অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।
মক্কাতুল মোকাররমা, পবিত্র হারাম শরীফের পুণ্যভূমি—যেখানে আকাশের প্রতিটি ঢেউ এখন ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর। পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা আবারও শুরু হয়েছে, যেন এক অপরূপ ধর্মীয় আবেগে সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে আপ্লুত করেছে। কাবা শরীফকে কেন্দ্র করে হযরত ইবরাহিম (আ.) ও হযরত ইসমাঈল (আ.)-এর স্মৃতি-বিজড়িত এই মহানুষ্ঠান কোটি হৃদয়ের নিঃস্বার্থ আত্মসমর্পণের জীবন্ত প্রতীক।
বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা লক্ষ লক্ষ মুসলমান এখন মক্কার পবিত্র ভূমিতে একত্রিত। শ্বেতবসনে তাওহিদের এই সৈনিকেরা মীনার তাবু শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, সমবেত হচ্ছেন আরাফার ময়দানে। সেখানে তারা অশ্রুসিক্ত নয়নে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন, আত্মাকে পরিশুদ্ধ করবেন। মীনার তাবু শহর এখন মানুষের পদচারণায় প্রাণবন্ত, আরাফার মাঠে বইছে আত্মনিবেদনের পবিত্র বাতাস। হাজিরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়—সেই মহান দিনের, যেদিন আল্লাহ তাআলা বান্দার গুনাহ মাফ করেন। মুযদালিফায় রাত্রি যাপনের পর তারা ফিরবেন মীনায়, শয়তানের প্রতীকী পাথর নিক্ষেপে পুনরুদ্ধার করবেন প্রতিজ্ঞা, আর কোরবানির মাধ্যমে ত্যাগের অমর দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন।
হজ কেবল ধর্মীয় আচরণ নয়, এটি এক আত্মিক বিপ্লব। এখানে মানুষ ভুলে যায় অহংকার, শ্রেণি, জাতি, ভাষা ও বর্ণের সীমানা। এখানে নেই কোনো রাষ্ট্রের ভৌগোলিক সীমা, নেই জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের অহমিকা—আছে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মহৎ আকাঙ্ক্ষা। মক্কার হারাম শরীফ, কাবা শরীফের পবিত্র চত্বর এখন ভালোবাসা, কাঁতরতা ও ত্যাগের মহোৎসবে মুখর। আকাশে-বাতাসে ভাসছে তাকওয়ার সৌরভ। এই পবিত্র মিলনমেলার প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি অশ্রু, প্রতিটি কোরবানি যেন নবজীবন, আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর পথে ফিরে আসার অপূর্ব প্রেরণা।
হজ হলো আল্লাহর দিকে ফেরার, ক্ষমা পাওয়ার এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের মহান আহ্বান। লক্ষ প্রাণের এই মিলনমেলা মুসলিম বিশ্বের জন্য শান্তি, সংহতি ও সৌভ্রাতৃত্বের অমূল্য বার্তা বয়ে আনুক। প্রার্থনা, এই হজ গোটা বিশ্বের মানুষের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করুক।
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০২৫ সকাল ১০:৫৩
