somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৮-১০ এপ্রিল ২০১৪ ঢাকা-তিস্তা ব্যারেজ রোডমার্চ সফল করুন

৩১ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিস্তা বাঁচাও - কৃষি ও কৃষক বাঁচাও - দেশ বাঁচাও
তিস্তা থেকে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার বন্ধ কর
সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত কর

৮-১০ এপ্রিল ২০১৪ ঢাকা-তিস্তা ব্যারেজ রোডমার্চ সফল করুন

প্রিয় দেশবাসী,
সংগ্রামী শুভেচ্ছা। স্মরণকালের ভয়াবহ পানি সংকটে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম নদী তিস্তা। পানির অভাবে তিস্তা পাড়ের ১২টি উপজেলার প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমির বোরো আবাদ চরম বিপর্যয়ের মুখে। এর ফলে ওই বিস্তীর্ণ এলাকায় কৃষকসহ কৃষির সাথে যুক্ত বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে হাহাকার শুরু হয়েছে। ভারতের জলপাইগুড়িতে তিস্তা নদীর ওপর গজলডোবা ব্যারেজের সকল গেইট বন্ধ করে একতরফা পানি প্রত্যাহার করায় উত্তরাঞ্চলের কৃষিখাতে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে এসেছে। বাংলাদেশ পানির ন্যায্য হিস্যা দূরে থাক, আগে যে পানিটুকু পাওয়া যেত, ভারত তাও এখন বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে আমাদের দেশের বৃহৎ সেচ প্রকল্প ‘তিস্তা সেচ প্রকল্প’ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, তিস্তায় পানি না থাকায় এ অঞ্চলের ধরলা, ঘাঘট, যমুনেশ্বরী, আখিরা, দুধকুমার, বুড়ি তিস্তাসহ প্রায় ৩৩টি ছোট বড় নদ-নদী ভরাট হয়ে গেছে। রংপুর অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে মাত্রাতিরিক্তভাবে। বর্তমানে তিস্তায় পানির প্রবাহ মাত্র ৫০০ কিউসেক। অথচ গত বছর এ শুকনো মৌসুমে পানির প্রবাহ ছিল গড়ে ৫০০০ কিউসেক।

তিস্তার পানি বণ্টনে ভারতের সাথে সমস্যার দীর্ঘদিন ধরে কোনো সমাধান হয়নি। ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে ভারত-বাংলাদেশ মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তিস্তার পানির ৩৬ শতাংশ বাংলাদেশ, ৩৯ শতাংশ ভারত, বাকি ২৫ শতাংশ সংরক্ষিত থাকার কথা থাকলেও তা ভারতের কারণে বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর বাংলাদেশ সফরের সময় তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরোধিতাকে অজুহাত হিসাবে দাঁড় করিয়ে ভারত সরকার চুক্তি করতে অপারগতা প্রকাশ করে। তিস্তার পানি পাওয়া আমাদের ন্যায্য অধিকার। আন্তর্জাতিক আইনও এক্ষেত্রে আমাদের পক্ষে। হেলসিংকি নীতিমালা অনুসারে প্রতিটি নদী তীরবর্তী রাষ্ট্র তার সীমানায় পানি সম্পদের ব্যবহারের অধিকার ভোগ করবে যুক্তি ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে। পানি উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা অবশ্যই সংশিস্নষ্ট সবার অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ জলপ্রবাহ কনভেনশনে পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যুক্তি ও ন্যায়পরায়ণতার নীতিমালা গ্রহণ করে। কিন্তু তিস্তার পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতিবেশী ভারত এসব আমলে নেয়া প্রয়োজন বোধ করছে না।

শুধু তিস্তা নয়, দু'দেশের অভিন্ন ৫৪টি নদীর মধ্যে ৫১টি নদীর উজানে ভারত অসংখ্য বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে চলেছে। ফলে নদীমাতৃক বাংলাদেশের অধিকাংশ নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন মরুকরণের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এর পরিণতিতে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এখন আবার মেঘনার উৎস-নদী সুরমা-কুশিয়ারার উজানে টিপাইবাঁধ এবং ব্রহ্মপুত্র থেকে পানি সরিয়ে নেয়ার আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নের তোড়জোড় চালাচ্ছে ভারত।

