আইয়্যামে তাশরীকের দিনগুলোতে, অর্থাৎ জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামাজের পর থেকে ১৩ তারিখ আসরের নামাজ পর্যন্ত (১১, ১২ ও ১৩ জিলহজ), প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব। এই তাকবির হলো:
اللّهُ أكبر اللّهُ أكبر، لا إلهَ إلا اللّهُ واللّهُ أكبر، اللّهُ أكبر وللّهِ الحمد
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: যারা পড়বে: নারী-পুরুষ, মুকিম-মুসাফির, গ্রাম-শহরের সব বালিগ মুসলিমের জন্য এটি ওয়াজিব। জামাতে বা একাকী নামাজের পর পড়তে হয়। হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “তাকবিরে তাশরিক ওয়াজিব প্রত্যেক মুসলিমের উপর, যারা ফরজ নামাজ আদায় করে, পুরুষ হোক বা নারী।” -সূত্র: মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং: ১৩২৫
কখন পড়তে হয়: প্রতি ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পরপরই তাকবির পড়া ওয়াজিব। ইমাম ভুলে গেলেও মুক্তাদির পড়া আবশ্যক।
তাকবিরে তাশরিক উচ্চস্বরে পড়া পুরুষদের জন্য মুস্তাহাব, তবে নারীদের জন্য নিম্নস্বরে পড়া উত্তম।
ভুলে গেলে: নামাজের পর তাকবির না বলে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া, কথা বলা বা অজু ভঙ্গ করলে তাকবির পড়ার ওয়াজিব আদায় হয় না। তবে স্মরণ হলে তৎক্ষণাৎ পড়ে নেওয়া উচিত।
অন্যান্য আমল: এই দিনগুলো খাওয়া-দাওয়া, আল্লাহর যিকির ও শুকরিয়ার জন্য। রোজা রাখা নিষিদ্ধ, কারণ এটি ঈদের আনন্দ ও যিকিরের সময়। এই দিনগুলোতে বেশি বেশি দান-সদকা করা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য আমল করার জন্য উৎসাহিত করা হয়।
জিকির ও দুআ: এই দিনগুলোতে বেশি বেশি জিকির, তাসবিহ, তাহমিদ এবং দুআ পড়া উত্তম। এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের বিশেষ সময়। ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “তোমরা আইয়্যামে তাশরিকে আল্লাহর জিকির বেশি বেশি করো।”
-মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং: ৬১৬২
ফজিলত: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আইয়্যামে তাশরীকের তাকবিরের আমল অন্য কোনো দিনের আমলের চেয়ে উত্তম।
ঐতিহাসিক পটভূমি: তাকবিরে তাশরীকের শুরু হযরত ইবরাহিম (আ.)-এর সময় থেকে, যখন তিনি পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে কুরবানির জন্য প্রস্তুত হন। এই দিনগুলোতে যিকির ও তাকবিরের মাধ্যমে আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা করা হয়।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই দিনগুলোর হক আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০২৫ সকাল ১০:০২