বাংলা সিনেমায় একটা চেঞ্জ আসতেছে। এই চেঞ্জটা একটু অন্য রকমের। তার আগে বলি, সিনেমা এক প্রকার আর্ট। সিনেমা মানেই যদি ঢিশুম-ঢিশুম আর টেকনোলজি হত তাহলে আমরা শুধু হলিউডের সিনেমা দেখতাম; সত্যজিৎ রায় কিংবা ঋত্বিক ঘটক দেখতাম না; স্প্যানিশ, ইরানিয়ান কিংবা ইতালিয়ান মুভি দেখতাম না। একটা আর্ট নিয়ে যত এক্সপেরিমেন্ট চালানো যায় সেটা তত মাত্রিকতা ধারণ করে।
বাংলা সিনেমায় পরিচালকেরা কেন জানি ঢাকা শহরকে পর্দায় দেখাতে ভয় পায়। নায়ক নায়িকার দেখা হলেই তারা নাচা-নাচি করতে পাঠিয়ে দেন কক্সবাজার না হলে সিংগাপুরে। ট্রাফিক, কাঁদা-পানি, প্যাঁ-পু, নোনা ধরা ইটের দেয়াল, চিপা গলি এগুলা দেখালেই ইজ্জত যাবে এমন ভাব। আমাদের সিনেমার দৃশ্যগুলো তো আমরাই দেখবো, লজ্জা কিসের?? অমিতাভ রেজা চেষ্টা করেছেন প্রচলিত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে। আমাদের খালি চোখে দেখা ঢাকাই তিনি দেখিয়েছেন, দেখার মত করে। আমার মনে হয়েছে চেঞ্জটা এখানেই। এক্সপেরিমেন্ট চলুক।
প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। তাকে আমার কাছে জাঁদরেল অভিনেতা মনে হয় আগে থেকেই। মনপুরা দেখে যেমন চঞ্চলকে ভুলতে পারেননি, আয়নাবাজি দেখেও তাকে মনে রাখতেই হবে। নোনাধরা বাড়িটার চিলাকোঠায় একলা আয়নার ঘর আখতারুজ্জামানের চিলেকোঠার সেপাই’কে মনে করিয়ে দেয়। দুইটার মধ্যে অন্য কোন মিল আছে কি??? হয়তো আছে। ঢাকাইয়া আমেজ যেমন আছে চিলেকোঠার সেপাই উপন্যাসে ঠিক তেমনি একটা স্বাদ/গন্ধ লেগে আছে আয়নাবাজিতে। এটাই এক্সপেরিমেন্ট, নিজস্বতা।
শেক্সপিয়ারের কথায় আমরা একেক জন অভিনেতা এই জগত নামক মঞ্চে। আয়নাবাজিতে সেই ধারণার সুন্দর উপস্থাপন হয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকে। আমরা নিজেরেই কখনো সাধু, কখনো চোর। কখনো জ্ঞানী, কখনো বোকা। এটাই হয়তো আয়নাবাজি।
স্পয়লার দিতে চাইনা। সময় থাকলে দেখে আসুন। মুভিটা আমার ভালো লেগেছে। ভুল ত্রুটি আছে কি নেই তা বিচার করবে মুভি ক্রিটিকস, আমার কাজ নয়।
আর একটা কথা, নাটক-সিনেমা-উপন্যাসের সব জ্ঞানী মার্কা ডায়ালগ পাগলরা দেয় কেন!!! আই হ্যাভ এ ড্রিম???

সমাপ্ত
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