ভারতের কাছ থেকে গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ করেছিলেন ১৯৭৬ সালে। এছাড়া দেশের বামপন্থী শক্তি এবং জনগণের পক্ষ থেকে অভিন্ন নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বহু আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার, খালেদা-এরশাদসহ সকল সরকার গত ৪২ বছরে দেশের স্বার্থে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে দৃঢ় অবস্থান নিতে পারেনি। ভারতের মদদ নিয়ে ক্ষমতায় থেকে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে তারা চুক্তি করেছে; যার মধ্যে ২০১০ সালে হাসিনা-মনমোহন চুক্তি, ট্রানজিটের নামে করিডোর প্রদান করে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর এবং আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর ভারতের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন প্রদান, সন্ত্রাস দমনের নামে আঞ্চলিক টাস্ড়্গফোর্স গঠন করে আমাদের দেশে ভারতের সামরিক উপস্থিতির সুযোগ করে দেওয়া, বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবন ধ্বংস করে ভারতের স্বার্থে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি এবং সমুদ্রের দু’টি গ্যাস ব্লক ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

এ প্রেক্ষাপটে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে শেখ হাসিনা সরকারকে ভারতের সাথে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার করে স্বাধীন অবস্থান থেকে জোরালো কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রাখা এবং জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সংস্থায় তিস্তার পানি বণ্টনের সমস্যাটি তুলে ধরা এখন সময়ের জরুরি দাবি। দেশের ১৬ কোটি মানুষকে তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪টি নদী বাঁচাতে পানির ন্যায্য পাওনা আদায়ের সংগ্রামে রাজপথে সোচ্চার হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ নেই। এর পাশাপাশি আমরা ভারতের গণতন্ত্রমনা জনগণকে সংকট সমাধানে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।
সে লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার পক্ষ থেকে আগামী ৮-১০ এপ্রিল ২০১৪ ঢাকা থেকে নীলফামারীর তিস্তা ব্যারেজ পর্যন্ত রোডমার্চ সফল করতে সচেতন দেশবাসীর অংশগ্রহণ ও সহযোগিতার জন্য আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

৮-১০ এপ্রিল ঢাকা-তিস্তা ব্যারেজ রোডমার্চ সফল করুন


৮ এপ্রিল মঙ্গলবার : সকাল ৯টায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে যাত্রা শুরু, সকাল ১১টায় জয়দেবপুর চৌরাস্তা, দুপুর ১টায় টাঙ্গাইল, দুপুর ৩টায় হাটিকুমরুল মোড়, বিকাল ৫টায় বগুড়ার সাতমাথায় জনসভা

৯ এপ্রিল বুধবার : সকাল ৯টায় বগুড়া থেকে যাত্রা শুরু, সকাল ১১টায় গোবিন্দগঞ্জ, দুপুর ১২.৩০মি. পলাশবাড়ি, দুপুর ৩টায় শঠিবাড়ি, বিকাল ৫টায় রংপুর পায়রা চত্ব্বরে জনসভা

১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার : সকাল ৯টায় রংপুর থেকে পাগলাপীর, জলঢাকা হয়ে পথে পথে সমাবেশ শেষে
বিকাল ৪টায় তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন দোয়ানী বাজারে সমাপনী সমাবেশ

গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা
কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ
অস্থায়ী কার্যালয় : ২৩/২ তোপখানা রোড (নিচতলা), ঢাকা-১০০০।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি), গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, শ্রমিক-কৃষক সমাজবাদী দল, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন
যোগাযোগ : ০১৭১২৪০৪৩৩৮, ০১৭১১১৮২০৫৯, ০১৭১৫১৮৯৫৪৫,০১৭১১৮৯৫৮৪৫।
প্রকাশকাল : ১ এপ্রিল ২০১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×