somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ! যা চেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি দয়া করেছেন আমার পরম প্রিয় রব। যা পাইনি, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই—কারণ জানি, তিনি দেন শুধু কল্যাণই। সিজদাবনত শুকরিয়া।nnপ্রত্যাশার একটি ঘর এখনও কি ফাঁকা পড়ে আছে কি না, জানি না। তবে এটুকু জানি—

মোদী সরকারের প্রতিবেশী নীতি: বন্ধুত্ব না আধিপত্যবাদ?

৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মোদী সরকারের প্রতিবেশী নীতি: বন্ধুত্ব না আধিপত্যবাদ?

ফেলানির প্রতিকি চিত্রটি এআই দ্বারা বানানো।

ভারতকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করা হলেও, মোদী সরকারের সময়কালে এ রাষ্ট্রের আচরণ অনেক ক্ষেত্রেই ভয়াবহ, নিষ্ঠুর এবং অমানবিক রূপ নিয়েছে। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ, অর্থনৈতিক শোষণ, সংখ্যালঘুদের উপর দমন-পীড়ন—এসবই ভারতের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর আধিপত্যবাদী মনোভাবকে স্পষ্ট করে তোলে। নিচে এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হলো:

সীমান্তে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নির্মম চিত্র
ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (BSF) বহু বছর ধরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে চলেছে। ২০১১ সালের ফেলানি হত্যাকাণ্ড আজও বেদনাদায়ক স্মৃতি হয়ে আছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর তথ্যমতে, ২০০০-২০২০ সাল পর্যন্ত বিএসএফ প্রায় ১,২০০ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে, যাদের অধিকাংশই দরিদ্র সীমান্তবাসী। এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়াই মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন।

প্রতিবেশী রাষ্ট্রে হস্তক্ষেপ: এক আধিপত্যবাদী কৌশল
মোদী সরকারের অধীনে প্রতিবেশী দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ আরও বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন, নেপালের সংবিধান প্রণয়ন, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের রাজনৈতিক অস্থিরতায় একের পর এক হস্তক্ষেপ ভারতের "গার্জিয়ান সিনড্রোম"-এর প্রতিচ্ছবি। ২০১৫ সালে নেপালের উপর একতরফা অবরোধ এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

প্রতিবেশীদের সঙ্গে স্থায়ী বৈরিতা
চীন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল—কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গেই মোদী সরকারের অধীনে টেকসই সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। সীমান্ত হত্যা, পানি চুক্তি নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা, বা ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রভাব—এসব বিষয়ে ভারতের শাসকগোষ্ঠীর একচোখা ও দায়িত্বহীন আচরণ দ্বিপাক্ষিক আস্থার ঘাটতি সৃষ্টি করেছে।

বাণিজ্যে বৈষম্যমূলক ও শোষণমূলক সম্পর্ক
বাংলাদেশ ভারতের পণ্য আমদানিতে অত্যন্ত নির্ভরশীল হলেও রপ্তানিতে বৈষম্যের শিকার। প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ভারতীয় পণ্যের বিপরীতে বাংলাদেশ রপ্তানি করতে পারে মাত্র ১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। বিদ্যুৎ খাতে আদানি গ্রুপের সাথে চুক্তিও প্রশ্নবিদ্ধ, যা অর্থনৈতিক অনিয়ম ও শোষণের আশঙ্কা বাড়ায়।

সংখ্যালঘুদের উপর নিষ্ঠুরতা: এক অভ্যন্তরীণ সংকট
ভারতের ভেতরে মোদী সরকারের আমলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন প্রকট হয়েছে। গুজরাট দাঙ্গা, সিএএ-এনআরসি, বাবরি মসজিদের বিচারহীনতা এবং কাশ্মীরে দমননীতি—এসব ঘটনা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চেহারায় প্রশ্ন তুলেছে। কাশ্মীরে প্রতিটি মোড়ে সশস্ত্র সেনা মোতায়েন কাশ্মীরকে যেন একটি অঘোষিত কারাগারে রূপ দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে মোদী সরকার
সংখ্যালঘু নিপীড়ন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন ইত্যাদি ইস্যুতে মোদী সরকারের সমালোচনা করেছে জাতিসংঘসহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা। এসব ঘটনা ভারতীয় গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

উপসংহার:
ভারত একসময় দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা ও শান্তির প্রতীক হওয়ার স্বপ্ন দেখালেও, মোদী সরকারের সময়কালে তা এক অসহিষ্ণু, আধিপত্যবাদী ও আঞ্চলিক শক্তির প্রতিযোগিতামূলক চেহারায় পরিণত হয়েছে। এই পথ পরিহার করে ভারত যদি সত্যিকারের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্রে পরিণত হতে চায়, তবে তার জন্য প্রয়োজন ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক ও অংশীদারিত্বমূলক কূটনীতি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০২৫ সকাল ৯:৫৪
১৪টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×