somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কালা বিলাই

১১ ই এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কালা বিলাই
নাজমুল ইসলাম মকবুল

গত ১ এপ্রিল আমার দেশ প্রর প্রথম পৃষ্টায় প্রকাশিত একটি খবরের শিরোনাম হচ্ছে ‘‘ রাজনীতি চলে গেছে চোরাকারবারি মুনাফাখোরদের হাতে’’। কথাটি বলেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জাদরেল রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ। রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে ‘গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও পেশাজীবীদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় গত ৩১ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকারের এক সময়ের কর্মব্যস্ত মন্ত্রী আপে করে বলেছেন, রাজনীতি এখন আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই, রাজনীতি এখন চলে গেছে অবৈধ অর্থের মালিক, চোরাকারবারি মুনাফাখোরদের হাতে। তারা অর্থ কামিয়ে এলাকায় দান খয়রাত আর মসজিদ নির্মাণ করে কোন একটা দলের মনোনয়ন নিয়েই নেতা হয়ে যান।
সংস্কারপন্থী হওয়ার সুবাধে ঝানু রাজনীতিক হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান মহাজোট সরকারের মন্ত্রীত্বের মিঠা গুড় ভন না করতে পারলেও কথাটা তিনি মন্দ বলেননি। অনেক েেত্র কথাটার সত্যতা পাওয়া যায়। তবে তাঁরই আরেক সহযোদ্ধা সংস্কারপন্থী ও ফখর মইন ঘেষা হওয়ার অভিযোগে প্রায় তিন বছর যাবত মন্ত্রীত্বের মিঠা গুড় ভন করতে না পেরে বিভিন্ন সময়ে উল্টা পাল্টা তিতা মিঠা ঝাঝালো রসালো বক্তব্য দিয়ে এবং হয়তো কোন অদৃশ্য ভাগ্যরেখার বদলে বহুল কাঙ্খিত মন্ত্রী পরিষদের শিকা ছিড়ে সদ্য আবি®কৃত রেল নামক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব বাগে পেয়েই ‘কালো বিড়াল’ খুজে বের করার আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দিয়েই ব্যাপক ঝড় তুলেন দেশ বিদেশের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়। কদিন পর একটি পত্রিকায় কার্টুন দেখলাম সুরঞ্জিত বাবু কালো বিড়াল বের করতে গিয়ে নিজেই হয়ে গেছেন কালো বিড়াল। এই কালো বিড়ালটা কী? তা নিয়ে হয়তো ব্যাপক গবেষনাও চলছিল। সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় বলে কালা বিলাই বা কালা মেকুর। বিড়ালের মধ্যে কালো বিড়াল বড়ই ভয়ংকর। কারন ওদেরকে আন্দারে দেখা যায়না, কিন্তু ওরা আন্দারে ঠিকই দেখতে পায়।
আমাদের গ্রামে একবার কোত্থেকে এক বড়সড় কালো বিড়ালের উদয় হলো। সে ছিল মজক্কর অর্থাৎ হুলো বিড়াল। সিলেটে বলা হয় উলা বিলাই। গ্রামের সকলেই বলতেন কালা উলা। এই কালা উলার যন্ত্রনায় সারা গ্রামের মানুষ তটস্থ ছিলেন। কখন কার উনুনে ঢুকে ডেগ ডেকচির ভাত তরকারী ভাজা মাছ গোশত ইত্যাদি খায় তা বলা মুশকিল। অনেকজন মিলে শলাপরামর্শ করে অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে ঘেরাও করেও তার টিকির নাগাল পাওয়া যেতোনা। ভিড়ের ফাঁক গলে সময়মতো দৌড়ে পালিয়ে যেতে সে ছিল সিদ্ধহস্ত।
