somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হুদাই প্যাচাল (কাজকর্ম কিছু না থাকলে পড়ে সময় নষ্ট করতে পারেন :D)

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৩:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মহান ভাষা শহীদদের স্মরনে আজ কিছু লেখার ইচ্ছা করছে।এ ছাড়া আর তেমন কিছু করার তো হিম্মত আমার মত অকৃতজ্ঞ বাঙালীর নাই।আমি শুধু পারি গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে আর চিন্তায় থাকি কেমনে অন্যের ভুলটা ধরে নিজেকে জ্ঞানী বুদ্ধিজীবি প্রমান করা যায়।।
থাক এইসব ফাউল প্যাচাল পেড়ে আর কি হবে?এই রকম প্যাচাল তো আর আমরা কম পারি না।।
তাই আজ কিছু ঘটনা শোনাব সবাইকে.....

ঘটনা - ১ -
কয়েকদিন আগে একটা টিউশনি শুরু করেছি।যেদিন প্রথম গেলাম পরিচিত হতে বাসায় , গিয়ে দেখি ছাত্র পড়ে ক্লাস থ্রি তে (অবশ্যই ইংলিশ মিডিয়ামের, না হলে কি আর বুঝানো যায় যে ফ্যামিলি স্ট্যাটাস কত উপ্রে??)।তো যথারীতি কথা বলতে বলতে ছাত্রের মায়ের কাছে জানা গেল ছাত্র মোটামুটি সব বিষয়ে বেশ ভালো শুধু বাংলা তে কিছু সমস্যা । অবশ্য তাও তিনি আশার বাণি শোনালেন যে তিনিই দেখবেন বাংলাটা এবং একটা পরামর্শ দিলেন ছাত্রের সাথে যথাসম্ভব ইংরেজীতে কথা বলতে তাহলে নাকি ছেলে ভালো বুঝবে।।
এ তো গেল ছাত্রের কথা।ছাত্রের আবার পিচ্চি একটা বোন আছে এখনো স্কুলে ভর্তি হয় নি(তবে কথা বেশ ভালোই বলতে পারে)।পরশু দিন আমি যখন পড়াচ্ছি ছাত্রকে তখন অই পিচ্চি পাশে খেলছিল আর মাঝে মাঝে কথা বলছি।কিছুক্ষন পর খেয়াল করলাম ও চেষ্টা করছে বেশির ভাগ কথা হিন্দি তে বলতে এবং বেশ পরিষ্কার ও সাবলীল ভাবেই বলছে।তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম আরে তুমি হিন্দিতে কথা বলতে পার? এরপর যে উত্তরটা দিল আমি সেটা কোড করছি " ছেলেরা কথা বলে বাংলায় আর মেয়েরা কথা বলতে পারে হিন্দিতে" (কথাটা যারা পড়ছেন তাদের কতটা বিশ্বাস করছেন জানি না তবে আমি নিজে ঐ মুহূর্তে বিশ্বাস করতে পারি নি।) ঐ মেয়ের মুখ থেকে এই কথা বলার মানে হল তার মা সারাদিন তাকে নিয়ে বসে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখে।।

ঘটনা - ২ -
এইবার যাই আমার নিজের ফ্যামিলিতে।কিছুদিন আগে বাড়িতে গিয়েছিলাম ,গিয়ে দেখি আমার একটা ভাগিনা এসেছে (ক্লাস সিক্সে ভর্তি হয়েছে আমাদের বাসা থেকে স্কুলে যাওয়া আসা করে)।ও থ্রি থেকে ফাইভ পর্যন্ত একটা আবাসিক স্কুলে পড়েছে।তো বাসায় যাওয়ার অল্প দিনেই বুঝলাম হিন্দি সিনেমার মোটামুটি মিনি ডিকশনারী হয়ে গেছে।ওর কাছে এন্টারটেইনমেন্ট মানে হিন্দি সিরিয়াল আর সিনেমা ।একদিন ওর কাছে জানতে চাইলাম এই সিনেমা টিনেমা সম্পর্কে এত কিছু জানল কিভাবে? তখন বলল এইসব সিমেনা ও দেখেছে স্কুলে, অবসরে স্কুলে দেখাত।ঘটনা এই পর্যন্ত হলেও কোন ব্যাপার ছিল না।কিছু এর পরও আরো কিছু আছে।পরদিন ও ওর খালামনির কাছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট দেখার জন্য অনুমতি চেয়ে বলল - খালা মনি আমাকে শুধু যেদিন ইন্ডিয়ার খেলা থাকবে সেদিন টিভি দেখতে দিও।এই কথা শুনে আমি বললাম কেন তুমি আর অন্যকোন ম্যাচ দেখবে না?বাংলাদেশের? ও বলে - না।আমি তো ইন্ডিয়ার সার্পোটার।।

