
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)–এর কাঠামোগত সংস্কারের অংশ হিসেবে সরকার গত ১২ মে একটি অধ্যাদেশ জারি করে। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী এনবিআর ও আইআরডি বিলুপ্ত করে দুটি পৃথক বিভাগ গঠন করা হয়—রাজস্বনীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল করহারের নীতিমালা প্রণয়ন এবং কর আদায়ের কার্যক্রমকে আলাদা করা, যাতে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করা যায়।
কিন্তু এই কাঠামো সংস্কারের উদ্যোগ বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে এনবিআরের ভেতরে শুরু হয় তীব্র অসন্তোষ। ১২ মে থেকে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে নেমে পড়েন, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে একধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। করদাতাদের সেবা ব্যাহত হতে থাকে, এবং সরকারের রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে আসে বড় ধরনের স্থবিরতা।
ঠিক এমন সময়েই, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এনবিআরের ছয়জন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ঘুষের বিনিময়ে কর ফাঁকির সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে। দুদকের এই অনুসন্ধান স্পষ্ট বার্তা দেয়—এনবিআরের মতো সংস্থায় জবাবদিহিতাহীনতার জায়গা আর নেই। যাঁরা বছরের পর বছর ধরেই প্রতিরোধ বা সংস্কারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁরাই আজ তদন্তের মুখোমুখি।
এমন সময়োপযোগী পদক্ষেপের প্রভাবও তাত্ক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান হয়েছে। অনুসন্ধান শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই আন্দোলনকারী কর্মকর্তারা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। আর এখানেই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে একটি পুরনো কথার প্রমাণ—"জায়গামতো ওষুধ পড়লে, চ্যালচ্যালাইয়া কাজ হয়।"
সময়ের প্রয়োজনে যথাযথ পদক্ষেপ নিলে তা যে কতটা কার্যকর হতে পারে, এনবিআরের ঘটনাই তার জ্বলন্ত উদাহরণ। আন্দোলনের চাপ সামলাতে গিয়ে যখন গোটা রাজস্ব প্রশাসনই স্থবির হয়ে পড়েছিল, তখন সরকারের দৃঢ় অবস্থান এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিই পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। এখন এনবিআরের আন্দোলনকারীদের অবস্থা অনেকটা—"ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি!"
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতিসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দিয়েছেন
এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দিয়েছেন
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৪:৪০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




