর মত মুখ করে লাইনে দাড়িয়ে ,সবাই ঘামছে এর মধ্যে দেখি মুনির,কোন দিকে যেন তাকিয়ে আছে।আমি হাত তুলে ডাকলাম “অই মুনিরা,অই”,মুনির ঝট করে আমার দিকে তাকাল,হাসিতে মুখ উদভাসিত হয়ে আছে,দেখেই আমার বুক ধক করে উঠল।
“হাবিব,দেখে যা,কি অপরুপ” মহা উৎসাহে মুনির আমাকে ডাকল।আমি তাড়াতাড়ি সাবধান হলাম”না না ,আমি এখানেই ঠিক আছি”,কে শোনে কার কথা,মুনির লাইনে থেকে বেরিয়ে আমার হাত ধরে টেনে ওই পাশে নিয়ে গেল,রেলিংয়ের পাশে য়েয়ে ঘোর লাগা চোখে বলল “দেখ...
অনিচছা সত্তেও তাকালাম, পরমুহুরতে উথসাহিত হয়ে উঠলাম ,একটা girl’s school।দলে দলে মেয়েরা বেরিয়ে আসছে।আমি দ্রুত মাথা নেড়ে সায় দিলাম ”অবশ্যই ভাল প্রকৃতি” মেয়দেরকে আমার কাছে সবসময়ই খুব ভাল লাগে ,তা আমাকে ওদের কাছে ভাল লাগুক আর নাই লাগুক।আমি চোখ মুখ সরু সরু করে মুনির কে জিজ্ঞাসা করলাম “কিরে এই খানে তোর কেউ আছেনাকি? ...সত্যি করে বলতো কোন মেয়েটা?”
মুনির বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন করল”কেন ?মেয়ে হবে কেন?আরে আমিতো পাশের ঝোপ এর কথা বলছি...দেখ কিছু পাখি বসে আছে ঝোপের উপর...কেমন খুটে খুটে খাচেছ,দেখনা”।।আমি তাকে বঝাতে গেলাম যে মেয়েদের প্রকৃতিটাও খুব একটা খারাপ না।বিশেষ করে আমাদের মত ছেলের জন্য,যতক্ষন পর্যন্ত না ওরা বিশেষ রেগে যায়...কিন্তু গাধাটা এর কিছুই বুঝলনা..

মুনির ৩ দিন আগে মারা গেছে।কিছু দিন আগে আমি ওকে দেখতে গিয়েছিলাম হাসপাতালে।আমাকে দেখে ওর চোখ মুখ উজ্জল হয়ে উঠল,বলল “হাব্বিব, আমি তো চলে গেলাম রে,কুয়াকাটা তো দেখা হলনা”,আমি কিছু বলতে পারলাম না দ্রুত বাইরে চলে এলাম চোখ দুটো ভিজে গেছে…
আজ জানালার সামনে দাড়িয়ে বৎসরের প্রথম বরষা দেখছি।অঝোর ধারায় মুক্তা পরছে ,গাছ গুলি আপন মনে মাথা দোলাছেছ আর এক পশলা ঠাণ্ডা পবিত্র হাওয়া এসে আমার গায়ে লাগছে…আমার মনে হল কে যে আমার পাশে দাড়িয়ে বলছে”দেখ,কি অপরুপ তাইনা?”

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৯ দুপুর ২:২৫
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×