সেই ১৯৯১-৯২ এর কথা আমার বাসার পাশের রুমে একটা কম্পিউটার কম্পোজ এর দোকান ছিল। ছুটি থাকলেই সেই দোকানে কম্পোজম্যান এর পিছনে দাড়িয়ে দাডিয়ে দেখতাম লোকটি কি করে। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতাম...কিবোর্ড তো বাংলা লেখা নাই উনি কি করে বাংলা লিখে। খুবই অবাক হতাম। এখন বুঝি তখন উনি উনডোজ ৩.১ কিংবা ৯৫ দিয়া জব্বর কাকুর বিজয় দিয়া বাংলা টাইপ করতো। (জব্বর কাকার নাম দেখতাম বিজয় উপেন করার সময়)
খুব চন্ঞল থাকার কারনে বাবা আমাকে একটা স্কুলে ভর্তি করে দেন। সকাল বেলায় আমাদের ভাড়া করা রিক্সা এসে নিয়ে যেত আর রাত ৮ কি ৮.৩০ মিনিটে আমাকে নিয়া আসত। শুক্রবার ছাড়া আর সুযোগ পেতাম না। প্রতিদিন সকাল বিকাল সন্ধ্যা রাত্র স্কুলে।
তখন সময় পেতাম না। আবার কোর্ট কাচারি পাশে দোকান বিদায় শুক্রবার বন্ধ থাকতো.. কি যে মিস করতাম তখন এই ভদ্রলোক কে। মাঝে মাঝে কাজের চাপ বেশী থাকলে উনি শু্ক্রবারেও আসতেন। উনি যখন জুমার নামায পরতে যেতেন তখন বলতাম আমাকে ডিক্সবল বা পিন্স অব পারিস্যা গেমসটা দিয়ে যাবার জন্য। মাঝে মাঝে দিয়ে দিতেন। খুব ভালো থাকত, সারা সপ্তাহের বোরিং স্কুল একদম ভুলে যেতাম।
এভাবে কয়েকমাস কেটে গেল। এর মাঝে কম্পিউটার কিছুটা শিখলাম যেমন উপেন করা, বন্ধ করা, হ্যাং হয়ে গেলে রিষ্টাট করা. আমার মনে আছে... উনডোজ ৯৮ প্রচুর হ্যাং করত। এর মাঝে অনেকদিন কেটে যায়। স্কুল শেষ করে মাত্র হাই স্কুলে ভর্তি হলাম..কিছু ছাড়া পেলাম সকাল -সন্ধ্যা স্কুল থেকে। হাই স্কুল ৫ টায় ছুটি হয়ে যেত. ছুটির পর বাসায় থেকে সোজা কম্পোজম্যান এর পিছনে। আস্তে অনেক কিছুই শিখতে লাগলাম....সব কিছুই দেখে দেখে শিখতে লাগলাম কিন্তু একটা জিনিস উনাকে মাঝে মাঝে জিজ্ঞাস করাতম বড় করে ই লেখাটা দিয়ে কি করে। ( মানে ইন্টারনেট এক্সপোরাল).
এর মাঝে আমাদের বাসাটাও পরিবর্তন করলেন বাবা, কিন্তু বেশী দুর না। বাবার কোটা কাচারির আছে পাশে (হাফ কিলোমিটার হবে)। এতটাই কম্পিউটার এর নেশা পেয়ে গেল যে, স্কুল ফাকি দিয়ে সেই কম্টিউটার সেন্টার এ.। একদিন বাবা তো দুপুর বেলা সেই সেন্টার এ হাজির। কি যে মাইর খাইছিলাম,বলতে পারবো না। তারপরও গেছি লুকিয়ে লুকিয়ে.। কিন্তু সেখান থেকেই আমার কমিউটার এর হাতে খড়ি। বিজয় বাংলা টাইপ কিন্তু উনার সেন্টারে থাকা বই থেকে শেখে ফেললাম। কিন্তু যুক্ত অক্ষরগুলি পারতাম না...এই জিনিসগুলিই উনার কাছ থেকে শিখলাম। তারপর উনার কিছু কাজ করে দিতাম।
পরের রাউন্ড....ইন্টারনেট ১৯৯৯ থেকে।
আমার কম্পিউটার শিখা.........বাল্যকালের স্মৃতি!!!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ধর্ম ও বিজ্ঞান
করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
তালগোল
তুমি যাও চলে
আমি যাই গলে
চলে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফুরালেই দিনের আলোয় ফর্সা
ঘুরেঘুরে ফিরেতো আসে, আসেতো ফিরে
তুমি চলে যাও, তুমি চলে যাও, আমাকে ঘিরে
জড়ায়ে মোহ বাতাসে মদির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন
মা
মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।
অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।
একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে
ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন