somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিউজিল্যান্ডে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা। বিশ্ব প্রেক্ষিতে মুসলমান ও পশ্চিমাদের ব্যাপারে কিছু তিক্ত সত্যি।

১৮ ই মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিউজিল্যান্ডে এতোবড় হত্যাকাণ্ড কেন সঙ্ঘটিত হল? কেন ব্রেণ্টন টেরাণ্ট এর মতো সন্ত্রাসী উন্মত্ত ক্রোধ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল মসজিদে প্রার্থনারত মুসলমানদের উপর? কেন এটা ঘটার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ব্রিটেনে হাতুড়িপেটার শিকার হল মুসলিমরা? এর কারণ যে নেই তা মোটেও নয়। গভীর একটা কারণ আছে। বর্তমান বিশ্বে অভিবাসন প্রক্রিয়ার কারণে বিশ্বের যেসকল দেশ অভিবাসীদের দেশ বলে পরিচিত সেসব দেশগুলোতে অন্যান্য অনেক দেশের মানুষের মতো মুসলিম দেশগুলো থেকেও মুসলিম অভিবাসীরা সেসব দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। কিন্তু অন্যান্য দেশগুলোর অভিবাসীরা যেভাবে ঐসব দেশে গিয়ে সেসব দেশের কালচার বা সংস্কৃতির সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন, মানিয়ে নিচ্ছেন বা আত্মস্থ করে নিচ্ছেন সেসব সংস্কৃতি মুসলিম দেশগুলো থেকে যাওয়া অভিবাসীরা সেটা করতে পারছেন না। এর কারণটা বোঝা এমন কঠিন কিছু নয়। মূলত ধর্মীয় কারণে বা ধর্মীয় বাধার কারণে বেশিরভাগ মুসলিমরা এসব দেশে গিয়ে তাদের দেশের সংস্কৃতি গ্রহণ করতে পারছেন না। সুতরাং স্বাভাবিকভাবে বিদেশে গিয়ে তারা নিজেদের কালচারাল আইডেন্টিটির জন্য ইসলামিক সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরছেন।স্বাভাবিক চোখে বিষয়টা মোটেই কোনও দোষের পর্যায়ে পড়ে না। কিন্তু ব্যাপারটা শুধুমাত্র এর মধ্যেই যদি সীমিত থাকতো তাহলে কোনও সমস্যা থাকতো না। ব্যাপারটা এর মধ্যে সীমিত নেই। পশ্চিমা দেশগুলো মূলত কালচার বা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে লিবারেল। যে কেউ তাদের দেশে গিয়ে নিজের নিজের সংস্কৃতি লালন পালন করতে পারে। যেকারণে মুসলিমরা তাদের দেশে গিয়ে সহজেই নিজেদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য লালন পালন করতে পারছেন। এখন লিবারেল কালচার এবং লিবারেল ডেমোক্রেসির সুবাদে সেসব দেশে গিয়ে একশ্রেণীর মুসলিমদের খুব খায়েশ হয়েছে, জোশ চেপেছে যে সেসব দেশে তারা ইসলামের ঝাণ্ডা ওড়াবেন। ইসলামী শাসন, শরিয়া আইন সেখানে তারা বাস্তবায়ন করবেন। এর জন্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে রীতিমতো আন্দোলন পর্যন্ত করেছেন সেসব দেশে বসবাসরত মুসলিমরা। শুধু আন্দোলন করেই ক্ষান্ত হননি এসব মুসলিমরা। কোনও কোনও জায়গায় রীতিমতো দলবেঁধে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ‘শরিয়া পেট্রোল’ (ইসলামী শরিয়া অনুশাসন মেনে চলতে বাধ্য করার জন্য নিয়োজিত বাহিনী) করা শুরু করেছেন। সেসব দেশের বুকে বসে সেসব দেশের নাগরিকদেরই তারা ইসলামী অনুশাসন জোর করে মানতে বাধ্য করছেন। হয়রানি করেছেন সেসব দেশের মানুশদের। এসব খবর আমরা আমাদের দেশের মূলধারার মিডিয়াগুলোতে পাইনা। যেকারনে আমরা এসব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নই যে কি ঘটে চলেছে সেখানে। ইউটিউবে গেলে এসবের ওপর অনেক খবর এবং ভিডিও পাবেন। পশ্চিমা দেশগুলোতে নানা কারণেই শ্বেতাঙ্গদের জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে অশ্বেতাঙ্গদের(মূলত এশিয়ান এবং আফ্রিকান) জনসংখ্যা। এসব নিয়ে শ্বেতাঙ্গদের অনেকেই বেশ উদ্বিগ্ন। যার কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে হোয়াইট সুপারমেশিস্টদের অর্থাৎ শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদিদের সংখ্যা। জনপ্রিয় হচ্ছে তাদের এজেণ্ডা। যে সন্ত্রাসীটা নিউজিল্যান্ডের ঐ মসজিদে এতোবড় প্রাণঘাতী হামলা চালাল সে হচ্ছে এই হোয়াইট সুপারমেশিস্ট অর্থাৎ শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী। ইতিমধ্যেই এসব কারণে ইউরোপে উগ্র ডানপন্থীদের উত্থান ঘটেছে যারা তীব্রভাবে অভিবাসনবিরোধী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন আরেক শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানা গেছে নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলাকারী ঐ সন্ত্রাসী ডোনাল্ড ট্রাম্প এর সমর্থক। সব মিলিয়ে যা দেখা যাচ্ছে তা হল সামনে আরও কঠিন দিন আসছে। এমনিতেই ঔপনিবেশিক আমলে এই শ্বেতাঙ্গরা এশিয়ায়, আফ্রিকায় আর লাতিন আমেরিকায় কি করেছে তা আমরা ভুলে যাইনি। এখন মুসলিমরা যদি সেই মধ্যযুগীয় ইসলামী শরিয়া বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালায় তাহলে কি এই শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীরা বসে থাকবে আর চেয়ে চেয়ে দেখবে? পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে তারা যদি সেই পুরনো ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে চায় তাহলে কার কি করার আছে? তাছাড়া বর্তমান পৃথিবীতে শুধু ইসলামী উগ্রবাদেরই উত্থান ঘটেনি। ঘটেছে একইসাথে হিন্দু মৌলবাদ, বৌদ্ধ মৌলবাদের উত্থান ঘটেছে, এমনকি খ্রিষ্ট মৌলবাদীরাও নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে। এখানে ইসলামী মৌলবাদের কথা বিশেষভাবে একারনেই বলা হল কেননা বর্তমান পৃথিবীতে ইসলামের অনুসারীরাই সবচেয়ে বেশী সমস্যার সূত্রপাত ঘটাচ্ছে। ইতিহাস এমন একটা ব্যাপার যেখানে অনেক ক্ষেত্রে উন্নতির চরম পর্যায়ের পর একটা অন্ধকার সময় আসে। এটা ইতিহাসে বার বারই ঘটেছে। আমাদের বর্তমান সভ্যতাটা এমন এখন আমরা সভ্যতার উন্নতির চরম পর্যায়ে আছি। জানিনা সামনে কি আবার একটা অন্ধকার সময় ঘনিয়ে আসছে কি না। তবে একটা জিনিষ পরিস্কার - “দূর গগনে ঘনাইয়া উঠিয়াছে নিকষ কালো মেঘ।” মাঝে মাঝে খুব ভয় হয়। বড্ড ভয় হয়।

কিছু ইউটিউব ভিডিওর লিঙ্ক দিচ্ছি। দেখে নিন কি করে চলেছেন আমাদের মুসলমান ভাইয়েরা।





সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৪
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×