somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ! যা চেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি দয়া করেছেন আমার পরম প্রিয় রব। যা পাইনি, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই—কারণ জানি, তিনি দেন শুধু কল্যাণই। সিজদাবনত শুকরিয়া।nnপ্রত্যাশার একটি ঘর এখনও কি ফাঁকা পড়ে আছে কি না, জানি না। তবে এটুকু জানি—

একটি ঐতিহাসিক দিন: বাল সাম্রাজ্যের পতন

১১ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
একটি ঐতিহাসিক দিন: বাল সাম্রাজ্যের পতন

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

প্রিয় পাঠক, গতকাল ১০ মে ২০২৫। এই দিনটি কোনো সাধারণ দিন ছিল না। এটি ছিল ঐতিহাসিক এমন একটি দিন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সোনালি অক্ষরে লেখা থাকবে—যেমন রূপকথার গল্পে ড্রাগনকে শেষমেশ পরাজিত করা হয়, এই অভূতপূর্ব দিনে, নিকৃষ্ট ফ্যাসিবাদ নামক জানোয়ারটির লাগাম টেনে ধরা হয়েছে। হ্যাঁ, আমরা যাকে চিনি "বাল"/ "BAL" অর্থাৎ, (Bangladesh Awami League) "বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ" নামে, সেটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। “নিষিদ্ধ” শব্দটির মধ্যেই যেন এক মুক্তির সুর—বাতাস যেন হালকা হয়ে গেছে। কে জানে, এই জাতি আবার কবে এমন একটি সুসংবাদ শুনতে পারবে? হয়তো যেদিন পদ্মায় সোনার খনি মিলবে, কিংবা ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম হঠাৎ নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে।

ফ্যাসিবাদ বলতে বোঝানো হয় এমন একটি স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, যেখানে সরকার ভিন্নমত, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও জনগণের মতামতকে সম্পূর্ণরূপে দমন করে। মার্কিন ইতিহাসবিদ রবার্ট প্যাকস্টন তাঁর বই The Anatomy of Fascism-এ বলেছেন, “Fascism is marked by obsessive preoccupation with community decline, humiliation or victimhood… and the abandonment of democratic liberties.” অর্থাৎ, “ফ্যাসিবাদ এমন এক মানসিক ও রাজনৈতিক প্রবণতা, যা সমাজের অবনতি, জাতিগত অপমান বা নিপীড়নের আখ্যানকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়—এবং যার পরিণতি ঘটে গণতান্ত্রিক অধিকার ও স্বাধীনতার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে।”

গত ১৬ বছর ধরে BAL, দিল্লির প্রভুদের নির্দেশনায়, বাংলাদেশকে শোষন করেছে, এদেশের জীবনীশক্তিকে শুষে নিয়েছে—ঠিক যেন একটি রক্তলোভী মশার মতো। এই স্বঘোষিত অপশাসকরা শাসনকে রূপ দিয়েছে এক করুণ-হাস্যকর নাটকে, যার মূল সুর ছিল, “আজ কতটা লুট করা যায়?” তাদের চিত্রনাট্য রচিত হতো নয়াদিল্লির প্রাসাদে, আর অভিনেতারা ছিল একদল চামচা—আনুগত্যে অটল, মেরুদণ্ডহীন, প্রভুদের সামনে সদা মাথা নত। এরা আমাদের খেয়েছে, আমাদের পড়েছে, এবং তারপর এদেশের সেই চাষাভূষা গরিব অসহায় মানুষদের সঙ্গেই বেঈমানি করেছে, যারা তাদের পুষেছে।

BAL-এর শাসন ছিল শোষণের এক মহাকাব্য। এটি ছিল এক সার্কাস, যেখানে দর্শকদের জোর করে তালি দিতে বাধ্য করা হতো। তারা কেবল লুট করেনি; করেছে অতি দক্ষতায়। নির্বাচন? সেগুলো ছিল কোনো গণতান্ত্রিক অনুশীলন নয়, বরং “ভোয়ালা!”—এক জাদু, যেখানে ব্যালট রাতের অন্ধকারে নিখোঁজ হয়ে যেত, আর ফিরে আসত পূর্বনির্ধারিত ফলাফলে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সাল- তিনটি জাতীয় নির্বাচনই ছিল ভুয়া, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোও একে ‘নির্বাচনের ছদ্মবেশ’ বলে আখ্যা দিয়েছিল। বিচারব্যবস্থা? এক ঝুলন্ত পুতুল, যার সুতো টানতো দলের ক্ষমতাধরেরা। আর অর্থনীতি? ব্যাংকগুলোকে বানানো হয়েছে ব্যক্তিগত গোল্লাব্যাংক—টাকা উধাও, বাজার ধ্বস্ত, রিজার্ভ হাহাকার।

এছাড়াও গুম, খুন, ধর্ষণের মতো অপরাধে এরা ছিল রাষ্ট্র মদদপুষ্ট—এ যেন এক ভয়ংকর চিত্রকল্প, যেখানে জনগণ শিকার। তারা শুধু শাসন করেনি; ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশকে পরিণত করেছে এক ভোজসভায়, যেখানে খাওয়ার অধিকার ছিল কেবল তাদের।

কিন্তু গতকাল, এই চিত্র পাল্টে গেছে। ড্রাগন এখন কেবল আহত নয়, বন্দী। BAL-এর নিষেধাজ্ঞা কেবল একটি আইনি ঘোষণা নয়; এটি জাতির প্রতি একটি অঙ্গীকার, যে আর কোনো মধ্যরাতের ভোট বা নিখোঁজ কর্মীর গল্পে ঘুম ভাঙবে না। চামচাদের বিদায় জানানো হয়েছে, আর তাদের দিল্লি-রচিত স্ক্রিপ্ট বুড়িগঙ্গায় ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে।

অবশ্য BAL-এর অনুসারীরা এখন গণতন্ত্রের উপর আক্রমণের বুলি আওড়াবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—তারা কি আদৌ কখনো গণতন্ত্রকে সম্মান করেছে? যারা ভোটকে ক্যাসিনোর চিপ বানিয়ে তুলেছিল, তারা কি এখন গণতন্ত্রের পাঠ পড়াবে? না, এটি গণতন্ত্রের প্রতিশোধ—বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে উচ্চারিত “চেকমেট।”

তাই, আসুন গতকালের ঐতিহাসিক দিনটির জন্য একটি গ্লাস বোরহানি হয়ে যাক। যেদিনটির সূর্যটা একটু উজ্জ্বল ছিল, বাতাসে ছিল ন্যায়ের সুবাস, আর BAL-এর মিথ্যার দুর্গ বালির প্রাসাদের মতো ভেঙে পড়েছিল। উৎসর্গ করি ভবিষ্যতের জন্য—যেখানে বাংলাদেশ হবে তার জনগণের, কোনো বিদেশি-তোষণকারী ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠীর নয়। আর BAL-এর জন্য? যেমন বিদায়বেলায় বলা হয়, “বিদায় ভাই, দরজায় ধাক্কা না লাগে—এই কামনা।”
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×