
কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে যে দোআ পাঠ করতেন প্রিয় নবীজী!
প্রাণঘাতী মহামারি করোনা-ওমিক্রণসহ সব ধরণের কঠিন ব্যাধি থেকে বাঁচতে আল্লাহর সাহায্যের বিকল্প নেই। তিনিই মানুষকে মাহমারি ও রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি দিতে পারেন। তাই মহামারির এই সময়ে করোনা, ওমিক্রণ, ডেঙ্গুসহ যাবতীয় কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে হাদিসের এ দোয়াটি খুবই কার্যকর। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ وَالْجُذَامِ وَالْجُنُونِ وَمِنْ سَيِّئِ الأسقام» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ
অনুবাদ: আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (দু‘আয়) বলতেনঃ اَللهم إنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ البَرَصِ، وَالجُنُونِ، وَالجُذَامِ، وَسَيِّيءِ الأَسْقَامِ ‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুযা-মি, ওয়াল জুনূনি, ওয়ামিন্ সাইয়্যিয়িল আসক্বা-ম’’
অর্থাৎ- ‘হে আল্লাহ! আমি অবশ্যই আপনার কাছে ধবল, উন্মাদ, কুষ্ঠরোগ এবং সব ধরণের কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ -হাদিসের মান: সহীহ, সূত্র: আবূ দাঊদ ১৫৫৪, নাসায়ী ৫৪৯৩, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯১২৯, আহমাদ ১৩০০৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ১০৯৭, সহীহ আল জামি‘ ১২৮১
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভিন্ন হাদিসে কেয়ামতের অনেক আলামত বর্ণনা করেছেন। এক হাদিসে অন্যান্য আলামতের সাথে পৃথিবীতে ব্যাপকাকারে মহামারী ছড়িয়ে পড়ার কথাও এসেছে। বর্ণিত হয়েছে-
عَوْفَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَزْوَةِ تَبُوكَ وَهُوَ فِيْ قُبَّةٍ مِنْ أَدَمٍ فَقَالَ اعْدُدْ سِتًّا بَيْنَ يَدَيْ السَّاعَةِ مَوْتِيْ ثُمَّ فَتْحُ بَيْتِ الْمَقْدِسِ ثُمَّ مُوْتَانٌ يَأْخُذُ فِيكُمْ كَقُعَاصِ الْغَنَمِ ثُمَّ اسْتِفَاضَةُ الْمَالِ حَتَّى يُعْطَى الرَّجُلُ مِائَةَ دِيْنَارٍ فَيَظَلُّ سَاخِطًا ثُمَّ فِتْنَةٌ لَا يَبْقَى بَيْتٌ مِنْ الْعَرَبِ إِلَّا دَخَلَتْهُ ثُمَّ هُدْنَةٌ تَكُوْنُ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ بَنِي الأَصْفَرِ فَيَغْدِرُوْنَ فَيَأْتُوْنَكُمْ تَحْتَ ثَمَانِيْنَ غَايَةً تَحْتَ كُلِّ غَايَةٍ اثْنَا عَشَرَ أَلْفًا
‘আউফ ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তাবুক যুদ্ধে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলাম। তিনি তখন একটি চামড়ার তৈরি তাঁবুতে ছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কিয়ামতের আগের ছয়টি নিদর্শন গণনা করে রাখো। আমার মৃত্যু, অতঃপর বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়, অতঃপর তোমাদের মধ্যে ঘটবে মহামারী, বকরীর পালের মহামারীর মত, সম্পদের প্রাচুর্য, এমনকি এক ব্যক্তিকে একশ’ দ্বীনার দেয়ার পরেও সে অসন্তুষ্ট থাকবে। অতঃপর এমন এক ফিতনা আসবে যা আরবের প্রতিটি ঘরে প্রবেশ করবে। অতঃপর যুদ্ধ বিরতির চুক্তি-যা তোমাদের ও বানী আসফার বা রোমকদের মধ্যে সম্পাদিত হবে। অতঃপর তারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে এবং আশিটি পতাকা উড়িয়ে তোমাদের বিপক্ষে আসবে; প্রত্যেক পতাকার নীচে থাকবে বার হাজার সৈন্য। -সহিহ বুখারি, আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৯৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৯৪৯
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে অশ্লীলতা ও বেহায়পানা থেকে সতর্ক করেছেন। কারণ এসবের কারণে মানুষের ওপর নেমে আসে নাম না জানা নতুন রোগ-ব্যাধি ও ভাইরাসের আক্রমন। হাদিসে পাকে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘যখন কোনা জাতির মধ্যে বেহায়াপনা ও অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়বে তখন তাদের মধ্যে এমন এমন নতুন রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়বে; যা ইতিপূর্বে কখনো দেখা যায়নি।’ -ইবনে মাজাহ
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে বলেছেন। হাদিসে এ সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া তুলে ধরেছেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ مُنْكَرَاتِ الأَخْلاَقِ وَالأَعْمَالِ وَالأَهْوَاءِ وَ الْاَدْوَاءِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন মুনকারাতিল আখলাক্বি ওয়াল আ’মালি ওয়াল আহওয়ায়ি, ওয়াল আদওয়ায়ি।’
অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি তোমার কাছে খারাপ (নষ্ট-বাজে) চরিত্র, অন্যায় কাজ ও কুপ্রবৃত্তির অনিষ্টতা এবং বাজে অসুস্থতা ও নতুন সৃষ্ট রোগ বালাই থেকে আশ্রয় চাই।’ -তিরমিজি
মহামারি করোনা, ওমিক্রণ সংক্রমণসহ যাবতীয় কঠিন রোগ-ব্যাধি থেমে মুক্ত থাকতে যথাযথ স্বাস্থ্য সচেতনতার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। হাদিসে নির্দেশিত দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া জরুরি।
আল্লাহ তাআলা সবাইকে সব মহামারি ও রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি দান করুন। আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:০১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



