somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

ইসলামে মাহরাম নারী পুরুষ কারা? আসুন, জেনে নিই অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি

০৪ ঠা মে, ২০২০ দুপুর ১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবি: অন্তর্জাল।

ইসলামে মাহরাম নারী পুরুষ কারা? আসুন, জেনে নিই অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি

নারীদের মাহরাম তথা যাদের সাথে দেখা করা জায়েজঃ

১। বাপ, দাদা, নানা ও ক্রমানুযায়ী তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।

২। সহোদর ভাই, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।

৩। শ্বশুর, আপন দাদা শ্বশুর ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানুযায়ী পুরুষগণ।

৪। আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত পুত্র সন্তান এবং কন্যা সন্তানদের স্বামী।

৫। স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।

৬। ভাতিজা, ভাগিনা তথা সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই ও বোনের ছেলে ও তাদের অধঃস্থন কোন ছেলে।

৭। আপন চাচা অর্থাৎ বাপের সহোদর, বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় ভাই।

৮। আপন মামা তথা মায়ের সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।

৯। দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, উক্ত ছেলের ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী।

১০। দুধ সম্পর্কীয় বাপ, চাচা, মামা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।

১১। দুধ সম্পর্কীয় ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান।

১২। শরীয়ত অনুমোদিত বৈধ স্বামী।

১৩। যৌন শক্তিহীন এমন বৃদ্ধ, যার মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই আবার মহিলাদেরও তার প্রতি কোন আকর্ষণ নেই।

১৪। অপ্রাপ্ত বয়স্ক এমন বালক যার মাঝে এখনো যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়নি।

উপরোক্ত পুরুষগণ ছাড়া কোন মহিলার জন্য অন্য কোন পুরুষের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ হারাম।

পুরুষের মাহরাম তথা যেসব মহিলাদের সামনে যাওয়া জায়েজঃ

১। মা।

২। দাদি।, নানী ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু মহিলাগণ।

৩। বোন [আপন হোক বা দুধ বোন বা বৈপিত্রেয় বা বৈমাত্রেয় হোক]।

৪। আপন মেয়ে, ছেলের মেয়ে, মেয়ের মেয়ে, এবং তাদের গর্ভজাত যে কোন কন্যা সন্তান ও ছেলে সন্তানদের স্ত্রী।

৫। বিবাহিত বৈধ স্ত্রী এবং যে স্ত্রীর সাথে দৈহিক মিলন সংঘটিত হয়েছে তার পূর্ববর্তী বা পরবর্তী স্বামীর কন্যা সন্তান। স্ত্রীর মা অর্থাৎ শ্বাশুরী, দাদী শ্বাশুরী।

৬। ফুপু, তথা পিতার সহোদর বোন, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন।

৭। খালা তথা মায়ের সহোদর বোন, বৈমাত্রেয় বোন ও বৈপিত্রেয় বোন।

৮। ভাতিজি, তথা সহোদর, বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় ভাইয়ের মেয়ে তাদের অধঃস্থন কন্যা সন্তান।

৯। ভাগ্নি তথা সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনের মেয়ে ও তাদের অধঃস্থন কন্যা সন্তান।

১০। দুধ সম্পর্কীয় মেয়ে, মেয়ের মেয়ে, ছেলের মেয়ে ও তাদের অধঃস্থন যে কোন কন্যা সন্তান ও দুধ সম্পর্কীয় ছেলের স্ত্রী।

১১। দুধ সম্পর্কীয় মা, খালা, ফুপু, নানী, দাদী ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু মহিলাগণ।

১২। দুধ সম্পর্কীয় বোন, দুধ বোনের মেয়ে, দুধ ভাইয়ের মেয়ে এবং তাদের গর্ভজাত যে কোন কন্যা সন্তান।

১৩। যৌন শক্তিহীন এমন বৃদ্ধা যার প্রতি পুরুষের কোন প্রকার আকর্ষণ নেই।

১৪। অপ্রাপ্ত বয়স্কা এমন মেয়ে যার প্রতি পুরুষের এখনো যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়নি।

উপরোক্ত মহিলাগণ ছাড়া কোন পুরুষের জন্য অন্য কোন মহিলার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা জায়েজ নয় এবং হারাম।

