{ আজকেই আমার ব্লগে ৬ মাস বয়স হলো । দীর্ঘ যাত্রার তুলনায় এই সময়টা তেমন কিছুই না তবুও আমার মত প্রব্রজ্যার কাছে তো অনেক কিছু । তাই এই ৬মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে নিজের একটা গান ব্লগে উপস্থাপন করলাম । শুনে দেখুন ভঅলো লাগতেও পারে}
২০২২ সালের জানুয়ারির শেষদিকের কথা ,
একমাস আগে থেকেই শুরু হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষা । এই পরীক্ষা নিয়ে কম ঝামেলা হয়নি , করোনার রুদ্ধ সময়ে এক অনিশ্চয়তা নিয়ে প্রতিনিয়ত কাটাতে হয়েছে বলে অনেকে পড়ালেখা করেইনি । আবার এদিকে দফায় দফায় লকডাউনে অনেকেই পড়াশোনা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল । তাই দুম করে যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিল ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে পরীক্ষা শুরু তখন সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিল একটা মৃদু উত্তেজনা ।
২০১৯ এর অনার্স শেষ বর্ষে প্রচুর শিক্ষার্থী ফেল করে । এই অনেক জল ঘোলা হবার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নেয় ২০২০ এর পরীক্ষার্থীদের সাথে ২০১৯ এর শিক্ষার্থীদের আবার পরীক্ষা নেয়া হবে তাই ২০১৯ এর শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষার পক্ষে ছিল কিন্তু ২০২০ এর অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা এর পক্ষে ছিল না । কারণ হিসেবে তারা বলেছিল প্রস্তুতির কোন সময় তারা পাচ্ছে না । এই নিয়ে বহুত উচ্চ-বাচ্য ও হেন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা হলেও ঠিক সময়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ।
সারা জানুয়ারি জুড়ে পরীক্ষা হলো কিন্তু শেষে এসে সরকার আবার লক ডাউন দেয়াতে পরীক্ষা আবার বন্ধ হয়ে গেল । অথচ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় তখন দেদারসে পরীক্ষা নিয়ে নিচ্ছে । কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি সরকার কর্তৃক পরিচালিত বলে কোন পদক্ষেপ নিতে পারছিল না সরকারি নির্দেশ মানতেই হয়েছে বিনা অজুহাতে ! এর ফলে আবারও অনিশ্চয়তা আর নিরাশার জন্য আবারও ক্ষেপে উঠল শিক্ষার্থীদের একাংশ । আমিও অনিশ্চয়তায় দিন পাড় করছি । একদিন সন্ধ্যায় আমি নিজের রুমে বসে বসে রুদ্ধ সময় কাটাচ্ছি । পড়তে আর ভালো লাগছিল না সেদিন । অজানা আশংকায় আর আবার পিছিয়ে পড়বার হতাশায় কিছুই ভালো লাগছিল না । তাই নিজের আটপৌরে গিটার নিয়ে টুংটাং করছিলাম ।
আমি যখন রুদ্ধ সময় কাটাই তখন আমার মাথায় কিছু না কিছু গিজ গিজ করে তা যে শৈল্পিক তা আমি বলছি না তবে এমন আবোল তাবোলের মধ্যেও ভালো লাগার মত কিছু একটা থাকে , সেদিনও আমার এহেন আবোল তাবোলে অন্তত আমার কাছে ভালো লাগার মত কিছু একটা জন্মেছিল আর সেটা হলো একটা গান । খুব অল্প সময় মাত্র ১৫ মিনিটে আমি গানটা সম্পূর্ণ তৈরী করেছিলাম । নিজের হতাশা , পরীক্ষা নিয়ে তাড়া আর সেই সময়ের ছাত্রদের অবস্থা এবং আমার সহপাঠীদের আচরণের কারণেই হয়তো খুব তাড়াতাড়ি তৈরী হয়েছিল গানটি ( অথবা হয়তো না ) !
চৈত্র মাসের প্রথম রাতে আমার জন্ম বলে হয়তো চৈত্র মাস আমার খুব প্রিয় । তাই প্রিয় মাসের প্রথম রাতে গানটা আপনাদের শোনালাম শুনে নাহয় নিদেন পক্ষে দুটো গাল পেড়ে যাবেন । প্রব্রজ্যার প্রবচনকে মনে হয় গান বলা যায় না আবার হয়তো যায় !!
গান: সাবধান প্রিয়তমা
কথা ও সুর : নিবর্হণ নির্ঘোষ ।
সাবধান প্রিয়তমা
ভীষণ চাপে আছি
পরীক্ষার ডেট দিয়েছে
আমি অনেক বিজি !!
যখন তখন ফোন দিও না
বাড়িয়োনা কথার লোভ
হিসাবের জের মেলে না আমার
মনে জাগে শুধু ক্ষোভ !!
পরীক্ষায় যদি গোল্লা পাই
জুটবে না কিছু আর
তুমি তো থাকবে রাজার হালে
আমি হব ছারখার !!
সময় হলো চার ঘন্টা
লেখা অনেক বেশি
ইচ্ছে করে পুঁতো দিয়ে
নিজের মাথা পিষি !!
লিখতে লিখতে জানটা যায়
স্যার দেয় হুংকার
ডরে আমার পিলে চমকায়
পরীক্ষা হয় বরবাদ !!
নিজেই তেমন কিছু পারি না
পাশের জন বলে দেখা
স্যার বলে ধরতে পারলে
দেবে বিশাল ছ্যাঁকা !!
মানে মানে পরীক্ষা দিয়ে
আমি পারলে বাঁচি
তবে যদি দেয় অটোপাশ
তাতেই আমি রাজি !!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:১০