somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নাজিম হাসান
আমি নাজিম হাসান, জার্মানির কোলন শহরের প্রেমে পড়েছি। পড়ছি যন্ত্র প্রকৌশল এবং কম্পিউটার প্রকৌশলে একসাথে । ভালোবসি ভ্রমন করতে, শখের জন্য গিটার নিয়ে অবসরে টুংটাং।কিছুটা আত্মকেন্দ্রিক, রান্না করা অনেক পছন্দের কাজ। এতোকিছুর পরও কিছু সময় অবশিষ্ট থেকেই যায়,

জার্মানিতে ভালোবাসা দিবস

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




দুঃখিত, লেখাটা ১৪ তারিখের হলেও সময় স্বল্পতার কারনে আজ পোষ্ট করতে হলো। লিখছি,


আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ভালোবাসা দিবস। ভেবেছিলাম ভালোবাসা নিয়ে কিছু আর লিখবো না। তবে আজ বেলা ১:৫০ এ ঘটা একটি মুহুর্তের কারনে ভালোবাসা নিয়ে না লিখে পারলাম না। ১:৪৫ এর দিকে ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে ছেড়ে আসে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের একটি ধবধবে সাদা একটা ট্রেন, যা কিনা আমস্টারডামে যাচ্ছে। আমি স্টেশনে আসার পরই একটা দম্পতি আমার নজর কাড়ে। জার্মান দম্পতি, বয়স বেশী নয়, ২৮-৩০ হবে হয়ত। দেখছিলাম কাঁদছিলো মহিলা, তার স্বামী তাকে শান্তনা দিচ্ছিলো। ট্রেন আসার পর আমি কান্না করার কারনটা বুঝতে পারলাম। লোকটি তার বউকে ট্রেনে তুলে দিলো, কিন্তু মহিলাটি তখনোও অঝরে কাঁদছে, লোকটি আর নিজেকে সামলাতে পারলোনা। সে ও কাঁদতে থাকলো তার বউয়ের হাত ধরে। আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম যে যার মতো ব্যস্ত। খুব খারাপ লাগলো মনে। কোলন থেকে আমস্টারডাম বড়জোড় ১.৫-২ ঘন্টার পথ। কিন্তু তাদের কান্না দেখে মনে হলো একজন আর একজনকে ছেড়ে যোজন যোজন দূরে চলে যাচ্ছে। খুব অদ্ভুত একটা অনুভুতি হলো, খারাপ লাগলো, ভালো ও লাগলো। খারাপ লাগলো তাদের বিভাজনের জন্য, আর ভালো লাগাটা তাদের ভালোবাসার প্রখরতার কারনে। ততক্ষনে দরজা বন্ধ হয়ে গেলো ট্রেনের, চলতে শুরু করলো ট্রেন। লোকটা কেঁদেই যাচ্ছিলো।আমার ট্রেন চলে এলে, ট্রেনে উঠে দেখলাম লোকটি চোখ মুঁছতে মুঁছতে চলে যাচ্ছে। আজকাল ভালোবাসার খুব করুণ পরিণতি দেখছি। যেখানে শুকিয়ে মরা নদীর মতো ভালোবাসা মরছে, ঠিক হয়তো অন্য কোথাও বরফ গলা নদীর মতো বেঁচে আছে ভালোবাসার দৃষ্টান্ত। আমি এসেছি একটি দেশ থেকে যেখানে ভালোবাসার দৃষ্টান্ত যেমন আছে, আছে ঠিক তেমনি ভালোবেসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ঘটনাও। আজ ও মাঝে মাঝে মনে হয় কিইবা এমন হতো রুপাই আর সোনাইকে মেনে নিলে? কিইবা হতো সামাজিক স্তর থেকে বের হয়ে মহানুভবতার স্তরের দৃষ্টান্তে পদার্পন করলে? হয়তো ঘুরে ফিরে বার বার আসতো না নকশিকাঁথার মাঠ কিংবা সোজন বাদিয়ার ঘাটের কাহিনী। খুব কি ক্ষতি হয়ে যেতো এতে? হ্যাঁ, ক্ষতি অবশ্য অনেক বড় হতো, সোনাই আর রুপাই ভালো থাকতো। সমাজ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। সমাজ বদলানোর কোনো দরকার নেই, দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেলে সমাজ এমনিতেই বদলে যাবে। অবশ্য সংঙ্কীর্ন মন নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর অভিপ্রায় করাও নিরর্থক। দিনশেষে কামনা, বেঁচে থাকুক ভালোবাসা, বেঁচে থাকুক দৃষ্টান্ত, ঘুঁচে যাক সকল সঙ্কীর্নতা, বদলাক দৃষ্টিভঙ্গি ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:১২
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×