প্রসঙ্গত: মাহরাম ও গাইরে মাহরাম সম্পর্কিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্নোত্তরও অত্র নিবন্ধের সাথে যুক্ত করে দেয়া হল, যে বিষয়ে অধিকাংশ মানুষেরই সঠিক ধারণা নেইঃ

ইসলামী শরিয়া মোতাবেক আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কে মাহরাম আর কে গাইরে মাহরাম- এ ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষই সংশয়ের মধ্যে ঘুরপাক খেয়ে থাকেন। আলেম-উলামা এবং মাদরাসা পড়ুয়াদের অনেককেও এই বিষয়ে দ্বিধান্বিত হতে দেখেছি। বুঝতে অসুবিধা হয় না, এমনটা হয়ে থাকে না জানার কারণেই। আসলে না জানাটা বড় সমস্যা। এ কারণেই বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে এখানে এ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর একত্রিত করা হল যেগুলোর উত্তর জেনে রাখা একান্তভাবে প্রয়োজন।

মাহরাম কাকে বলে?
মাহরাম বলা হয় ঐ সকল পুরুষ অথবা নারীকে যাদেরকে স্থায়ীভাবে বিবাহ করা হারাম- চাই তা নিকটাত্মীয় হওয়ার কারণে হোক, অথবা দুগ্ধপান করার কারণে হোক, অথবা বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে হোক।

১। চাচাতো, ফুফাতো, মামাতো এবং খালাতো ভাই-বোনের সন্তানরা মাহরাম নয়:
প্রশ্ন: চাচাতো, ফুফাতো, মামাতো ও খালাতো ভাই ও বোনের মেয়েরা কি আমার জন্য মহারাম?

উত্তর:
যেখানে স্বয়ং চাচাতো, ফুফাতো, মামাতো এবং খালাতো ভাই-বোনরাই মাহরাম নয় সেখানে তাদের সন্তানদের মাহরাম হওয়ার প্রশ্নই উঠে না। কারণ তারা সম্পর্কের দিক দিয়ে আরও নিম্নস্তরের।

মোটকথা, চাচাতো, ফুফাতো, মামাতো এবং খালাতো ভাই কিংবা বোনের মেয়েরা ছেলের জন্য এবং ছেলেরা মেয়েদের জন্য মাহরাম নয় বরং তাদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ। সমাজে যদিও এদেরকে ভাগ্নে/ ভাগ্নি বা ভাতিজা/ ভাতিজি বলা হয় কিন্তু তারা যেহেতু আপন ভাই ও বোনের সন্তান নয় সেহেতু তারা মাহরাম হিসেবে গণ্য হবে না।

২। খালা মাহরাম কিন্তু চাচী মাহরাম নয়:
প্রশ্ন: আমি জানি যে, চাচী মাহরাম নয়। সুতরাং ভাতিজাকে চাচীর স্পর্শ করা বৈধ নয়। আর খালার ক্ষেত্রে উল্টো হুকুম। আমি কি ঠিক বলেছি?

উত্তর:
আপনি ঠিক বলেছেন। খালা মাহরাম কিন্তু চাচী মাহরাম নন।

সুতরাং চাচী-ভাতিজার মাঝে পর্দা রক্ষা করা ফরজ এবং একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া একে অপরকে স্পর্শ করা বৈধ নয়। তবে খালা মায়ের মতই মাহরাম। সুতরাং, খালা-ভাগিনার মাঝে পর্দা রক্ষা করা আবশ্যক নয়।

৩। চাচী মাহরাম নয়- সুতরাং, ভাতিজার সাথে চাচীর বিবাহ বন্ধন বৈধ:
প্রশ্ন: চাচীর সাথে কি বিবাহ জায়েয?

উত্তর:
চাচী যেহেতু মাহরাম নয় সেহেতু চাচা মারা গেলে অথবা চাচার সাথে কোনো কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে ভাতিজা উক্ত চাচীকে বিবাহ করতে পারে।

৪। খালা মাহরাম কিন্তু মায়ের চাচতো বোন মাহরাম নয়:
প্রশ্ন: মায়ের আপন বোন অর্থাৎ, খালা মাহরাম। কিন্তু মায়ের চাচাতো বোনও তো আমার খালা হয়। তিনি কি আমার জন্য মাহরাম হবেন?

