somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডেইসি---------- অসাধারন একটি কোরিয়ান মুভি

১৯ শে মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যদি দেখতে চান কোন সত্যিকারের প্রেমের প্রতিচ্ছবি; যদি বুঝতে চান অপেক্ষার মানে, আত্নত্যাগ আর ভালোবাসা পেয়ে হারিয়ে ফেলার কষ্ট তাহলে আপনাকে খুব মনযোগ দিয়ে দেখতে হবে সিনেমাটি। সিনেমাটোগ্রাফী এক কথায় অসাধারন। মিউজিক পুরা বুকে গিয়ে কুরে কুরে খায় সমস্ত অনুভুতি। আর অভিনয়, কি আর বলবো?

সিনেমার কাহিনী আবর্তিত আমস্টারডামের তিন কোরিয়ানকে নিয়ে। হে ইয়ং এক তরুনী আর্টিস্ট। যার জীবনে এখনো ভালোবাসা আসেনি। সে নিজের মত এঁকে চলেছে তার পৃথিবী, তার ভালোলাগা আর সম্ভাব্য ভালোবাসার বিমুর্ত প্রতিচ্ছবি। কিন্তু তাকে পেয়ে বসেছে এক অদ্ভুত ভালোলাগায়; তার সামনে ঝুলে আছে এক নিরুত্তর প্রশ্ন। কে তাকে প্রতিদিনই নিয়ম করে পাঠাচ্ছে এক গুচ্ছ ডেইসি ফুল? এই ডেইসি ফুল খুবই প্রিয় ছিলো হে ইয়ং এর। ভ্যানগগ যেমন সূর্যমুখী নিয়ে এঁকেছিলেন তার বিখ্যাত ছবি- ‘সানফ্লাওয়ার’, তেমনি হে ইয়ং এর কাছে এই ডেইসিই ছিলো ছোট্ট সূর্যমুখী। এক বিস্তৃর্ণ মাঠে বসে সে আঁকতো অপরিমেয় ডেইসির ছবি।

পার্ক ইউ একজন পেশাদার খুনী। কালো টিউলিপ দিয়ে তাকে সংকেত পাঠানো হয় খুন করবার জন্য। তার বাড়ির পাশে এক ডেইসি ভরা মাঠ যেখানে প্রায় একটা মেয়ে আসে ছবি আঁকতে। পার্ক ইউ তার রক্তাক্ত জীবনের কিছু সময় ভুলে থাকতে পারে সেই মেয়েকে দেখে। সাইকেল চালিয়ে মেয়েটি এসে পার হয় একটা ছোট্ট খাল যা পার হতে হয় একটা ফেলে রাখা গাছের গুড়ির উপর দিয়ে। মেয়েটি পার হতে খুব ভয় পায় আর ছেলেটি নিয়ম করে দেখে যায় সেই মেয়েটিকে। এভাবেই একদিন খাল পার হতে গিয়ে জলে পড়ে যায় মেয়েটি আর তার ক্যানভাসের ব্যাগ ভেসে যায়। পার্ক ইউ ছুটে যায় মেয়েকে বাঁচাবে বলে কিন্তু মেয়ে ততক্ষণে উঠে পরেছে পাড়ে। পার্ক ইউ উদ্ধার করে সেই ব্যাগ আর অপেক্ষা করে তা ফেরত দেবে বলে।
একদিন সকাল; মেয়েটি নিয়ম করে আসে মাঠে ছবি আঁকবে বলে। কিন্তু এসে দেখে এ কি?? আজ খালের উপর একটা ছোট্ট সুন্দর কাঠের ব্রীজ বানানো! কে বানালো এই ব্রীজ আর কেনই বা? হঠাত সে খেয়াল করে ব্রীজের খুঁটিতে আঁটকানো সেই ভেসে যাওয়া ক্যানভাস ব্যাগ। বুঝতে পারে মেয়েটি যে কেউ একজন শুধু তার জন্য বানিয়ে রেখেছে এই ব্রীজ! মেয়েটিও তাকে ভোলেনা আর তাই সে রেখে যায় তার আঁকা একটা ডেইসি মাঠের ছবি। ছবিটা সে রেখে যায় ঠিক ব্রীজের উপরে তাকে দেবে বলে। এরপর থেকেই মেয়েটি কোন অজানা মানুষ থেকে প্রতিদিন পেতে থাকে একগুচ্ছ ডেইসি ফুল।

উয়াং উ একজন ইন্টারপোল এজেন্ট। আমস্টারডামে সে আসে এক ড্রাগ পেডেলারকে ধরতে যার আস্তানা এক স্কয়ারে। সেখানে সবসময় অনেক মানুষের ভীড় আর তাই তার নজরদারিতে কোন সমস্যা হয়না। তবুও স্বাভাবিকতার জন্য সে স্কয়ারে এসে এক তরুনী আর্টিস্টের সামনে আসে; কোরিয়ান জেনে খুশি হয় এবং বসে পড়ে নিজের স্কেচ করাবে বলে! কিন্তু তরুনী মনে হচ্ছে তার জন্য একটু বেশি উতলা, তার দিকে তাকাচ্ছে একটু অন্যরকম ভাবে! কিন্তু কেন? ভাবার সময় নেই তাকে উঠতে হয় নজরদারির কাজে। সে চলে যায় কিন্তু সে ফেলে রেখে যায় একগুচ্ছ ডেইসি ফুল মেয়েটির পায়ের কাছে। ফুলগুলো এমনিই কেনা। কিন্তু মেয়েটি? সেও কি এটাই ভাবছে?? উহু। একেবারেই না।

পরিচয় দিয়ে দিলাম। আর বলবোনা। এবার বাঁকি কাজ আপনাদের। সময় করে দেখে নিবেন এই অসাধারন সিনেমাটি। একটা কথায় বলতে পারি- নিজের হারানো অনেক কিছু খুঁজে পেতে পারেন সিনেমাটিতে, আবার হারাতেও পারেন অনেক কিছু। হাসতে পারেন আর আপনাকে জড়িয়ে ধরতে পারে কিছু দম বন্ধ করা কষ্, কিছু বিমর্ষ খারাপ লাগা। 
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×