কাউকে চরম শাস্তি দেবার পরও সে সঠিক পথে ফিরে না এলে বিলাইর হাড্ডি খাওয়ার প্রবাদ এখনও উচ্চারণ করতে শুনা যায়। তবে দুষ্টু বিলাইয়ের জ্বালাতন সহ্য করতে না পেরে মানুষ বিলাইকে দুরে কোথাও ফেলে দেবার নিয়ত করে সময় সুযোগমতো তাকে ধরে বস্তায় ভরে দুরে কোথাও নিয়ে ফেলে দিয়ে আসার রেওয়াজ সেই প্রাচীণকাল থেকেই চলে আসছে আমাদের সমাজে। দুষ্টু চতুর বিড়াল ফেলে আসার পরনেই কিংবা কয়েকদিন পর আবার ফিরে এসে দ্বিগুণ উৎসাহেও জ্বালাতন করার রেকর্ড আছে। তাই দুরে হেটে গিয়ে ফেলতে হাটার ও বহন করার কষ্ট ও বাহকের পিছনে পিছনে আবার ফিরে আসার ঝামেলা এড়াতে মানুষ আবিস্কার করলো নতুন এক বৈজ্ঞানিক ফর্মুলা। দাদারখালি এই ফর্মুলাটি হলো রেল এসে স্টেশনে থামলে রেলের ভেতর বিলাইটিকে বস্তা থেকে ছেড়ে দিয়ে আসা। তাতে ভাটি বাংলা থেকে উজান বাংলায় বিনা ভাড়ায় বিলাইটিকে বহন করে নিয়ে যাবে রেল। এতোদুর থেকে আর এসে জ্বালাতনও করতে পারবেনা বিলাইটি।
তবে শেষ পর্যন্ত বিলাই বা বিড়াল বস্তার ভেতর সত্তর লাখে রূপ নিয়ে ডাকঢোল পিটিয়ে বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়ে বের হয়ে সকলকে চমকে দিতে পারে তা হয়তো সকলের অজানাই ছিল। গুণধর মহাসম্মানিত রেলমন্ত্রীর জিগাতলার বাসায় নিয়ে যাবার সময় তারই এপিএস ওমর ফারুক বস্তায় ভরে বিলাই ফেলার স্টাইলে সত্তর লাখ টাকা নিয়ে যাবার সময় বেরসিক ড্রাইভার আলি আজম গাড়িটি নিয়ে পিলখানায় বিজিবির চার নম্বর গেটের সামনে গিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। বিজিবি গেটে পাহারারত বিজিবি (সেনা) সদস্যরা এগিয়ে এলে এক পর্য্যায়ে গাড়ি তল্লশিকালে কালোবিড়ালের সেই চোখ ধাধানো চমক এর মোড়ক হয় উন্মোচিত। সচেতন দেশবাসী বলে উঠেন এইতো বেরিয়ে এলো কালো বিড়াল। চোরের দশ দিন আর গৃহস্থের একদিন। তাহলে এই কালো বিড়ালের কথাই গুয়ামুরি হেসে চিরাচরিত ভঙ্গিমায় বলেছিলেন দাদাজান। ধন্যবাদ দাদাজানকে। ধন্যবাদ স্বল্প সময়ের মধ্যেই কালো বিড়াল বা কালা বিলাই বের করে এনে জাতিকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেবার জন্য। দেশ ও জাতিকে তর তর করে উন্নতির পথে নিয়ে যাবার েেত্র এধরনের অভিজ্ঞ ও পোড় খাওয়া মন্ত্রীদের বড়ই প্রয়োজন। দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপোর প্রহর গুণছেন যাতে আরও নতুন নতুন মন্ত্রনালয় প্রসব করিয়ে তাতে পোড় খাওয়া বিলাই বেপারীদের যথাযথ সম্মান দিয়ে রাজার হালে বসিয়ে একটু আয়েশ আরামের সুযোগ দিয়ে জাতিকে কলংকমুক্ত কিংবা ভারমুক্ত করা হয়!
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×