উত্তর:
মায়ের নিজের বোন তথা আপনার আপন খালা মাহরাম কিন্তু মায়ের চাচাতো বোন আপনার জন্য মাহরাম নন।

৫। খালা ও ফুফু মাহরাম কিন্তু চাচী ও মামী মাহরাম নয়:
প্রশ্ন: আপন খালা ও ফুফু মাহরাম। কিন্তু চাচী ও মামী গাইরে মাহরাম। আমাদের সমাজে এগুলোকে কোনো গুরুত্বই দেওয়া হয় না। যেমন মনে করুন, তারা কেউ এমনিতেই কথা বলার সময় আমার ঘাড়ে হাত রাখলেন। সেক্ষেত্রে তো আমারও গুনাহ হবে। বিষয়টি আমি তখন তাদের কিভাবে বুঝাব? সরাসরি তখন রিএক্ট করব নাকি বুঝিয়ে বলব? আর বুঝিয়ে বললে কি রকম?

উত্তর:
আপনি ঠিক বলেছেন, খালা মাহরাম। অনুরূপভাবে ফুফুও মাহরাম। কারণ তারা রক্ত সম্পর্কীয়। কিন্তু চাচী ও মামী মাহরাম নন।
সুতরাং, চাচী ও মামী যদি দীনী জ্ঞানে অজ্ঞতা বশত: আপনার শরীরে হাত দিতে চায় তাহলে তাদেরকে সে সুযোগ দিবেন না এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে ইসলামের বিধানটা বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন। ইসলামের বিধান না জানার কারণে অনেকে একে কিছু মনে করে না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদেরকে ক্ষমা করুন।

৬। স্বামীর পালক পিতা এবং মামা শ্বশুর স্ত্রীর জন্য মাহরাম নয়:
প্রশ্ন: আমার স্বামীকে বাল্যকাল থেকেই তার মামা প্রতিপালন করে বড় করেছে। যার কারণে আমার স্বামী তাকেই বাবা বলে থাকে। এখন প্রশ্ন হল, আমার স্বামীর এই পালক পিতা (আমার মামা শ্বশুর) কি আমার জন্য মাহরাম?

উত্তর:
আপনার স্বামীকে তার মামা ছোটকাল থেকে লালন পালন করলেও আপনার জন্য তিনি মাহরাম বলে গণ্য হবেন না। সুতরাং, আপনার স্বামীর মামার সামনে আপনার জন্য পর্দা করা জরুরি। কেননা, তিনি তার জন্মদাতা পিতা নন বরং পালক পিতা। আর ইসলামের দৃষ্টিতে মাহরাম হবে কেবল তার স্বামীর জন্মদাতা পিতা। আল্লাহ তাআ'লা মাহরাম মহিলাদের বিবরণ দিতে গিয়ে ইরশাদ করেন:

وَحَلَائِلُ أَبْنَائِكُمُ الَّذِينَ مِنْ أَصْلَابِكُمْ

“আর তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীগণ (তোমাদের জন্য হারাম)।”

৭। সৎ শ্বশুর মাহরাম নয়:
প্রশ্ন: কোন মহিলার সৎ শশুর কি তার মাহরাম হিসেবে গণ্য হবে?

উত্তর:
কোন মহিলার সৎ শশুর অর্থাৎ তার শাশুড়ির পূর্বের স্বামী (যার সাথে পরবর্তীতে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয়ে গেছে) মাহরাম নয় অর্থাৎ তার সামনে পর্দা করা ফরয। মাহরাম হবে কেবল তার স্বামীর জন্মদাতা পিতা।

যেমন, আল্লাহ তাআ'লা মাহরাম মহিলাদের বিবরণে পবিত্র কুরআনে বলেন:

وَحَلَائِلُ أَبْنَائِكُمُ الَّذِينَ مِنْ أَصْلَابِكُمْ

“আর তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীগণ (তোমাদের জন্য হারাম)।”

সুতরাং, উক্ত মহিলার স্বামী যেহেতু তার মায়ের ১ম স্বামীর ঔরসজাত পুত্র নয় সেহেতু তার স্ত্রী তার জন্য মাহরাম নয়।

৮। ফুফা ও খালু মাহরাম নয়:
প্রশ্ন: চাচা, মামা এবং ফুফা ও খালু কি মাহরাম?