ঘটনা - ৩ -
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গিয়েছিলাম বই মেলাতে।ঘুরতে ঘুরতে একটা স্টলের সামনে এসে দাঁড়িয়েছি।নামটা ভুলে গেছি দোকানটার, তবে ওখানে ক্রিকেটের বেশ কিছু বই ছিল।তো ঐ সময় এক ভদ্রলোকের সাথে একটা ছেলে এসেছে (বয়স ১০-১২ হবে)।ও ক্রিকেটে বই খুজছে দেখে দোকানদার ওকে বাংলাদেশ টীমের প্লেয়ারদের নিয়ে লেখা একটি বই দিল।আর সাথে সাথে ও বলে উঠল আমি এই বই নিব না।অভিভাবক জিজ্ঞেস করল কেন?কমন উত্তর দিল - আমি তো ভারতের সার্পোটার।

এই হল অবস্থা।আমার এই লেখার উদ্দেশ্য ভারত বিরোধিতা নয়।কারন উপরোক্ত একটা ঘটনার জন্যই আমি ভারতকে দায়ী করতে পারব না।ভারত সরকার কিংবা কোন মানুষ এসে আমাদের বলে দেয় নি তোমরা তোমাদের ছেলেমেয়েদের হিন্দি শেখাও জন্মের পর থেকে কিংবা সারাদিন বসে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখো।
এখন কথা হচ্ছে তাহলে কেন আমরা এখনও আমরা এগুলো করছি?এই পরিস্থিতিতে তো ভারতকে দোষারোপ করে কোন লাভ নাই।তারা চেষ্টা করছে তাদের সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দিতে যা অন্য যে কোন দেশ করবে।আর এ জন্য তারা পরিশ্রম ও করছে আর তার ফলও পাচ্ছে।

মাঝে মাঝে মনে হয় আমাদের দেশে ইন্ডিয়ান সিরিয়ালগুলো (হিন্দি তো আছেই এখন বাংলাগুলোও মানুষ দেখছে) কেন এত দেখে?আমাদের দেশের নাটকের থেকে মানে ও গুনে যে খুব ভালো তা মনে হয় নি।।তারপরও মানুষ বাংলাদেশের নাটক না দেখার সবচেয়ে বড় কারন মনে হয় পরিকল্পনাহীনতা আর মাত্রাতিরিক্ত বিজ্ঞাপন।ইন্ডিয়ান চ্যানেলগুলোতে যে বিজ্ঞাপন কম দেয় তা নয় কিন্তু বিজ্ঞাপনের সময়টা একটু কম হয়।একদিন বাংলাদেশের যেকোন চ্যানেলে নাটক দেখতে বসেন,আশা করি বুঝবেন (অনেকে আগেই বুঝেছেন)।।

জন্মের পর থেকেই যদি বাচ্চাদের দেখাই বাংলাদেশের নিজস্ব বলতে কিছু নাই তাইলে আর কোন দুঃখে তারা বলবে আমি বাংলাদেশের সাপোর্টার?????

(অনেক্ষন আজাইড়া প্যাচাল পাইড়া আপনাদের মুড মনে হয় নষ্ট করে ফেলেছি, ক্ষমা করবেন তাইলে :):D:DB-))
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১০:১৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×