somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বাস করেন, আমি আসলেই বাংলাদেশী!

২৯ শে মার্চ, ২০১১ রাত ১২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা, বাংলাদেশীরা বরাবরই আবেগপ্রবণ। তাই আমরা যে কোন খেলার মাঝেও অনেক আবেগ নিয়ে আসি। তা ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফুটবল খেলা হোক, আর ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট খেলাই হোক। জার্সি, পতাকা উড়ানো, মারামারি, হাতাহাতি, আনন্দ-উল্লাস, কান্না, পটকা ফাটানো, বিজয় মিছিল; ডিজিটালের মধ্যে - ফেসবুকে স্ট্যাটাস, টুইটারে টুইট, প্রোফাইল ফটো, ব্লগ, সাইবার যুদ্ধ (!) - কোন কিছুই বাদ যায় না আমাদের সর্মথন প্রকাশের মাধ্যম থেকে। নাহ! এইসব শুধু আমরা বাংলাদেশীরা একাই করি না। খেলুড়ে সকল দেশের মানুষই কম-বেশি আমাদের মতই করে। কিন্তু কোথায় যেন বিরাট তফাৎ! আপনি কি তফাৎটি ধরতে পেরেছেন? জ্বী, অন্য সকল দেশের মানুষ আমাদের মতই তাদের সর্মথন প্রকাশ করে তার প্রিয় দলের প্রতি, কিন্তু তাদের এই প্রিয় দল যে তাদের নিজেদের মাতৃভূমি! ফুটবলে না হয় বাদ দিলাম, কিন্তু ক্রিকেটে আমাদের কত জনের প্রথম প্রিয় দল বাংলাদেশ? অন্য দেশের মানুষ শুধু নিজেদের দেশের খেলাই দেখে না, অন্য দেশের খেলাও দেখে। অনেকে অন্য কোন দলকে সর্মথনও করে। কিন্তু তারা তা করে কারন খেলা একটি বিনোদন। তাদের অন্য দেশের প্রতি সর্মথন শুধু বিনোদন পাবার জন্যই। এই সর্মথনের মাঝে নেই সেই আবেগ যা নিজের দেশের প্রতি থাকে। তাই আমরা যদি শুধুই যে দেশের ইচ্ছা খেলা দেখি, যে দেশকে ইচ্ছা সর্মথন জানাই, কিন্তু অন্য সেই দেশের জন্য এত আবেগপ্রবন না হই, তাহলে আমার মত কিছু মানুষকে এই বিষয়ে (সিরিয়াস) ব্লগ লিখার প্রয়োজনও হবে না।

কিছু মানুষ কতটা অতিরিক্ত করেছে পাকিস্তানকে সমর্থন দেখাতে গিয়ে যে একজন পাকিস্তানি মেয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তান ভাবতে শুরু করেছিল! নিচের লিঙ্কটি একটি পাকিস্তানি খবরের কাগজের, যেখানে একজন পাকিস্তানি মেয়ে বাংলাদেশে এসে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর মধ্যকার ম্যাচ দেখার অনুভূতি বর্ণনা করেছে।

আমি অন্য কোন ক্রিকেট খেলুড়ে দেশকে সমর্থন দেয়ার বিপক্ষে না। সমর্থন প্রকাশের নমুনা যদি এমন হয় যে সমর্থন প্রাপ্ত দেশের মানুষ আমাদেরকে তাদের নিজের দেশের মানুষ ভাবা শুরু করে অথবা আমাদের দেশকে নিজের দেশ ভাবা শুরু করে তাহলে আমি এমন বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের বিরুদ্ধে! অন্তত আমার কাছে আমাদের পরিচয় এত সস্তা না যে কেউ চাইলেই সেই পরিচয় নিয়ে নিতে পারবে। আর পাকিস্তানের বেলায় তো কোন ভাবেই না।

পাকিস্তান বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ" এর খেলার আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম যে - "আমার ক্ষমতা থাকলে আমি সাত বছরের জেল দিতাম সেই সব বাংলাদেশী ক্রিকেট দর্শককে যারা আমাদের মাটিতে পাকিস্তানের পতাকা উড়াবে। এক্ষেত্রে কেউ যদি আমাকে বৈষম্যবাদী বলেন তাহলে এমন বৈষম্যবাদী হয়ে আমি গর্ব বোধ করি।"
আমি সেই দিন বুঝতে পারিনি যে কিছু মানুষ শুধু পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়েই শান্ত থাকবে না, তারা পাকিস্তানের প্রতি এমন উন্মাদনাই দেখাবে, এত বাঁধ ভাঙ্গা সমর্থন জানাবে যে পাকিস্তানিরা ফেসবুকের একটি পেজ, "Bangladesh"- এ আমাদের ধন্যবাদ দিতে দিতে মুখে ফেনা তুলে ফেলবে! তাদের সেই লিখাগুলোর মাঝে যতটা না ধন্যবাদ ছিল, তার চেয়ে বেশি ছিল তিরষ্কার। আর ষোল আনা পূর্ণ করলো "সালেহা রিয়াজ" নামে এই পাকিস্তানি মেয়েটি।
লিঙ্কঃ View this link

[কিছু অংশবিশেষঃ
"every few minutes I would forget I wasn’t in Pakistan, that we weren’t allowed to co-host the World Cup, that our inability to protect our own citizens, let alone foreign teams, had deprived us of watching matches at home for years, and I would start talking in Urdu to the man selling souvenirs. Only to have him look at me all confused, making me realise I needed to switch to English."

before they had an international level cricket team, their support had been completely for Pakistan. And now we were number two on their list of favourites, for the simple reason that they were once a part of us.

the (only other) Pakistani next to me said — “I’ve had enough, I’m not getting up for the next one. I don’t understand how these supporters are so enthusiastic about a team that’s not theirs.”

- Published in The Express Tribune, March 25th, 2011.]

জানি না ৩০ শে মার্চ কত জন ভারতীয় বা পাকিস্তানি বাংলাদেশকে তাদের নিজেদের দেশ ভাবার সৌভাগ্য পাবে! নাকি বলা উচিত, কত জন বাংলাদেশী নিজের দেশকে বাংলাদেশ রূপে দেখার সৌভাগ্য পাবে!

আপনারা দয়া করে এমন ভাবে সমর্থন জানাবেন না যে আপনাকে কেউ পাকিস্তানি ভাবতে শুরু করে। হয়তো আপনাকে ভীনদেশী কোন মানুষকে শেষ পর্যন্ত বলতে হবে - "Believe me, I'm really Bangladeshi!"

আমি রাগান্নিত, অপমানিত ও লজ্জিত। আপনি হয়তো না! না হলেও আমি আপনাকে কোন দোষ দিব না। কারন আপনার কাছে তো অপমান ও লজ্জা ঢাকার জন্য আগে থেকেই উত্তর তৈরি আছে - "Dude! actually, I don't mix up game with politics. It's just a game. So, I don't care!"

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১১ রাত ১০:২৬
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×