উত্তর:
চাচা ও মামা মাহরাম কিন্তু ফুফা ও খালু মাহরাম নয়।

৯। মেয়ের বাবা-মা’র চাচা এবং মামা মাহরাম:
প্রশ্ন: আমার বাবা বা মায়ের আপন চাচা ও মামা (যারা সম্পর্কে আমার দাদা ও নানা) কি আমার জন্য মাহরাম হবেন?

উত্তর:
আপনার বাবা ও মায়ের আপন চাচা বা মামা আপনার জন্য মাহরাম অর্থাৎ তাদের সাথে চিরস্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম। সুতরাং, তাদের সাথে আপনার পর্দা ফরজ নয়।

১০। বাবার আপন চাচা মাহরাম কিন্তু তার ছেলে মাহরাম নয়:
প্রশ্ন: বাবার আপন চাচার ছেলে কি আমার মাহরাম হবে- সে যদি বয়সে বাবার মতই হয়? সে তো সম্পর্কে আমার চাচা হয়। তাহলেও সে কি আমার মাহরাম হবে?

উত্তর:
বাবার আপন চাচা আপনার জন্য মাহরাম কিন্তু বাবার আপন চাচার ছেলে (বা বাবার চাচতো ভাই) আপনার জন্য মাহরাম নয়। সুতরাং তার নিকট পর্দা করা জরুরি তার বয়স বাবার মত হলেও। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মেয়ে ফাতিমা রা. এর বিবাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চাচা আবু তালিবের ছেলে আলী রা. এর সাথে হয়েছে-এটার তার বড় প্রমাণ।

অত্র নিবন্ধে উপস্থাপিত মাহরাম বিষয়ক আলোচনার দলিল-প্রমান হিসেবে কুরআন-হাদিসে বর্ণিত বিস্তারিত দলিলাদি উল্লেখ করলে নিবন্ধের কলেবর অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে এবং সতন্ত্র বইয়ের আকার ধারণ করবে বিধায় এখানে শুধুমাত্র পবিত্র কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতে কারিমাসমূহ উল্লেখ করা হল। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلَّا أَنْ يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَىٰ طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ وَلَٰكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَادْخُلُوا فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَانْتَشِرُوا وَلَا مُسْتَأْنِسِينَ لِحَدِيثٍ ۚ إِنَّ ذَٰلِكُمْ كَانَ يُؤْذِي النَّبِيَّ فَيَسْتَحْيِي مِنْكُمْ ۖ وَاللَّهُ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ ۚ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ۚ ذَٰلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ ۚ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا ۚ إِنَّ ذَٰلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا [٣٣:٥٣]إِنْ تُبْدُوا شَيْئًا أَوْ تُخْفُوهُ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا [٣٣:٥٤]لَا جُنَاحَ عَلَيْهِنَّ فِي آبَائِهِنَّ وَلَا أَبْنَائِهِنَّ وَلَا إِخْوَانِهِنَّ وَلَا أَبْنَاءِ إِخْوَانِهِنَّ وَلَا أَبْنَاءِ أَخَوَاتِهِنَّ وَلَا نِسَائِهِنَّ وَلَا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ ۗ وَاتَّقِينَ اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدًا [٣٣:٥٥]

'হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।

তোমরা খোলাখুলি কিছু বল অথবা গোপন রাখ, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।

নবী-পত্নীগণের জন্যে তাঁদের পিতা পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নি পুত্র, সহধর্মিনী নারী এবং অধিকার ভুক্ত দাসদাসীগণের সামনে যাওয়ার ব্যাপারে গোনাহ নেই। নবী-পত্নীগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয় প্রত্যক্ষ করেন।' সূরা আহযাব-৫৩-৫৫

অন্য আয়াতে বর্ণিত হয়েছে-

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। সূরা নূর, আয়াত-৩০

পরবর্তী আয়াতে বর্ণিত হয়েছে-

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। সূরা নূর, আয়াত-৩১

তথ্যসূত্র:

১। সূরা আহযাব-৫৩-৫৫

২। সূরা নিসা-২৩

৩। সূরা নূর-৩০-৩১

৪। তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন-২/২৫৬-৩৬১

৫। তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন-৬/৪০১-৪০৫

৬। তাফসীরে মাযহারী-২/২৫৪-২৬১ ও ৬/৪৯৭-৫০২

আল্লাহ পাক আমাদের বিষয়গুলো জানার এবং মেনে চলার তাওফিক দিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:০৬
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×